রাজনীতি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক আজ জন্মদিন

  প্রতিনিধি ২১ মে ২০২৪ , ৫:০২:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।কানেক্টিং দ্যা ডটস’ স্লোগানকে সামনে নিয়ে ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর অঙ্গ সংগঠন ইয়াং বাংলা। তরুণদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে দেশ গঠনে এগিয়ে আসার জন্য সর্ববৃহৎ এই তারুণ্যের প্লাটফর্ম গড়ে তোলেন সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। আজ ২১ মে তার জন্মদিন।

বাংলাদেশ গৌরবজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে তরুণদের সম্পৃক্ত করা,তরুণদের সংগঠিত করা ও নেতৃত্ব সৃষ্টির জন্য পর্দার আড়ালে থেকে একান্ত ভাবে কাজ করে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

২০১৪ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে তার নেতৃত্বে ইয়াং বাংলার পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ও জয় বাংলা কনসার্ট সহ আরও নানা আয়োজন। রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে বারবার জানিয়েছেন,তরুণদের দেশের ইতিহাসের সঙ্গে সহজে পরিচিতি ঘটাতে এবং দেশ গঠনে তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতেই এই উদ্যোগগুলো গ্রহণ করা হয়।

২০২১ সালে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,আসলে আমাদের শুধু বললেই হবে না।এখন সময় এসেছে তরুণদের হাতে আরও দায়িত্ব তুলে দেয়ার।সকল সেক্টরে তরুণদের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে,সেটা ব্যবসা, রাজনীতি,এনজিও থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে।

বাস্তবতা হলো,রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক শুধু তরুণদের দায়িত্ব দিতে বলেননি।তিনি তরুণদের কাঁধেই সকল দায়িত্ব অর্পণ করেছেন।জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক সব অঞ্চল থেকে দেশ গঠনে কাজ করে যাওয়া তরুণদের খুঁজে বের করে ইয়াং বাংলা প্লাটফর্মের মাধ্যমে সারা দেশে উদ্ভাবনি সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সকল ক্ষেত্রেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন তরুণরা।আর তাদের পাশে সর্বদা ইয়াং বাংলার মাধ্যমে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

শুধু তাই নয়,তরুণদের সরকারি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করতে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের উদ্যোগে ইয়াং বাংলা পরিচালনা করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ কার্যক্রম।এই কার্যক্রমের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশের মন্ত্রীপরিষদ এ বিষয়ক গেজেট প্রকাশ করে যার মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি দফতর ও মন্ত্রণালয়গুলোতে ইন্টার্নের সুযোগ পাচ্ছেন তরুণরা।

একটি দেশকে নাগরিকদের এগিয়ে নিতে চাইলে তাদের অবশ্যই নিজেদের অতীত সম্পর্কে জানতে হবে।আর এ কারণেই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের পরিকল্পনায় শিশু-কিশোরদের জন্য প্রকাশিত হয় গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’। প্রকাশনার শুরু থেকেই শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি তরুণদেরও দারুণ আকৃষ্ট করেছে এই গ্রাফিক নভেল। ১০ পর্বের গ্রাফিক নভেলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটিকে যেনো বাস্তবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।এ যেনো গল্পের ছলে দেশের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাসকে জানা।নতুন প্রজন্মের সকলের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা পাওয়া গ্রাফিক নভেল মুজিবের জনপ্রিয়তার কারণেই চলতি বছরের বইমেলায় প্রকাশিত হয় বঙ্গবন্ধুর লেখা গ্রন্থ ‘আমার দেখা নয়া চীন’ অবলম্বনে গ্রাফিক নভেল।একুশের বই মেলায় এই বইটিও সকলের দৃষ্টি কাড়ে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইয়াং জেনারেশনকে কিভাবে শেখাবো,কিভাবে তাদের কাছে পৌঁছবো। বিষয় হলো, আমাদের আসলে তাদের ভাষায় কথা বলতে হবে। .. আর এ কারণেই যখন সুযোগ হলো নানাকে নিয়ে গ্রাফিক নভেল তৈরি করা হলো।

বাংলাদেশে নির্মিত ডকুড্রামা ‘হাসিনা: এ ডটারর্স টেল’ এর নির্মাণের পেছনেও বড় ভূমিকা রেখেছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।মূলত ১৯৭৫ সালের নিজ পরিবারের সকল সদস্যকে হারিয়ে যেভাবে জাতির পিতার দুই কন্যা বেঁচে ছিলেন এবং সেখান থেকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ফিরে এসেছিলেন দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে,সেই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে এই ডকুড্রামার মাধ্যমে।এটি নির্মাণের পেছনেও মূল কারণ ছিলো তরুণদের আকৃষ্ট করা।এই ডকুড্রামাটি দারুণ সাড়া ফেলে তরুণদের মাঝে।সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা কুড়ায় ডকুড্রামাটি।

শিশু ও তরুণদের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে এভাবে দেশের ইতিহাসকে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টার পেছনে সম্ভবত শৈশবের বেশ কিছু ঘটনা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিলো রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের জন্য।তিনি সিআরআই এর একটি অনুষ্ঠানে নিজের শৈশবের রূপ বাস্তবতার কথা তুলে ধরে জানান, “স্কুলে অনেকেই তখন নানার নামই শোনেনি।আমার বন্ধুরা বলতো,কে তোমার এই বঙ্গবন্ধু নানা?’ স্কুলে আমার শিক্ষকরা বঙ্গবন্ধু শব্দটা শুনলে অনেক ঘাবড়ে যেতেন। আমাকে বলতো, ‘বঙ্গবন্ধু বলতে হয়না স্কুলে’। ” শুধু স্কুলে নয়,ইতিহাস বই,পাঠ্যপুস্তক এমনকি গণমাধ্যমেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম নেয়া ছিলো তৎকালীন সময় নিষিদ্ধ।এমনই এক অন্ধকার সময়ে বেড়ে উঠলেও নানার মতই দেশকে নিয়ে রাদওয়ান মুজিবের গর্ববোধ,ভবিষ্যৎ ভাবনা ও স্বপ্নের শেষ নেই। যার প্রমাণ ইয়াং বাংলা ও সিআরআই-কে ঘিরে তরুণদের নিয়ে তার কার্যক্রম।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স থেকে গভর্নেন্স অ্যান্ড হিস্ট্রি বিষয়ে স্নাতক অর্জনকারী রাদওয়ান একই প্রতিষ্ঠান থেকে কমপ্যারেটিভ পলিটিক্স বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন।সিআরআই থেকে প্রকাশিত নীতি-নির্ধারণী ম্যাগাজিন হোয়াইটবোর্ডের প্রধান সম্পাদক রাদওয়ান মুজিব। তার হাত ধরে গড়ে ওঠা তরুণদের সর্ববৃহৎ প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলার সদস্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।তার হাত ধরেই দেশের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় বসে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারছে তরুণ প্রজন্ম।

২০০৮ সালের জুন মাসে শেখ হাসিনাকে সামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারাগার থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।২০০৭ সালে শেখ হাসিনা যখন গ্রেপ্তার হন তখন লন্ডনে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ‘ফ্রস্ট অব দ্য ওয়ার্ল্ড’-খ্যাত স্যার ডেভিডকে যে সাক্ষাৎকার দেন,যা বিশ্বব্যাপী জনমত তৈরিতেও বড় ভূমিকা রাখে।

আরও খবর

Sponsered content