রাজনীতি

অর্থ বা ক্ষমতার জন্য আমি বিক্রি হতে পারি না-জিএম কাদের এমপি

  প্রতিনিধি ৩০ আগস্ট ২০২৩ , ৫:৫৬:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন,আমি বিক্রি হয়ে যাওয়ার মতো মানুষ নই।ইউটিউবে কেউ একজন প্রচার করেছে আমি নাকি বিক্রি হয়ে গেছি।এই কথাটা আমাকে আহত করেছে।চাকরি জীবনে আমার অনেক পাওনাও গ্রহণ করিনি নীতির প্রশ্নে।চাকরি জীবনে আমার জন্য বরাদ্দের প্রয়োজনীয় অংশটুকু গ্রহণ করেছি।কোনো ট্যুরে আমার সঙ্গে আমার পরিবারের সদস্যরা গেলে তাদের থাকা-খাওয়ার বিল আমি ব্যক্তিগত ভাবে পরিশোধ করেছি।আমি একবার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছি,আরেকবার মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি। অর্থ বা ক্ষমতার জন্য আমি বিক্রি হতে পারি না।

তিনি আরও বলেন,২৫ বছর চাকরি করেছি,চাকরির শেষ ১০ বছর আমি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি।এরমধ্যে শেষের দুই বছর আমার হাতে দেশের সম্পূর্ণ পেট্রোলিয়াম দ্রব্য ক্রয় করা হতো।অবৈধ টাকা-পয়সা অর্জনের সুযোগ ছিল আমার,আমি কখনোই করিনি।২৮ বছরের রাজনীতিতে ২০ বছর এমপি,৫ বছরে দুটি মন্ত্রণালয় চালিয়েছি।আমি বিক্রি হওয়ার লোক নই,আমি দল এবং দেশ ও জাতির কথা চিন্তা করি।

বুধবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে কয়েকটি গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে জিএম কাদের খোলামেলা কথা বলেন।এ সময় জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি-০২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী উপস্থিত ছিলেন।

গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, আমি আগেও বলেছি ভারত একটি শান্তিপূর্ণ এবং সুন্দর নির্বাচন চায়।তারা চায় নির্বাচনের আগে ও পরে যেন কোনো সহিংসতা না হয়।কে ক্ষমতায় আসবে বা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা নিয়ে ভারতের কোনো বক্তব্য নেই।তারা মনে করে এসব বিষয় ঠিক করবে দেশের জনগণ,এগুলো বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার।ভারত চায় বাংলাদেশ এবং ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোতে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় আছে তাই তারা কখনোই চায় না বাংলাদেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হোক।আসলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয় নিয়েই কথাবার্তা হয়েছে ভারত সরকারের সঙ্গে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন,আমি বলতে চেয়েছি,দুটি দেশের সরকারপ্রধান বা যে কোনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যৌথ একটি বিবৃতি দেওয়া হয়।দুটি পক্ষ যেটুকু প্রকাশে সম্মত হবে,ততটুকুই প্রকাশ করা হয়।এর আগে একটি খসড়া করা হয়।আমরা বিভিন্ন সময়ে বিদেশিদের সঙ্গে বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলি,তখন তারা জেনে নেন এ আলোচনার সংবাদ টুইট করা যাবে কিনা,ছবি দেওয়া যাবে কিনা বা আলোচনার কতটুকু প্রকাশ করা যাবে।আমরা সম্মতি দিলেই তারা টুইট করতে পারেন।আমরা গণমাধ্যমকে বলতে গেলেও তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নেই,এটাই বাস্তবতা। বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করিনি বলেই ভারত সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলিনি গণমাধ্যমকে আমরা কি বলব বা কি বলব না।তাই বিস্তারিত বলতে গেলে তাদের সঙ্গে আলাপ করাটা হচ্ছে ভদ্রতা।অনেক সময় খোলামেলা আলোচনায় অনেক কথাই হতে পারে।একজন একটি কথা বলেছে,আমি হয়তো অন্যভাবে বুঝেছি।তখন তারা বলতে পারে আমি তো এইভাবে বলিনি।তাই এগুলো নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। সেদিন স্পর্শকাতর বিষয় মনে করে কথা বলার সময় অনুমতি শব্দটি ব্যবহার না করে সম্মতি শব্দটি ব্যবহার করলে আরও ভালো হতো।আমি যে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তাদের সম্মতি ছাড়া প্রকাশ করাটা ভদ্রতা মনে করি না,এমন একটি নিয়মও আছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমাকে ভারত সরকার দাওয়াত করেছে।নিজের খরচে সহযোগী নিয়ে ভারত সফর করেছি।ভারত সরকার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বা ব্যক্তি জিএম কাদেরের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছে।দ্বিপাক্ষিক কিছু বিষয়ে কথা হয়েছে।আওয়ামী লীগ ভারত গিয়েছিল দলীয়ভাবে এবং সে দেশের সরকারদলীয় আমন্ত্রণে।আমি আগেও গণমাধ্যমকে বলেছি, জাতীয় পার্টির প্রতি ভারত সরকারের আগ্রহ আছে।তারা মনে করে ভারতের সঙ্গে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক আছে এবং তারা সেই সম্পর্ক বজায় রাখতে চাচ্ছে।তাদের বিশ্বাস জাতীয় পার্টি একটি সম্ভাবনাময় দল,জাতীয় পার্টি আগামীতে ভালো করতে পারবে।তারা আশা করে ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও ভালো হবে এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরস্পরের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।তিনি বলেন,দেশে ফিরে বিমানবন্দরে ঠেলাঠেলির মধ্যে হঠাৎ কথা বলায় ঠিকমতো শব্দচয়ন হয়নি, তাই কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।এর কিছুটা সমালোচনাও হয়েছে।আমি ঠিক বোঝাতে পারিনি,এটা আমার ব্যর্থতা।

আরও খবর

Sponsered content