অপরাধ-আইন-আদালত

মোহনগঞ্জে শরীফ হত্যাকাণ্ডের ৩৭দিনে রহস্য উদঘাটন- দা কোপে ১ খুন

  প্রতিনিধি ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ , ৩:৫৬:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মোহনগঞ্জ(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি।।নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ৫ নং সমাজ সহিলদেও ইউনিয়নের জয়পুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে জামরুল মিয়ার ছেলে শরীফ মিয়া (২২) খুন হবার ৩৭ দিন পর মোহনগঞ্জ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে।

মামলার আসামি জেল হাজতে আটককৃত মাজহারুল ইসলাম নিজে দা”র এক কুপ দিয়ে খুন করার কথা স্বীকার করেছেন ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়,গত ১০ই ডিসেম্বর জয়পুর বাজার থেকে চুল কেটে শরীফ নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয়।ওইদিন রাত সাতটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে নিখোঁজ শরীফের গলাকাটা লাশ এর সন্ধান পাওয়া যায়।

থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তে লাশ নেত্রকোনা পাঠায়।

বিভিন্ন সূত্রে মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাজার ইসলাম (২৮) কে সন্দেহজনকভাবে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন তথ্য পাইনি।তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

মোবাইল ফোনের তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত শরীফুজ্জামান গোপন সূত্রে জানতে পারেন,রাতে আসামী বাড়িতে এসে হাতমুখ ধুয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ে।সে লাশ দেখতে যাইনি এবং জানাজাও যায়নি।দুই দিনের রিমান্ড আনলে আসামি কোন তথ্য দেয়নি। পরবর্তীতে ৭ জানুয়ারি বিকালে ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের আজিজুল হকের জমিতে ফয়জুল ইসলাম মলন কাজ করার সময় একটি দাঁড়ালো দা পেয়ে মালিককে অবহিত করে।

দা”র সন্ধান পেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল থেকে দা উদ্ধার করে মাজহারুলের দুই ভাই ও ভাবিকে আটক করে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পারেন, আসামীর মা ও অন্য একজন জেলখানায় গিয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং জিজ্ঞাসাবাদে খুন করেছে তার ছেলে স্বীকার করে।

পরবর্তীতে মা সহ জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করলে দুইজনকে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।

স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দীর পর আসামিকে পুনঃরায় রিমান্ডে আনা হলে অপকটে খুন করার কথা শ্বীকার করে এবং বর্ণনা দেয়।

আসামি বলে আমার ভাবী মাইমূনা(২৫) এর প্রতি কুনজর থাকায় তার সাথে ঝগড়া হয়।একজন আরেকজনকে জীবন নাশের হুমকি দেয়।যা কাউকে কেউই অবহিত করেনি।

আসামি নিজেকে আত্মরক্ষার করার জন্য আটপাড়া উপজেলার কলাপাড়া বাজার থেকে ৬শ টাকা দিয়ে একটি লম্বা দাঁড়ালো তা কামার দিয়ে বানিয়ে আনে।১০ ডিসেম্বর রাতে ভাবির ঘরে দেখে ফেললে দৌড়ে পালিয়ে আসে এবং ক্ষেতের মাঝখানে দুইজনের কথাবার্তা হয় এবং হাতাহাতি হয়। ক্ষেতের মাঝখানে পূর্ব থেকে লুকিয়ে রাখা দাড়ালো দা দিয়ে ১ কুপ দিয়েই শরীফকে খুন করে।খুনে ব্যবহারকৃত দা পেলে পালিয়ে যায়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা শরিফুজ্জামান বলেন বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন আলামত এর বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে মামলা অগ্রগতি নিয়ে এক পর্যায়ে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসে।

মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন,কোনরকম সাক্ষী প্রমাণ ছিল না শরিফ হত্যাকাণ্ডে। আমার থানার ওসি(তদন্ত) শরীফুজ্জামান এর বিচক্ষণতায় রহস্য উদঘাটিত হয়েছে।শরিফুজ্জামান বলেন,মোবাইলের কলের তালিকার বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করে একটি ধারণা থেকে তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content