অর্থনীতি

প্রথমবারের মতো পাঁচ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলকে পৌঁছেছে রপ্তানি খাত

  প্রতিনিধি ৫ জুলাই ২০২২ , ৯:১১:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:-পণ্য রপ্তানিতে সুসময় পার করছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো পাঁচ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলকে পৌঁছেছে রপ্তানি খাত। সেই সঙ্গে আরেকটি বড় অর্জন—তৈরি পোশাকের পর ৪টি খাত ১০০ কোটি ডলারের ধাপ পার হয়েছে।

এসবই হয়েছে সদ্য বিদায়ী ২০২১–২২ অর্থবছরে। অথচ ১৯৯৯–২০০০ অর্থবছরেও বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৫৭৫ কোটি ডলার। তার পাঁচ বছর পর ২০০৫–০৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয় এক হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। তারপর রপ্তানি আয় দুই হাজার কোটি ডলারের ঘরে পৌঁছাতে সময় লাগে পাঁচ বছর। অবশ্য তিন হাজার কোটি ডলারের রপ্তানি হয়ে যায় ২০১৩–১৪ অর্থবছরেই।

৪ হাজার কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয় ২০১৮–১৯ অর্থবছরে। করোনার কারণে পরের দুই বছর রপ্তানি কমে যায়। বিদায়ী অর্থবছর সব মিলিয়ে রপ্তানি হয়েছে ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলার, যা দেশিয় মুদ্রায় ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার সমান।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে ৪ হাজার ২৬১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। তারপর সর্বোচ্চ রপ্তানি হোমটেক্সটাইলে, ১৬২ কোটি ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১২৫ কোটি ডলারের রপ্তানি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে এসেছে।

চতুর্থ ও পঞ্চম সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের খাত হচ্ছে যথাক্রমে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য। কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যে ১১৬ কোটি এবং পাট ও পাটজাত পণ্যে ১১৩ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি বেশ কয়েক বছর পর শত কোটির ঘরে পৌঁছেছে। পরিবেশদূষণের কারণে ২০১৬–১৭ অর্থবছরের পর এ খাতের রপ্তানি কমতে থাকে। টানা দুই বছর রপ্তানি শত কোটি ডলারের নিচে থাকার পর বিদায়ী অর্থবছরে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে খাতটি, অন্যদিকে হোমটেক্সটাইল টানা দুই বছর শত কোটি ডলারের ওপরে।

পাট ও পাটজাত পণ্যেও টানা দুই বছর ১০০ কোটি ডলারের ঘরে রয়েছে। বিদায়ী অর্থবছর প্রথমবারের মতো কৃষিপ্রক্রিয়াজাত পণ্য শত কোটি ডলারের ঘরে প্রবেশ করেছে। তার আগের বছর এই খাতের রপ্তানি আয় ছিল ৮৬ কোটি ডলার।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, মোট পণ্য রপ্তানিতে তৈরি পোশাক, হোমটেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং কৃষিপ্রক্রিয়াজাত পণ্য—এই পাঁচ খাতের অবদান ৯১ দশমিক ৭২ শতাংশ। আর শুধু পোশাকের হিস্যা ৮১ দশমিক ৮১ শতাংশ।

রপ্তানিকারকেরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বাড়তি ক্রয়াদেশ মিলেছে। তার চেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচামালের দাম। ফলে রপ্তানি বৃদ্ধির বড় অংশই কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় হয়েছে।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। বর্তমানে জ্বালানি ও খাদ্য পণ্য কিনতেই বেশি ব্যয় করছে মানুষ। ফলে তৈরি পোশাক, চামড়াপণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের চাহিদা কমছে। ফলে রপ্তানি খাতের জন্য চলতি অর্থবছর হবে চ্যালেঞ্জিং।

আরও খবর

Sponsered content