আন্তর্জাতিক

লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ‘ড্যানিয়েল’ মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে

  প্রতিনিধি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২:১৫:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লিবিয়ায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লাশের সারি।এরই মধ্যে জানা গেছে,মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে।দেরনা শহরে মরদেহ উদ্ধারে এখনও কাজ করে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির তামের রামাদান বলেন,নিহতের সংখ্যা অনেক এবং তা কয়েক হাজারে পৌঁছাতে পারে। খবর আল জাজিরার।

গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রিসের উপকূলে ভূমধ্যসাগরের ওপর তৈরি হয় ঘূর্ণিঝড় ‘ড্যানিয়েল’।এর ফলে ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর গ্রিসে রেকর্ড বৃষ্টিপাত ঘটে।গ্রিসের জাগোরা গ্রামের একটি অংশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৭৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়,যা প্রায় ১৮ মাসের বৃষ্টিপাতের সমতুল্য।

থেসালি,মধ্য গ্রিসের অনেক অংশে ২৪ ঘণ্টায় ৪০০ থেকে ৬০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।প্রবল বৃষ্টির ফলে গ্রিসে ১৫ জনের প্রাণহানি হয়। ‘ড্যানিয়েল’ ক্রমে শক্তি সঞ্চয় করে লিবিয়ার দিকে অগ্রসর হয় ও ক্রমে ‘মেডিকেন’ (মেডিটেরানিয়ান হারিকেন)-এ পরিণত হয়।‘মেডিকেন’-এ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ও মধ্য-অক্ষাংশের ঝড়ের কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এই ঝড় সাধারণত সেপ্টেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে তৈরি হয়।

লিবিয়ার জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, ১০ সেপ্টেম্বর তীব্রতর হয় ‘ড্যানিয়েল’। এর ফলে দেশের বিভিন্ন অংশে ১৫০ থেকে ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।যার ফলে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ বন্যা।সবচেয়ে বেশি হয়েছে লিবিয়ার আল-বায়দাতে। সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ৪০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

রোববার ভয়ঙ্কর শক্তি নিয়ে ‘ড্যানিয়েল’ আছড়ে পড়ে লিবিয়ার উপকূলে। ‘ড্যানিয়েল’-এর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় আল-বায়দা, আল-মার্জ, তোবরুক, বাতাহ-র মতো বেশ কিছু শহর।তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দেরনা ও বেনগাজির।প্রবল বৃষ্টি ও বানের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে লিবিয়ার শহর দেরনা।সেখানের বেশ কয়েকটি নদীবাঁধ রয়েছে।ঝড়ের তাণ্ডবে তিনটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পানির তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে একেবারে সমুদ্রে নিয়ে ফেলেছে বহু বসতি।এর জেরেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ হয়েছেন হাজারো মানুষ।

পচা দেহের গন্ধ ও স্বজন হারানো পরিবারের লোকেদের আর্তনাদ মিশছে বাতাসে।গণকবর দেওয়া হচ্ছে মরদেহ। পরিচয়ের অপেক্ষায় হাসপাতালে পড়ে আছে বহু লাশ।জরুরি বিভাগ জানিয়েছে,পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় সাত হাজার মানুষ।

উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে মিশর।তবে লিবিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এ তৎপরতা কিছু বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।দেশটি এখন দুটি সরকারের নিয়ন্ত্রণে বিভক্ত হয়ে আছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র,জার্মানি,ইরান,ইতালি,কাতার এবং তুরস্কসহ কিছু দেশ জানিয়েছে,প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে তারাও প্রস্তুত আছে।এর মধ্যে মাত্র আগেরদিন মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে মরক্কোর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।

আরও খবর

Sponsered content