জাতীয়

১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে-পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়

  প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ , ৪:৪৪:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সুস্থ পরিবেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগানে ২৫ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি,দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ,বন,প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ- এ চার ক্ষেত্রে ১০০ কর্ম দিবসে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ।

নিচে তা তুলে ধরা হলো:-

দূষণ নিয়ন্ত্রণ

দূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা তুলে ধরে পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব ফারহিনা আহমেদ বলেন,বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষিজমি রক্ষার্থে সরকারি নির্মাণে ১০০ শতাংশ ব্লক ব্যবহারে সংশোধিত রোডম্যাপ অনুমোদন।

বায়ুদূষণের প্রতিটি উৎস থেকে সৃষ্ট দূষণ মোকাবিলায় ন্যূনতম একটি করে কার্যক্রম গ্রহণ এবং বায়ুদূষণ রোধে দেশব্যাপী ন্যূনতম ৫০০ অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

‘শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা,২০০৬’ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি

সচিব বলেন,মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার জনবল কাঠামো হালনাগাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন সহযোগী,এনজিও এবং সিএসও-দের নিয়ে একটি পার্টনারশিপ ফ্রেমওয়ার্কের উদ্যোগ গ্রহণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় বৃদ্ধি করার মাধ্যমে হোল অব গভার্নমেন্ট এবং হোল অব সোসাইটি অ্যাপ্রোচ বাস্তবায়ন করা হবে।

আসন্ন বাজেটে ‘ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন থিম’ অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকর পরিবীক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান সচিব।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

ন্যাশনাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ফেমওয়ার্ক প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্লাস্টিক দূষণ থেকে পরিবেশ,প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় লক্ষ্যে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের (সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক) তালিকা প্রণয়ন এবং প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু করা হবে।সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার কমাতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন সচিব।

পণ্য প্রস্তুতকারক ও আমদানিকারকদের পণ্য থেকে সৃষ্ট বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এক্সটেন্ডেড প্রডিউসার রেসপন্সিবিলিটির খসড়া চূড়ান্ত করা হবে আগামী ১০০ কর্মদিবসে।

শিল্পকারখানার বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) কার্যকরভাবে চালু রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে অনলাইন মনিটরিং চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

সচিবালয়ে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত ঘোষণার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন,অন্যান্য সরকারি অফিসসমূহ একই ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা জারি করা হব।

একই সঙ্গে পরিবেশদূষণ রোধে পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি বিভাগে দুটি করে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ফ্রি স্কুল ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন করা হবে। উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রতি বিভাগে দুটি করে জিরো ওয়েস্ট ভিলেজ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

পরিবেশ,বন,প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

স্কুল-কলেজের সিলেবাস/পাঠ্যবইকে সবুজায়নের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ; দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত পাহাড়,টিলা ও প্রাকৃতিক জলাধারের ম্যাপিং এর উদ্যোগ গ্রহণ; পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান প্রক্রিয়া সহজীকরণের উদ্যোগ গ্রহণ, সবুজ ক্যাটাগরিভুক্ত ছাড়পত্র ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট’ এর আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা প্রকল্পের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ও সৃষ্ট সম্ভাব্য দূষণের পরিধি,মাত্রা এবং পরিবেশ ও মানবস্বাস্থ্যের ওপর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনা করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের ক্যাটাগরি হালনাগাদকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

জবরদখল করা ৫০ হাজার একর বনভূমির উচ্ছেদ প্রস্তাব প্রস্তুতকরণ এবং জেলা প্রশাসনের কাছে প্রেরণ।ইতোপূর্বে পাঠানো এক লাখ ৮৭ হাজার একর জবরদখল করা বনভূমি উদ্ধারের প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া পরিবেশ দূষণকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের পুনর্নির্ধারিত হার/পরিমাণ বাস্তবায়ন এবং পরিবেশ,বন,প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় উচ্চ আদালতের রায় যথাযথ বাস্তবায়নে পরিবীক্ষণ সুসংহত করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ সচিব।

জলবায়ু পরিবর্তনের কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে পরিবেশ সচিব বলেন,অর্থবহ ও কার্যকর সহযোগিতার মাধ্যমে পরিবেশ ও জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ চূড়ান্তকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

ইউএনএফসিসিসি’র উদ্যোগে এবং পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক আগামী এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান এক্সপো আয়োজনের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ; মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারেটি প্ল্যান, ২০২২-২০৪১ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কর্মকৌশল প্রণয়ন; জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় প্রস্তাবিত প্রস্তাব যাচাই-বাছাইয়ের জন্য গাইডলাইন প্রণয়ন; আন্তর্জাতিক লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড থেকে অর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন ফারহিনা আহমেদ।

আরও খবর

Sponsered content