শিক্ষা

সন্তান প্রসবের ৯ ঘন্টা না পেরোতেই এইচএসসি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত

  প্রতিনিধি ৮ নভেম্বর ২০২২ , ১০:৩৩:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি।।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার খোসকান্দী গ্রামের ঝুমুর দেবনাথ (২১) নামের এক শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা বাংলা ১ম পত্র, একটি পরিক্ষা দেওয়া পর আজ রাত আনুমানিক ১ টার দিকে মেয়ে সন্তান জন্ম দেন। সে বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী।তার স্বামির বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার বাগমারা গ্রামে।

হঠাৎ করে ঝুমুর দেবনাথের প্রসব বেদনা শুরু হলে তরিগরি করে হোমনা চৌরাস্তায় অবস্থিত ডক্টর্স হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এসময় হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহকারী সার্জন ডাক্তার এম এম মাহবুবুর রহমানকে ডাকা হয়। তখন রাত আনুমানিক ১২ টা বাজে।

ডাক্তার এসে রোগীর তাৎক্ষণিক অবস্থা খারাপ দেখে সিজার অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন কেননা আল্ট্রা রিপোর্ট অনুযায়ী বাচ্চা জন্মের তারিখ ১৪ দিন বেশি অতিক্রম করে ফেলেছে।

এদিকে প্রসূতি শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো ছিল বলে বাসায় নরমাল ডেলিভারি চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু নরমাল ডেলিভারির অপেক্ষা করতে গিয়ে ১৪ দিন বেশি পার হয়ে যায়। পরে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

ডক্টরস হাসপাতালে ডাক্তার এম এম মাহবুবুর রহমানের আন্তরিকতায় রোগীর শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে রাত ১টার দিকে সিজার অপারেশন সফল করেন এবং মা ও বাচ্চা উভয়ই সুস্থ আছেন।

অপারেশন শেষে রোগীকে বেডে আনা হলে রোগীর আত্মীয় স্বজন তখন ডাক্তারকে বলেন প্রসূতি মা একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী, সে ১টি পরীক্ষা দিয়েছে বাচ্চা পেটে থাকা অবস্থায় এবং বাকি পরিক্ষাগুলো দিতে ইচ্ছে তার।

তখন আক্তার মাহবুবুর রহমান রোগীর সাথে কথা বললে সে জানায় স্যার আমি আমার পরিক্ষা গুলো দিতে চাই।

এরপর থেকেই ডাক্তাররা তার পরিক্ষা দেওয়ার জন্য শারীরিক অবস্থার সকল প্রস্তুতি নেন এবং একজন নার্স নিয়োগ করেন পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে সার্বক্ষণিক সাথে থাকার জন্য যাতে করে রোগীর কোনো ধরনের সমস্যা হলে সাথে সাথে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যায়।

এবিষয়ে ডাক্তার মাহবুবুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান আমরা রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে তার পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছি এবং রোগী নিজে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য মানসিক ভাবে তৈরি ছিলেন।

রোগী নিজেই বলেন আমার দুই বছরের সাধনা নষ্ট হয়ে যাক এটা আমি চাই না আমি পরিক্ষা দেবো। রোগীর আত্মীয়-স্বজনরাও পরিক্ষা দেওয়াতে প্রস্তুত যদি ডাক্তার অনুমতি দেয়।

এবিষয়ে পরিক্ষার কেন্দ্র সচিব প্রিন্সিপ্যালে রুহুল আমিন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমরা অসুস্থ শিক্ষার্থীকে পরিক্ষা দেওয়া জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তাকে আলাদা ব্যাড রোমে পরিক্ষা দেওয়ার জন্য একজন শিক্ষিকা ও কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত ডাক্তারগণ দেখাশোনা করছেন। রোগী পরিক্ষা দিতে পেরে অনেক খুশি অনুভব করছেন।

আরও খবর

Sponsered content