প্রতিনিধি ৪ মে ২০২২ , ২:৩৬:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ
তহিদুল ইসলাম রাসেল,(চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান):–মুন্সিগঞ্জ থেকে ঈদের একদিন আগে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে কক্সবাজার এসেছেন ব্যবসায়ী মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, মহামারি ও ব্যবসায়িক ব্যস্ততার কারণে গত দুই বছর স্ত্রী সন্তানদের কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয়নি। এখন পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজার বেড়াতে আসার সুযোগ মিলেছে। পরিবার ছাড়া ভিন্ন পরিবেশে প্রথমবারের মতো ঈদ উদযাপন করার ভিন্ন অনুভূতি নিয়ে শুক্রবার কক্সবাজার ছাড়বেন বলে জানান তিনি।
এদিকে মহামারির ধকল কাটিয়ে পর্যটন ব্যবসায় চাঙাভাব ফিরবে বলে আশা হোটেল ব্যবসায়ীদের নেতা মুকিমের। তিনি বলেন, বুধবার থেকে কাঙ্ক্ষিত পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে আসবেন। পর্যটকদের এ আনাগোনা আগামী শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আশা করছি, এই সময়ে অন্তত পাঁচ লক্ষাধিক পর্যটক সমাগম ঘটবে। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদের ছুটিতে পর্যটক না আসায় পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছিল। এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি টানা প্রায় এক সপ্তাহ ছুটি থাকায় সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা দিতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে টুরিস্ট পুলিশসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের। টুরিস্ট পুলিশ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করেছে অস্থায়ী ‘হেল্প ডেস্ক’। টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পোশাকধারী সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের সদস্যরাও সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া সমুদ্রসৈকত, হোটেল-মোটেল জোন ও ঝাউবাগানসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ছিনতাই প্রতিরোধ, ইভটিজিং ও পর্যটক হয়রানি রোধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নিরাপত্তার পাশাপাশি পর্যটক ও দর্শনার্থীদের তাৎক্ষণিকভাবে সেবা প্রদানের নিশ্চিয়তা দিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ৬টি ‘টুরিস্ট হেল্প ডেস্ক’ স্থাপন করা হয়েছে। এসব প্রতিটি হেল্প ডেস্কে পর্যটকদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য রাখা হয়েছে ‘ফার্স্ট এইড বক্স’। এছাড়া প্রাণহানির মতো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাগরের পানিতে নামা পর্যটকদের জন্য সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি নজরদারির জন্য একটি ‘ওয়াচ টাওয়ার’ ও সাতটি ‘পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া সৈকতে ঘুরতে এসে হারিয়ে যাওয়া শিশুদের উদ্ধার করে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তরের জন্য চালু থাকবে ‘চাইল্ড সাপোর্ট সেন্টার’ এবং পর্যটকদের হারিয়ে যাওয়া মোবাইল, মানিব্যাগ বা অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তরের জন্য রয়েছে ‘লস্ট এন্ড ফাউন্ড সেন্টার’। পর্যটকদের জন্য বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থাও রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিহস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, পর্যটক হয়রানি রোধে ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চারটি ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে তৎপর রয়েছে। পাশাপাশি সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সৈকতের লাবণী পয়েন্টের জেলা পর্যটন সেলের কার্যালয় সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে। পর্যটকদের কাছ যেকোনো ধরনের অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিকভাবে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান এ নির্বাহী কর্মকর্তা।