প্রতিনিধি ১২ মে ২০২৫ , ৪:০৯:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।বিশ্ব অর্থনীতির দুই প্রধান শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দীর্ঘদিনের বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল।উচ্চ শুল্ক,পাল্টা পদক্ষেপ এবং কূটনৈতিক টানাপোড়েন বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছিল।তবে সম্প্রতি এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে তারা পারস্পরিক আমদানি শুল্ক ৯০ দিনের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করার চুক্তিতে পৌঁছেছে।সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এক ফলপ্রসূ বৈঠকের পর এই ঘোষণা আসে,যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা জাগিয়েছে এবং বিশ্ব বাণিজ্যে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে। এই পদক্ষেপ কেবল দুই দেশের জন্য নয়,গোটা বিশ্বের জন্যই এক ইতিবাচক বার্তা।

সোমবার (১২ মে) থেকে কার্যকর হওয়া এই অস্থায়ী চুক্তির আওতায়, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ই তাদের পারস্পরিক শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমিয়ে এনেছে।যুক্তরাষ্ট্র তার চীনা পণ্যের উপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়েছে এবং চীন মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে কমিয়েছে।এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ হলো—দীর্ঘদিনের চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা কমানো এবং বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনের ওপর তৈরি হওয়া চাপ হ্রাস করা।চলতি বছর জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করলে,সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যায়। ফলে উভয় পক্ষই বুঝতে পারে যে পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া বিশ্ববাণিজ্য ও উৎপাদন কাঠামো ক্ষতির মুখে পড়বে।
এই চুক্তি ঘোষিত হয় (১০-১১ মে) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের পরে,যেখানে মার্কিন রাজস্ব (ট্রেজারি সেক্রেটারি) প্রতিনিধি স্কট বেসেন্ট,বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার এবং চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হি লিফেং অংশ নেন। তারা যৌথভাবে এক বিবৃতিতে জানান,৯০ দিনের জন্য শুল্ক হ্রাস কার্যকর করা হবে,এবং এর প্রেক্ষিতে একটি “বাণিজ্য পরামর্শ ব্যবস্থা” গঠন করা হয়েছে,যা ভবিষ্যতে উভয় দেশের মধ্যে নিয়মিত ও অনিয়মিত বাণিজ্য আলোচনা চালিয়ে যাবে। বৈঠকটি উভয় পক্ষই অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছে।
বেসেন্ট বলেন,বৈঠকটি “উৎপাদনশীল এবং গঠনমূলক” ছিল, এবং গ্রিয়ার উল্লেখ করেন যে “পার্থক্য অনেক কম ছিল প্রত্যাশার তুলনায়।” হি লিফেং বৈঠককে “আন্তরিক,গভীর এবং ফলপ্রসূ” বলে বর্ণনা করেন। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক নোজি ওকনজো-ইওয়ালা এই পদক্ষেপকে “বিশ্ব অর্থনীতির জন্য এক আশাব্যঞ্জক সঙ্কেত” হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন।যদিও তাত্ক্ষণিকভাবে বিস্তারিত শুল্ক কাঠামোর তথ্য প্রকাশ হয়নি,বেসেন্ট নিশ্চিত করেছেন যে মঙ্গলবার (১৩ মে) তা জানানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের এই সাময়িক শুল্ক হ্রাস কেবল তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নয়,বরং গোটা বিশ্বের বাণিজ্যিক স্থিতিশীলতা ও পারস্পরিক নির্ভরশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।এই ৯০ দিনের সময়সীমা ভবিষ্যতের আরও বড় চুক্তির পথ খুলে দিতে পারে,যা হয়তো একটি দীর্ঘমেয়াদী সমঝোতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

















