স্বাস্হ্য ও জীবন পরিচর্যা

ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের কোন কোন অঙ্গে কি কি প্রভাব পড়ে

  প্রতিনিধি ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ , ১১:২৪:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।বর্তমানে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ঘরে ঘরেই। ডায়াবেটিস হলে বারবার পানি পিপাসা,ঘন ঘন প্রস্রাব করার প্রয়োজন,ক্লান্তি,ঝাপসা দৃষ্টি ও অনিচ্ছাকৃত ওজন কমে যেতে পারে।রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এর প্রভাব পড়ে।রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি বেড়ে গেলে শরীরের ক্ষুদ্র রক্তনালিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়,ফলে বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত পৌঁছাতে পারে না সহজে।

একারণে ডায়াবেটিস হলে শরীরের গুরুতর সব অঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের কোন কোন অঙ্গে কি কি প্রভাব পড়ে ও লক্ষণ দেখা দেয়-

চোখ

রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হলে রেটিনার রক্তনালিগুলোতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে,ফলে ঝাপসা দৃষ্টি,ছানি,গ্লুকোমা এমনকি গুরুতর ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথিও হতে পারে।

রেটিনোপ্যাথির কারণে রেটিনার পরিবর্তন ঘটে,যদি এর সঠিক চিকিত্সা না করা হয় তাহলে ডায়াবেটিস রোগীদের দৃষ্টিশক্তি কমে যায় এমনকি তারা অন্ধত্ব বরণও করতে পারে।

পা
ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।এক্ষেত্রে স্নায়ুর ক্ষতি হয়,ফলে পায়ে সংবেদন অনুভব করতে পারে না।

ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে,ফলে পায়ের বিভিন্ন ক্ষত সারানো কঠিন হয়ে পড়ে।এর থেকেই ডায়াবেটিক ফুট বা ঘা হয়।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যদি ঘা বা সংক্রমণের চিকিৎসা করা না হয়,তাহলে অঙ্গচ্ছেদ পর্যন্ত হতে পারে।

কিডনি শরীরের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।এটি শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিন ও বর্জ্য ফিল্টার করতে সাহায্য করে। কিডনিতে থাকা একাধিক ক্ষুদ্র রক্তনালি বিশেষ এই অঙ্গের কার্যকারিতায় সাহায্য করে।

রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার কারণে কিডনির রক্তনালিতেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।এর থেকেই ডায়াবেটিক রোগীর কিডনির সমস্যা বাড়ে। যা ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি নামে পরিচিত।

এর উপসর্গগুলোর মধ্যে আছে-প্রস্রাবে প্রোটিন,বারবার প্রস্রাবের বেগ,রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের অবনতি,পা,গোড়ালি,হাত ও চোখ ফুলে যাওয়া,বমি বমি ভাব,বমি,ক্লান্তি’সহ অনেক কিছু।

স্নায়ু

ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও নেফ্রোপ্যাথির মতো,উচ্চ রক্তে শর্করাও ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি নামক স্নায়ুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।

এই অবস্থার কারণে অসাড়তা বা ব্যথা বা তাপমাত্রা অনুভব করার ক্ষমতা কমে যায়।এছাড়া জ্বালাপোড়া,তীক্ষ্ণ ব্যথা, স্পর্শে সংবেদনশীলতা ও গুরুতর পায়ের আলসার,সংক্রমণ ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

হার্ট

রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে হার্টের রক্তনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এ কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে স্ট্রোক ও হৃদরোগ’সহ কার্ডিওভাস্কুলার জটিলতার ঝুঁকিতে থাকে।

এছাড়া ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে,ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের উচ্চ রক্তচাপ’সহ হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।

মাড়ি

মাড়ির রোগকে পিরিওডন্টাল রোগ বলে।রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে মাড়িতে রক্তপ্রবাহ কমে যায় ও পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়।এজন্য মাড়ি থেকে রক্তপাত ও প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবেন কীভাবে?

স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করার মাধ্যমে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।ডায়াবেটিসসহ দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ঝুঁকি কমাতে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর,পুষ্টিকর ও কম প্রক্রিয়াজাত খাবার খেতে হবে।

এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে।এজন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।এছাড়া ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন এড়াতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিয়মিত চেকআপ করানো ও ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা।

আরও খবর

Sponsered content