প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২২ , ১২:৪৮:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:-পদ্মা সেতুর চালুর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বরগুনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী লঞ্চগুলোতে। সেতু চালুর আগে একেকটি লঞ্চে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ যাত্রী হতো। সেতু চালুর পর সেখানে ১০০ যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে না।
লঞ্চের যাত্রীরা বলছেন, লঞ্চের যাত্রা আরামদায়ক। কিন্তু কেবিন ও ডেকের ভাড়া বেশি। আবার সময়ও বেশি লাগে। ফলে তাঁরা টাকা ও সময় বাঁচাতে বাসে করে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছেন। তবে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ বলছে, শুরুর দিকে সব যাত্রী পদ্মা সেতু দেখার জন্য বাসযাত্রা বেছে নিচ্ছে। তবে এ অবস্থা খুব বেশি দিন থাকবে না।
ঢাকা-বরগুনা, ঢাকা-আমতলী নদীপথে আটটি বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করছে। এর মধ্যে ঢাকা-বরগুনা পথে পাঁচটি ও ঢাকা-আমতলী পথে তিনটি লঞ্চ রয়েছে। প্রতিদিন ঢাকা-বরগুনা, ঢাকা-আমতলী নদীপথে চারটি লঞ্চ আসা-যাওয়া করে। এসব লঞ্চ ৪০০ থেকে ৫০০ যাত্রী নিয়ে বরগুনা ঘাট ত্যাগ করত।
আমতলী লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ থেকে ৬০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যায়। আমতলী লঞ্চঘাটের টোল আদায়কারী মো. হানিফ গাজী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার আগে প্রতিদিন বেলা দুইটার মধ্যে দেড় থেকে দুই শতাধিক যাত্রী ঘাটে টোল দিয়ে লঞ্চে উঠে বিছানা পেতে বসে থাকতেন। কিন্তু পদ্মা সেতু চালুর পর লঞ্চে যাত্রী নেই। ৭০ থেকে ৮০ জন এ ঘাটের যাত্রী হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটায় বরগুনা নদীবন্দর থেকে এমভি শাহরুখ-২ নামের একটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। লঞ্চটিতে ৮০ থেকে ৯০ জন যাত্রী ছিল। এ লঞ্চে সিঙ্গেল ও ডাবল কেবিনের সংখ্যা ১২৬। এর মধ্যে মাত্র ৪০টি কেবিন বুকিং হয়েছিল।
শাহারুখ-২ লঞ্চের মাস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সেতু চালু হওয়ার পর থেকে লঞ্চে যাত্রীসংখ্যা কমে গেছে। এর প্রভাব বেশ কিছু দিন থাকবে। মাসখানেক পর যাত্রীসংখ্যা বাড়বে। কারণ, সবাই পদ্মা সেতু দেখার জন্য এখন গাড়িতে করে ঢাকায় যাচ্ছে।
উত্তর টিয়াখালী গ্রামের ট্রাকচালক মো. বাচ্চু হাওলাদার বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকায় যেতে হয় বিধায় লঞ্চে যাচ্ছি। নইলে এখন লঞ্চে ঢাকা যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।’ তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় নদীপথের অর্ধেক সময় কম লাগে সড়কপথে।
তালতলী উপজেলার গেন্ডামারা গ্রামের বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, ‘লঞ্চে নিরাপদে ঘুমিয়ে যাওয়া যায়, তাই সময় বেশি লাগলেও লঞ্চে যাচ্ছি।’
পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া লঞ্চঘাটের টোল আদায়কারী রাজা পহলান বলেন, এক সপ্তাহ আগেও এ ঘাট দিয়ে দুই থেকে আড়াই শ যাত্রী ঢাকা যেত। গতকাল এ ঘাট দিয়ে মাত্র ৮০ যাত্রী ঢাকায় গেছে।
এমভি তরঙ্গ-৭ লঞ্চের সুপার ভাইজার মো. হুমায়ুন কবির বলেন, চার দিন লঞ্চ বন্ধ ছিল। ফলে যাত্রী কম। পদ্মা সেতুর প্রভাব নদীপথে পড়বে কি না, তা এখনই বলা যাবে না। কিছুদিন গেলে বোঝা যাবে।