অপরাধ-আইন-আদালত

রেলের সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের কেনাকাটায় থামছে না দূর্নীতি ও কমিশন বানিজ্য

  প্রতিনিধি ২০ মার্চ ২০২৩ , ২:০৫:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজশাহী প্রতিনিধি।।কোনোভাবেই থামছে না পশ্চিম রেলের সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের অনিয়ম দুর্নীতি।সাবেক সিওএস বেলাল থেকে বর্তমান এস এম রাসেদুল ইবনে আকবর কেউ দূর্নীতি’র বাহিরে থাকতে পারছে না।ক্রয় খাতে কোটি কোটি টাকা লোপাটে নিমিত্তে পদটির চাহিদাও ব্যপক।

গত ছয় মাস হলো ঐ পদে অধিষ্ঠিত হন রাসেদুল ইবনে আকবর।যোগদানের ৬ মাসে ইতোমধ্যে গড়েছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।সেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে করছেন কেনাকাটা।দপ্তরটিতে ওপেন টেন্ডার হোক আর ইজিপি টেন্ডারই হোক,প্রতিটি কাজে ঠিকাদারকে গুণতে হয় মোটা অংকের উৎকোচন।এখনো এলটিএম এর মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি কাজে দপ্তরের প্রতিটি শাখায় দিতে হয় কমিশন।দপ্তরটির বিরুদ্ধে কাজ না করে ভুয়া বিল উত্তোলনের অভিযোগও আছে।কম্পিউটার অপারেটর কাম অফিস সহায়ক সানোয়ার হোসেন ইতোমধ্যে একটি ভুয়া বিল উত্তোলন করে ধামাচাপা দিয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে,স্বজনপ্রীতি’র মাধ্যমে নিজস্ব ঠিকাদারকে কাজ প্রদানসহ ৬ মাসে প্রতিটি কাজে নিয়েছেন মোটা অংকের কমিশন।কমিশন বানিজ্যে কাজ পেতে হয় সেখানে।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা বলেন, যোগদানের পর থেকে বাজেট নাই মর্মে সল্পতা গল্পে কমিশনে তাঁর পছন্দের ঠিকাদারকে এলটিএম এর মাধ্যমে কাজ দিচ্ছেন তিনি।নিম্নমানের মালামাল ক্রয় করে মোটা অংকের কমিশন নিচ্ছেন তিনি।

কেনাকাটার অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে ইতোমধ্যে দূদক আবারও তদন্ত শুরু করেছেন।কেনাকাটার বিষয় দুদক রাজশাহী রেল মেডিকেলে ঝটিকা অভিযান পরিচালনাও করেছেন।তবুও কোনোভাবে যেন থামছে না সিওএস এর কেনাকাটার অনিয়ম দুর্নীতি।

বাজেট নাই মর্মে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েও গোপনে এখনো কাজ করছেন বর্তমান ( সিওএস) রাসেদুল ইবনে আকবর।
দপ্তরটির ব্যপক অনিয়ম ও দূর্নীতি ঠেকাতে প্রতিমাসে সাংবাদিকদের জন্য মোটা অংকের অর্থ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন তিনি।সেই বরাদ্দ তালিকা করে স্বাক্ষর নিয়ে কতিপয় অসাধু সাংবাদিকের মাঝে বন্টন করেন এও (প্রশাসনিক কর্মকর্তা) বেলাল।দপ্তরের এও বেলাল অফিসের গোপন নথিপত্র বিভিন্নজনকে দিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।রেল মেডিকেলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন নথি ইতোমধ্যে বিভিন্নজনকে টাকার বিনিময়ে দিয়েছেন বেলাল।অফিসারদের বেকায়দায় ফেলতে ও নিজের আধিপত্য বিস্তারে অফিসের অনিয়ম দুর্নীতিসহ গোপন নথিপত্র বিক্রি করেন তিনি।রেল মেডিকেলের কেনাকাটার কাজে ব্যপক অনিয়ম হয়েছে বলে সেই কাগজও বিক্রি করেন মোটা অংকের টাকায়।তিনি তাঁর উর্ধতন হিন্দু অফিসারদের “র” এর এজেন্ট বলে তিরস্কার করেন।

প্রসঙ্গত,পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কেনা কাটায় প্রায় ৭ কোটি টাকার মালামাল ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তা ফলাও ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।গত ১৫ জানুয়ারী উক্ত অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পশ্চিম রেলওয়ে মেডিকেল ও জিএম দপ্তরে অভিযান পরিচালনা করেছেন।

জানতে চাইলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) বেলাল বলেন, প্রমাণ থাকলে নিউজ করেন। একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।

এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন দিয়ে পশ্চিম রেলের সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের প্রধান রাসেদুল ইবনে আকবরকে না পেয়ে তাঁর দপ্তরে গেলে তিনি বলেন,আমি ফোন ধরতে বাধ্য নই।আমার বক্তব্য নিতে হলে জিএম এর অনুমতি লাগবে।

জানা যায়,রাজশাহী পশ্চিম রেলের সরাঞ্জাম নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের যোগসাজশে রেল মেডিকেলের কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি করা হয়েছে।দুনীতি’র মাস্টার মাইন্ডরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে।তদন্ত কমিটি গঠন হয়,তদন্ত শেষে ফাইল চলে যায় হিমাগারে।রেল মেডিকেলের কেনাকাটায় নানা অনিয়ম দুর্নীতি সংবাদ প্রকাশের পর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন পশ্চিম রেল কতৃপক্ষ।

এ বিষয়ে কথা বলতে কমিটি’র প্রধান ডেপুটি সিওপিএস হাসিনা খাতুনকে একাধিকবার ফোন দিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি।তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

কথা বলতে পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন,উক্ত দপ্তরে কেনাকাটা খুব কম হচ্ছে। অতি জরুরি প্রয়োজনে কিছু এলটিএম করা হয়।তা আগের তুলনায় অনেক কম।তবে কেউ হিন্দু অফিসারদের ‘র’ এর এজেন্ট বলবে এটা কাম্য নয়।তিনি না বুঝে হয়তো এই কথা বলেছেন।উপরোক্ত বিষয় গুলো সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না।এরকম অভিযোগ আসলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content