প্রতিনিধি ৫ নভেম্বর ২০২৩ , ৫:১৯:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ
মেহেন্দিগঞ্জ (বরিশাল)প্রতিনিধি।।মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আলীমাবাদ ইউনিয়নের ১১৩ নম্বর লাড়ুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হঠাৎ যেখানে সেখানে আগুন জ্বলে উঠছে। কিন্তু ওই আগুনের উৎপত্তি কিংবা কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কেউই। ওই স্কুলের একাধিক শ্রেণিকক্ষে এমন অদ্ভূত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেই চলেছে।সম্প্রতি এমন আগুনের খবরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক থেকে শুরু করে এলাকাবাসীর মধ্যে অজানা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এদিকে,এমন অদ্ভুত আগুনের কারণে কাজ ফেলে দিন-রাত বিদ্যালয় পাহারায় ব্যস্ত গ্রামের বাসিন্দারা।অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না।হঠাৎ করে লাগা এমন অলৌকিক আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দুশ্চিন্তা নিয়ে দিন পার করছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানান,বিদ্যালয়ে চার দিন আগে একটি শ্রেণিকক্ষে প্রথম আগুনের সূত্রপাত হয়।পরে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও পরের দিন আবারও অপর আরেকটি শ্রেণিকক্ষে অলৌকিকভাবে আগুন লাগে।এরপর থেকে প্রতিদিনই বিদ্যালয়টি নিয়মিত আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। তবে কীভাবে এই আগুন লাগছে তা কেউই বলতে পারছেন না। আগুনে স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারটির ২টি শ্রেণিকক্ষের দরজা, জানালা,টেবিল, চেয়ার ও শিক্ষার্থীর বেঞ্চ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ছাড়াও পুরো শ্রেণিকক্ষ কালো হয়ে গেছে। আগুন আতঙ্কে দিন পার করছেন ওই বিদ্যালয়ের চার শিক্ষকসহ অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী।ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন উপজেলা শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষা অফিসার কিরন ও থানা পুলিশ এস আই মুশফিকুর রহমান।
বিদ্যালয়ে জমিদাতা হাবিবুর রহমান ও এলাকাবাসীদের তথ্যমতে, ৪ থেকে ৫ দিন ধরে স্কুল ছুটির পর পর অর্থাৎ বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে বিদ্যালয়ের এখানে সেখানে হঠাৎ করে আগুন লেগে যাচ্ছে।প্রতিদিন একবারের মতো আগুন লাগে।কিন্তু কীভাবে এ আগুন ধরছে কেউ বলতে পারছি না।আগুনের ভয়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। তবে তাদের ধারণা,দুর্বৃত্তরা শত্রুতা করে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সোহেল জানান, বিদ্যালয়ের পাশে আমাদের বসতবাড়ি। প্রতিদিন আগুন লাগায় বাড়িতে থাকা আমাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিভাবক সদস্য দিদারুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, বিদ্যালয়ে আগুন যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, টয়লেট নেই, টিউবওয়েল নেই, শিক্ষকরাও নিয়মিত আসেন না।
বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. ফারুক হোসেন হাওলাদার বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আগুনের রহস্য বের করে দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বন্দের কারণে দিন দিন শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। শিক্ষক মাহামুদার বিরুদ্ধে রয়েছে বহুমুখী অভিযোগ রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফারহানা বেগম বলেন, আগুনের সংবাদ পেয়ে পর দিন এসে দেখি একাধিক শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্রসহ, দরজা, জানালা, বেঞ্চ পুড়ে গেছে, এর ফলে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। যেহেতু বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, সেহেতু আগুনের রহস্য বুঝতে পারছি না। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন বাপ্পি বলেন, অলৌকিক কিংবা দুর্বৃত্তের দেওয়া হউক এমন ঘটনায় যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য আমরা সজাগ আছি।
এদিকে বিষয়টি অলৌকিক না অন্য কিছু তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং নানা সমস্য সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিসুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনা শুনেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।