জাতীয়

সংকটের সুরাহা করতে চলতি মাসেই দুই মন্ত্রণালয়কে নিয়ে বৈঠকে বসতে পারে-পিএমও

  প্রতিনিধি ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ২:৫৮:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিনা মূল্যের পাঠ্যবই ছাপিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।এ জন্য প্রতিবছর তাদের অন্তত ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা দিতে হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে। কাজ ও টাকা অন্য মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে (ডিপিই) এ দায়িত্ব দিতে চায়।এই নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের রশি-টানাটানি অনেক দিনের।এই সংকটের সুরাহা করতে চলতি মাসেই দুই মন্ত্রণালয়কে নিয়ে বৈঠকে বসতে পারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও)।

সম্ভাব্য এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘প্রাথমিকের বই ছাপানো ও বিতরণের কাজ আমাদের মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হবে।এটা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত ছিল।এ জন্য সংশ্লিষ্ট আইনের সংশোধনী প্রস্তাবও চূড়ান্ত করা হয়েছিল।কিন্তু তা এখনো অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হচ্ছে না।চলতি মাসেই বিষয়টি নিয়ে

আবারও বৈঠক করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।তবে এখনো দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়,জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন,প্রাথমিকের বই ছাপানো নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের এই দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের।এর আগেও একাধিকবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বই ছাপার উদ্যোগ নিলেও তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা সম্ভব হয়নি।গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিকের বই ছাপার দায়িত্ব নিজেরাই নিতে চাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব মো. ফরিদ আহাম্মদ।সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনও।সচিব বলেছিলেন,এ বছরের বই যেভাবে আছে সেভাবে কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এগোব।তবে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পালন করবে। তাহলে সরকারের অন্তত ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।’

এরপর গত বছরের ১৩ মার্চ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।সেখানে বিদ্যমান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড আইন,২০১৮-এর সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি ধারা সংশোধনের কথা বলা হয়।ওই প্রস্তাবে গত ২২ মার্চ অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর ২৯ মার্চ সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।এর ধারাবাহিকতায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানের সভাপতিত্বে গত ১৩ আগস্ট এ বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়,প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি আছে বিধায় আইনটির সংশোধনী প্রস্তাব তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

এরপর গত ৬ নভেম্বর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে সর্বশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়।সেখানে জানানো হয়, আইনটির সংশোধনী খসড়া জনপ্রশাসনে প্রমিতকরণের জন্য পাঠানো হয়েছে।খসড়া প্রস্তাবটির ওপর আরও একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা করে চূড়ান্ত করতে বলা হয়।আইনটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এনসিটিবির মাধ্যমেই প্রাথমিকের বইসহ সব পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কথা বলা হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান বলেন,আইনটির সংশোধনীর খসড়া প্রস্তাব তৈরি হয়েছে।আমরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষার মতামত চেয়েছিলাম।তারা দিয়েছে,তবে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের কিছুটা ভিন্নমত রয়েছে।তিনি অনুমোদন দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে বিষয়টি নিয়ে তাঁর কার্যালয়ে শিগগির বৈঠক হতে পারে—এ তথ্য জানালে সচিব বলেন, ‘তারা ডাকলে আমরা যাব।আমাদের কাজের অগ্রগতি আছে, সেটা জানাব। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে,সেটাই বাস্তবায়ন হবে।’

আরও খবর

Sponsered content