রাজনীতি

সাবেক পুলিশপ্রধান হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক:-মির্জা ফখরুল

  প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২৪ , ৫:৫৩:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।ব্যাংক লুটপাট করে তারা বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে।সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, চিন্তাও করতে পারি না।যখন দেখি তিনি গণতন্ত্র ধ্বংসে জড়িত।সাবেক পুলিশপ্রধান হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক।বড় বড় আরও যারা রাঘববোয়াল,ব্যাংক চুরির হোতা, তাদের এখন পর্যন্ত ধরা হচ্ছে না।অথচ দেশনেত্রীকে সাত বছর ধরে বন্দী রাখা হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে চুক্তি করেছেন।শুধু বিএনপি নয়,দেশের আইনবিশেষজ্ঞ,পানিবিশেষজ্ঞরাও বলেছেন,এটা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি।আমরা পানি চাই।আমরা আমাদের অধিকার চাই।অভিন্ন নদীর ন্যায্য হিস্যা চাই,সীমান্ত হত্যা বন্ধ চাই। তা না করে এই সরকার সবকিছু বিলিয়ে দিয়েছে।’

এ চুক্তিতে বাংলাদেশের মানুষ কী পেয়েছে?এমন প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল বলেন,বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছে ঘৃণা, বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছে তার অধিকারকে হরণ করা,তার সম্পদগুলোকে লুণ্ঠন করার আরও পথ তৈরি করা। সাহস করে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন,মানুষের মৃত্যু হয় একবার,দুইবার নয়।ভয়ে মরে যাওয়ার চেয়ে সাহস করে প্রতিরোধ করতে হবে। তাই সব অন্যায়ের প্রতিরোধ করতে হবে। আর এর জন্য তরুণ-যুবকদের জেগে উঠতে হবে।

‘খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে আপস নয়’
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন,একটা ব্যানারে দেখলাম,খালেদা জিয়া সুস্থ হলে দেশ সুস্থ থাকবে।কথাটা ঠিক।খালেদা জিয়া অসুস্থ, আজকে পুরো জাতি অসুস্থ হয়ে গেছে।চোর-ডাকাত-বাটপার-বদমাশে দেশ ভরে গেছে। এখন চোর–ডাকাত সবাই মুক্তি পেয়ে যায়,আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) মুক্তি দিতে চান না।’

মির্জা আব্বাস বলেন,আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, দেশনেত্রীকে যেকোনো মূল্যে মুক্তি দিতে হবে।তাঁর মুক্তির স্বার্থে কোনো আপস কারও সঙ্গে হবে না,তাঁর মুক্তি ইনশা আল্লাহ আমরা করে ছাড়ব।’

‘আমি কবরস্থানে গিয়ে অনেককে দেখেছি,যারা মৃত্যুর ভয়ে মুক্তিযুদ্ধে যায়নি’, বিপ্লবী নেতা চে গুয়েভারার এমন উক্তির উল্লেখ করে আব্বাস বলেন,‘আমরা ১৫টা বছর আন্দোলন করেছি,কিন্তু আন্দোলনের কোনো ফল আমরা ঘরে আনতে পারি নাই। কারণ,আমরা যথাসময়ে মাঠে থাকি না।’

কেন এ কথা বললেন, সে ব্যাখ্যা দিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘২৮ (অক্টোবর) তারিখে আমরা যে আন্দোলন করেছিলাম,সেই ২৮ তারিখেই ফলাফল চূড়ান্ত আন্দোলন হয়ে যেত।যদি আমরা পাল্টা একটা মিছিল নিয়ে দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু কেন পারি নাই? মৃত্যুর ভয় ছিল,রক্ত ঝরার ভয় ছিল। যদিও আমরা হাজার কণ্ঠে বলি,খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই।খালেদা জিয়ার কিছু হলে,জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে ইত্যাদি ইত্যাদি স্লোগান দিই।আমাদের তৈরি হতে হবে।’

‘বড় বড় কর্মকর্তারা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত’
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন,খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি,তিনি কোনো তহবিল তছরুপ করেননি।অবাক বিস্ময়ে দেখলাম,তাঁকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়া হলো।আমরা জানি,সাধারণত নিম্ন আদালতে সাজা হলে উচ্চ আদালতে আপিল করলে সেটা কমে।কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলা উচ্চ আদালতে গিয়ে দ্বিগুণ হয়ে গেল।’

নজরুল ইসলাম বলেন,এই সরকারের নিযুক্ত সাবেক প্রধান সেনাপতি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত।এই সরকারের সাবেক পুলিশপ্রধান দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত।এই সরকারের ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত।এই সরকারের রাজস্ব বিভাগের বড় বড় কর্মকর্তারা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত।যেই সরকারের নিযুক্ত এত বড় বড় কর্মকর্তারা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন,তাহলে সেই সরকার কি দুর্নীতিবাজ নয়?

‘এখন প্রতিরোধই কর্তব্য’
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যখন অন্যায় আইনে পরিণত হয়,তখন প্রতিরোধ কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়।তিনি প্রশ্ন ছোড়েন বাংলাদেশে আইনের শাসন আছে? উপস্থিত সবাই ‘না’ জবাব দিলে আমীর খসরু বলেন, যেখানে আইনের শাসন নেই, মানবাধিকার নেই,গণমাধ্যমে স্বাধীনতা নেই, বাক্‌স্বাধীনতা নেই,যেখানে জীবনের নিরাপত্তা নেই,যে দেশে ৬০ লাখ বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ভিন্নমত বন্ধ করে দিতে চায়,সে দেশে শুধু কি প্রতিবাদ করে এখান থেকে বের হওয়া যাবে?

খসরু বলেন,যেখানে অন্যায় আইনে পরিণত হয়,সেখানে প্রতিরোধকে অনিবার্য এবং কর্তব্য হিসেবে নিতে হবে।

প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পরিচালনায় সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,সেলিমা রহমান,ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লা বুলু,মো. শাহজাহান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন,শামসুজ্জামান দুদু,নিতাই রায় চৌধুরী,আসাদুজ্জামান রিপন,কেন্দ্রীয় নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক,ফরহাদ হালিম,সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন,রুহুল কবির রিজভী,খায়রুল কবির,হাবিব উন নবী খান,শহিদ উদ্দিন চৌধুরী,আবদুস সালাম আজাদ,সৈয়দ এমরান সালেহ ও যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।

২১ জুন থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে প্রায় আট মাস পর গতকাল ঢাকায় বড় সমাবেশ করল বিএনপি।কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল রেস্টুরেন্ট মোড় থেকে ফকিরেরপুল মোড় পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের জমায়েত ছিল। সমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টন,কাকরাইল,ফকিরেরপুল, বিজয়নগর সড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন থাকতে দেখা গেছে।

প্রথম আলোর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন
রাজধানী ঢাকামির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরবিএনপিখালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া নিয়ে আরও পড়ুন
শুধু বক্তৃতায় খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না: গয়েশ্বর রায়
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ৬১০ কৃষিবিদের বিবৃতি
খালেদা জিয়া স্বেচ্ছায় বেসরকারি হাসপাতালে গেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি
খালেদা জিয়াকে সিসিইউ সুবিধার কেবিনে স্থানান্তর
সরকার খালেদা জিয়ার প্রতি অমানবিক আচরণ করছে: গণতন্ত্র মঞ্চ
তাঁরা নিজেদের হাস্যকর বস্তুতে পরিণত করছেন: আইনমন্ত্রী

আরও খবর

Sponsered content