স্বাস্হ্য ও জীবন পরিচর্যা

অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু

  প্রতিনিধি ২৬ আগস্ট ২০২৩ , ৪:৪৬:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজা স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়ার পরেও এই হাসপাতালে পুনরায় যোগদানের ঘটনা ঘটেছে।এসব বিষয়ে আইনি নোটিশের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

নথি থেকে জানা যায়,জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবেন উল্লে­খ করে ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন।দেড় বছর পর পুনরায় তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গোপনে যোগদান করেন।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিষয়টি অবগত হওয়ার পরেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বরং তাকে প্রমোশন প্রদান করা হয়।গত ১১ বছর যাবত তিনি অবৈধভাবে সেখানে চাকরি করে সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী একজন ব্যক্তি সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি গ্রহণের পর পুনরায় সেই পদে যোগদান করার কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়টি উল্লে­খ করে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ চারজনকে আইনি নোটিশ প্রদান করেন মো. হাসমত মিয়া নামের এক সাংবাদিক।এরই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) ডা. মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম মিঞাকে সভাপতি করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।এরইমধ্যে ডা. মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম মিঞা পিআরএল (অবসরোত্তর ছুটি) নেওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. রাশেদা সুলতানাকে তদন্ত কমিটির সভাপতি করা হয়। এই কমিটি ইতোমধ্যে তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

গত ২১ আগস্ট ডা. ফাতেমা দোজাকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।তদন্ত কমিটি সরেজমিনে এসে ডা. ফাতেমা দোজার চাকরির বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য শুনে।

প্রসঙ্গত,ডা. ফাতেমা দোজা ও তার স্বামী ডা. আবুল বাশার মো. জামালের বিরুদ্ধে মাতৃহীন এক শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।ফাতেমা তখন ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আর জামাল ছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের রেজিস্ট্রার। ওই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছিল রমনা থানায়।তারা গ্রেফতারও হন।গ্রেফতার ও কারাবাসের তথ্য গোপন করে চাকরি,পদোন্নতি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে। বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে গত বছর তিন সচিব,দুই মহাপরিচালকসহ ৮ জনকে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিমকোর্টের অ্যাডভোকেট মো. খবির উদ্দিন ভূইয়া।

এই নোটিশ পাঠানো হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক,স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালক,জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক,স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. জামাল এবং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফাতেমা দোজাকে।এ নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় রিপোর্ট ছাপা হয়।সেটিও এখন তদন্তাধীন রয়েছে।

এসব বিষয়ে ডা. ফাতেমা দোজার বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

আরও খবর

Sponsered content