রাজনীতি

সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ স্থগিত করে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে- জামায়াত

  প্রতিনিধি ৪ আগস্ট ২০২৩ , ৫:৩৭:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পূর্বঘোষিত শুক্রবারের সমাবেশ স্থগিত করে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাহের বলেন,প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ,আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী (উত্তর ও দক্ষিণ)-এর উদ্যোগে আজ ৪ আগস্ট, জুমাবার,ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছিল।সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা,আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতা-কর্মী ও আলেম-ওলামাদের মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।

‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান গত ২৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পয়লা আগস্ট রাজধানীতে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।ওই দিন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল।সমাবেশের বিষয়ে ২৫ জুলাই সকাল ১০টায় ইমেইলে এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনারকে অবহিত করে চিঠি দিয়ে আসেন।’

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন,পুলিশ প্রশাসন সহযোগিতা না করায় এবং ১ আগস্ট কর্মদিবস হওয়ায় সমাবেশের কর্মসূচিটি বন্ধের দিন,অর্থাৎ আজ ৪ আগস্ট,জুমাবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্ধারণ করা হয়।আবারও ডিএমপি কমিশনারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়,কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন,শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সমাবেশ কর্মসূচিতে অনুমতি দেয়া হয়নি।

‘সভা-সমাবেশ করা সংবিধান স্বীকৃত অধিকার।সংবিধানের ৩৭ ধারায় সুস্পষ্টভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার দেয়া হয়েছে।এই অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা প্রশাসনের দায়িত্ব, কিন্তু প্রশাসন বারবার আমাদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করছে। আমরা তীব্র ভাষায় এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।এ ধরনের আচরণ অগণতান্ত্রিক,অন্যায়,অনৈতিক।

আমাদের সাথে বারবার অন্যায় করা হচ্ছে।দেশের সংবিধান বলেছে আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান।সরকারি দল যখন তখন অনুমতি ছাড়া সভা সমাবেশ করবে,আর আমাদের বেলায় অনুমতি লাগবে?এই দ্বৈত নীতি কেন?’

জামায়াতের জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন,জামায়াত আইনের দৃষ্টিতে সভা-সমাবেশ করার সুযোগ পাবে,এটাই স্বাভাবিক,কিন্তু জামায়াতকে সে সুযোগ না দিয়ে সারা দেশে জামায়াত নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।গত এক সপ্তাহে রাজধানীসহ সারা দেশে জামায়াতের আট শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।পুলিশ জামায়াত নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে মূল্যবান আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মহিলাদেরকে নাজেহাল করছে।কোনো কোনো এলাকায় পুরুষ নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের স্ত্রী-সন্তানদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে।রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ বেআইনি ও মানবাধিকার পরিপন্থি।’

সমাবেশ স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন,আজকের সমাবেশ বাস্তবায়নে আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলাম।আমরা বারবার বলে আসছি,আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কোনো ধরনের সংঘাত,সংঘর্ষে বিশ্বাসী নয়।প্রশাসন সহযোগিতার পরিবর্তে একটি সংঘাতমুখর পরিবেশের অবতারণা করেছে। তাই আমরা আজকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের কর্মসূচি স্থগিত করছি।

‘এর প্রতিবাদে ৬ আগস্ট,রবিবার বাংলাদেশের সব বিভাগীয় শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।জনগনের দাবি আদায়ে আমরা রাজপথে ছিলাম,আছি এবং থাকব ইনশাআল্লাহ।’

আরও খবর

Sponsered content