প্রতিনিধি ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৪:১৭:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
শেবাচিম প্রতিনিধি।।চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদ করায় উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন স্বজনরা।বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসক বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মারধরের শিকার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের পরিচালককে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করেন।তারা পরিচালককে ‘আনফিট’ অভিহিত করে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।এ সময় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন চিকিৎসক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা জানান,বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন গৌরনদীর রিজিয়া বেগম বৃহস্পতিবার দুপুরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।এ সময় দায়িত্বরত চিকিৎসক ব্যক্তিগত কাজের অজুহাত দেখিয়ে চিকিৎসা প্রদানে অসম্মতি জানান।এ অবস্থায় রোগীর মৃত্যু হলে স্বজনরা ওই চিকিৎসকের কক্ষে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।এ সময় আনসার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে চিকিৎসকরা স্বজনদের ওপর হামলা চালান।আর এই হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দেন চিকিৎসক মুহিত।
ঘটনাটি দেখতে পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তামিম ইকবাল রাজু ও তার বন্ধু মুজাহিদ প্রতিবাদ করেন।এ সময় পাঁচজন চিকিৎসক ও আনসার সদস্যরা রাজুকে মারধর এবং তার মোবাইল ফোন সেট ছিনিয়ে নেন।
মারা যাওয়া রোগীর স্বজন মো. নাসির বলেন, ‘আমার দাদী রিজিয়া বেগম বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন।আজ(বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের ৪ নম্বর ইউনিটে ভর্তি করি।
‘ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জানানো হলে তারা নাস্তা খেয়ে পরে আসবেন বলে জানান।এ সময় আমি দাদীকে একটু দেখার জন্য চিকিৎসকদের বার বার অনুরোধ করলেও তারা আসেননি।এর আধ ঘণ্টা পর দাদী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।’
‘এরপর আমার চাচা ও আমি চিকিৎসকদের উদ্দেশে বলি- আপনারা কি মানুষ?আপনার মা বা অন্য কোনো স্বজন হলে আপনারা কী করতেন?এমন কথা বলায় তারা কয়েকজন মিলে আমাদের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। এমনকি আমার মোবাইল ফোন সেটটি ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলেন।এমনকি দাদীর মরদেহটিও আটকে রাখেন।’
এদিকে খবর পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে জড়ো হয়ে পরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাকে আনফিট বললে চিকিৎসকদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা পরিচালকের কাছে অভিযোগ দিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন,হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু নিয়ে স্বজনদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে।আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’