প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২৪ , ৫:০৪:২১ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।সিলেট,সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি,মৌলভীবাজার জেলায় স্থিতিশীল এবং নতুন করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।এছাড়া,দেশের বন্যাপ্রবণ ৫ নদীর ৯ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপরে অবস্থান করছে।
তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী,ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি বাড়ছে,যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। একইভাবে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে,যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।এদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সামগ্রিকভাবে বাড়ছে,যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী,দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল,দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা,ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট,সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কয়েক এলাকার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে এবং মৌলভীবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
এছাড়া,আগামী ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মুহরী,ফেনী, হালদা,সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়,আজও দেশের ৫ নদীর ৯ পয়েন্টের পানি বিপদসীমার উপরে অবস্থান করছে। যা গতকাল ৬ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপরে ছিল। গতকালের তুলনায় আজকের নদীগুলোর অবস্থা বিবেচনায়, গতকাল তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টের পানি বিপদসীমার উপরে থাকলেও আজ সেটি নিচে নেমেছ।একইভাবে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টের পানিও নিচে নেমেছে।তবে সুনামগঞ্জ পয়েন্টের পানি ৩ থেকে বেড়ে এখন ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।কানাইঘাট পয়েন্টের পানি ১১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে,গতকাল যাদুকাটা নদীর লরেরগড় পয়েন্টের পানি বিপদসীমার উপরে থাকলেও আজ নেমেছে।তবে সোমেশ্বরী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৪ থেকে বেড়ে ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এছাড়া কুশিয়ারা নদীর মারকুলি পয়েন্টে পানি ১৩ থেকে বেড়ে ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে।একই নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি ২২, শেরপুর-সিলেট পয়েন্টের পানি ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে৷এর বাইরে মনু নদীর মৌলভীবাজার পয়েন্টে পানি ১০,ভুগাই নদীর নাকুয়াগাও পয়েন্টে পানি ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কেন্দ্রের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে জাফলং পয়েন্টে ৩০৯ মিলিমিটার,আর সর্বনিম্ন বৃষ্টি হয়েছে জামালপুরে ৪৮ মিলিমিটার।এছাড়া উজানে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে চেরাপুঞ্জিতে ১৪১ মিলিমিটার,আর সর্বনিম্ন বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়িতে ৩২ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়,মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা,উত্তর প্রদেশ,বিহার,পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়,রংপুর,রাজশাহী,ঢাকা,ময়মনসিংহ,খুলনা,বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।