প্রতিনিধি ৫ নভেম্বর ২০২৩ , ৩:৫৯:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি।।।ময়মনসিংহের নান্দাইল পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সাতজন মেধাবী ও সাহসী ছাত্রী একত্রিত হয়ে ২০১৫ সালে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।এই আন্দোলনটি তখন ব্যাপক সাড়া ফেলে। উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন ছাত্রীদের ডাকে সাড়া দেওয়ায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলনটি ওই সময় বেগবান হয়েছিল। ফলে তাঁদের উদ্যোগে সে সময় শতাধিক বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়। বাল্যবিবাহ ঠেকানোর সেই গল্পটি তুলে ধরা হয়েছিল।

সেই সাতজন হলেন তুলি দেবনাথ,সানজিদা ইসলাম,স্নেহা বর্মণ,লিজুয়ানা তাবাসসুম,জান্নাতুল ইসলাম,জীবননিসা খানম ও জান্নাতুল আক্তার।তাঁরা এখন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন।দলটির নেতৃত্বে ছিলেন তুলি দেবনাথ।নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে প্রতিরোধ আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন তিনি।
কেমন আছেন সেই ‘সাত সাহসী’? মুঠোফোনে কথা হয় তুলির সঙ্গে। তিনি জানান,ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটে আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন।বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলনের কথা তিনি ভোলেননি।তাঁর মতে, গনমাধ্যম সমাজ গঠনেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।তাঁদের আন্দোলনের প্রতিটি মুহূর্ত গনমাধ্যমে তুলে ধরেছিল বলে কৃতজ্ঞতা জানান তুলি।
দলটির আরেক সদস্য সানজিদা ইসলাম কিশোরগঞ্জে গুরুদয়াল সরকারি কলেজে পড়ছেন।বিবিসির জরিপে ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন তিনি।সানজিদা জানান,প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের নিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন।তাহলে বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে সমাজে সচেতনতা বাড়বে। এ অভিশাপ থেকে মেয়েরা মুক্ত থাকবে।এক্ষেত্রে প্রশাসনেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
সাত সাহসী:-
সাত সাহসীর আরেকজন স্নেহা বর্মণের মা মৌসুমি রানি বর্মণ জানান,তাঁর মেয়ে কিশোরগঞ্জের সরকারি গুরুদয়াল কলেজে সম্মান শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্রী।স্নেহা এখনও নিজেকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলনে জড়িত রেখেছে।তবে এ ধরনের সামাজিক আন্দোলন চালিয়ে নিতে প্রকৃত সহযোগীদের অভাব অনুভূত হয় তাঁর।
আরেক সদস্য লিজুয়ানা তাবাসসুম কিশোরগঞ্জের সরকারি মহিলা কলেজে পড়ছেন।জান্নাতুল ইসলাম পড়ছেন ময়মনসিংহে।জীবননেসা খানম কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।এখনও নিজেকে জড়িত রেখেছেন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে।আরেক সদস্য জান্নাতুল আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
নান্দাইল পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল খালেক বলেন,তাঁর প্রতিষ্ঠানের অষ্টম,নবম ও দশম শ্রেণির সাতজন ছাত্রী ছিল অত্যন্ত মেধাবী ও সংস্কৃতিমনা। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পাদপ্রদীপে ছিল।সেই ছাত্রীরা এখন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়াশোনা করছে।এখনও তাঁদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে।তাঁদের অনুপস্থিতিতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আন্দোলন এগিয়ে নিতে উপযুক্ত কাউকে পাওয়া যায়নি।উপযুক্ত পরিবেশও পাওয়া যাচ্ছে না। ২০১৯ সালের প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেওয়া সংবর্ধনার কথা উল্লেখ করে মো. আবদুল খালেক বলেন,গণমাধ্যম হিসেবে যখন ভালো কিছুর পাশে দাঁড়ায়,তখন আমরা আশার আলো দেখতে পাই।’

















