অপরাধ-আইন-আদালত

হাইকোর্টের সেই অবস্থান এখন আর নাই

  প্রতিনিধি ৬ আগস্ট ২০২৩ , ২:৩৪:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।জামিন আদেশ থাকা সত্ত্বেও যখন গ্রেপ্তার করা হয়,ধরে নিয়ে টর্চার করা হয়,তখন মৌখিক আদেশে আর কী হবে?হাইকোর্টের সেই অবস্থান এখন আর নাই।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির ১৮ আইনজীবীর জামিন আবেদন গ্রহণকালে রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ভাঙচুরের ঘটনা দেশের মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না বলেও মন্তব্য করে আদালত।

পরে আদালত বিএনপির আইনজীবীদের জামিন আবেদন গ্রহণ করে শুনানির জন্য সোমবার দিন ঠিক করে দেয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির ১৮ আইনজীবীর আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টের উল্লিখিত বেঞ্চে যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী,জয়নুল আবেদনীসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী।

জামিন আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করে এ জে মোহাম্মদ আলী রোববারই শুনানি করার সুযোগ চান।

তিনি বলেন,আপনাদের এখতিয়ার আছে।জরুরি ভিত্তিতে একটি তালিকা করে নিতে পারেন।এখনই সাপ্লিমেন্ট করে নিতে পারেন।’

তখন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন,সিনিয়র কাউন্সিল আমার ব্রাদার শুনতে চাইতেছে না।আপনারা অন্য সিনিয়র কোর্টে চেষ্টা করেন প্লিজ।’

আইনজীবী বলেন,আপনারা সব কোর্ট যদি এমন করেন, তাহলে আমাদের কী হবে?আমরা কোথায় যাব?জুডিশিয়ারির যদি এমন অবস্থা হয়,যেখানে আমরা আইনজীবীরা এখানেই প্র্যাকটিস করছি,এই অঙ্গনের আইনজীবী হিসেবে আমরা সুরক্ষা চাইছি।এ বিষয়ে আপিল বিভাগেরও নির্দেশনা রয়েছে।’

পরে আদালত বলে,ঠিক আছে,আজকে দিয়ে যান, কালকে শুনব।কালকে তালিকায় আসবে।’

তখন বিএনপির আইনজীবী বলেন,তাহলে কাল পর্যন্ত পুলিশ যাতে গ্রেপ্তার না করে,সেই নির্দেশ দিয়ে দেন।’

জয়নুল আবেদীন বলেন,আমরা তো সবসময় আপনাদের কাছেই আসি।আপনাদের যদি একটা আদেশ থাকে,যাতে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার যাতে না করে।প্রয়োজনে একটা মৌখিক আদেশ দেন।’

এ সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ভাঙচুরের ঘটনার বিষয়টি উল্লেখ করে বিচারক বলেন,এইসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কে বা কারা করেছে তা জানি না,কিন্তু সারা দেশের মানুষ এগুলোকে ভালোভাবে নিচ্ছে না।’

ওই সময় আইনজীবী মামুন মাহবুব,জয়নুল আবেদীন,এ জে মোহাম্মদ আলী,ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদলের বক্তব্যকে অ্যাকাডেমিক বক্তব্য উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলে,যা বলতেছেন,তার সবই অ্যাকাডেমিক।আমরা অ্যাকাডেমির মধ্যে আছি,প্রাকটিক্যালি নাই।’

এক পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন,আমাদের বক্তব্য হচ্ছে,আমরা অর্ডার পাস করেছি।তারপরও বিভিন্ন জায়গায় আসামি ধরা হয়েছে।টাকা-টুকা চাইছে এমন ধরনের ঘটনাও আছে।

‘লইয়ার সার্টিফিকেট দিয়েছেন।তারপরও ধরে নিয়ে কোর্টে প্রডিউস করেছে।রিমান্ডেও পাঠিয়েছে।হাইকোর্টের অনলাইনে আদেশ আছে,সেটাও দেখে নাই।’

পরে আদালত সোমবার শুনবে বলে জানিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয়নুল আবেদীন বলেন,আদালতকে আমরা বলেছি আমরা কোর্ট অফিসার।আমরা লিগ্যাল প্রটেকশনের জন্য আপনাদের এখানে এসেছি।উনারা বলেছেন, আগামীকাল জামিন আবেদন শুনবেন।তখন আমরা আবেদন করেছি অন্তত মৌখিকভাবে হলেও আপনারা একটি আদেশ দেন,যাতে আইনজীবীদের গ্রেপ্তার না করা হয়।

‘তখন আদালত বলেছে,এর আগে কয়েকজনকে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার না করতে বলেছিলাম,কিন্তু তাদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে টর্চার করা হয়েছে।এটা আমরা শুনেছি। লইয়ার সার্টিফিকেটও দেয়া হয়েছে।সুতরাং আগের বিচারব্যবস্থা যেভাবে ছিল,এখন সেভাবে তো চলছে না।’

এর আগে হাইকোর্টের দুটি বেঞ্চে জামিন আবেদন নিয়ে যান বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।সেসব বেঞ্চ তাদের জামিন আবেদন শুনেনি।পরে তারা হাইকোর্টের এ বেঞ্চে যান।

তারেক দম্পতির বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের একপর্যায়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও হামলার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. রফিক উল্লাহ শাহবাগ থানায় ১৮ আইনজীবীর নামে মামলা করেন।

আরও খবর

Sponsered content