অপরাধ-আইন-আদালত

মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়া মামলা করা যাবেনা- হাইকোর্ট

  প্রতিনিধি ৫ আগস্ট ২০২২ , ২:৫০:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বাংলাদেশের সকল আদালত এবং থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১(গ) ধারায় মামলা দায়ের করার সময় রেজিস্টার্ড এম.বি.বি.এস ক্ষেত্র বিশেষে নন এম.বি.বি.এস বা গ্রাম্য ডাক্তারের চিকিৎসা ব্যবস্থা পত্র দিয়ে মামলা দায়ের হয়ে থাকে। এবং বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনাল সেই সব মামলা আমলে নিয়ে বিচার শেষে সাক্ষ্য প্রমানের উপর ভিত্তি করে আসামীকে সাজাও প্রদান করেছেন এমন অনেক নজির আছে।

যদিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১ (গ) ধারায় বলা হয়েছে যৌতুকের জন্যে যদি সাধারন আঘাত করেন (Simple hurt) তাহলে সর্বোচ্চ তিন বছর এবং সর্বনিম্ন এক বছর এবং দন্ডের অতিরিক্ত অর্থ দন্ডে দন্ডিত হবেন। অর্থাৎ এই ধারার বিশ্লেষণে বুঝা যায় সাধারন জখম থাকতে হইবে ১১(গ) বা ১১(গ)/৩০ ধারায় মামলা করার ক্ষেত্রে। আর সাধারন জখম থাকলে তৎসমর্থনে মেডিকেল সার্টিফিকেট আবশ্যক অন্যথায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) বা ১১(গ)/৩০ ধারার পরিবর্তে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় মামলা করতে হবে।

অধিকন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৩২ (১) ধারায় বলা হয়েছে অপরাধের শিকার প্রত্যকে ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষা সরকারী হাসপাতাল বা সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বেসরকারী হাসপাতালে হবে।

উপধারা ২ এ বলা হয়েছে উল্লেখিত হাসপাতালে অপরাধের শিকার ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্যে উপস্থাপন করলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করবেন এবং একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রদান করিবেন। এবং এরূপ অপরাধ সংঘটনের বিষয়ে থানায় অবহিত করবেন।

কিন্তু বাস্তবে মামলা দায়ের করার সময় আমরা উল্লেখিত সাধারন আঘাতের কথা বিবেচনা না নিয়ে এবং ৩২ ধারার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে ৩২ ধারাকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমলে নিই না। এবং বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালও সেই বিষয়ে খেয়াল না করে মামলা আমলে নিয়ে ফেলেন।

এবার সেই বিষয়টি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ আমলে নিয়ে নির্দেশনা সহ রায় প্রদান করেছেন, এবং সেই রায়ের নির্দেশনা ইতিমধ্যে চট্রগ্রামের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ কার্যকর হয়ে গেছেন। যদিও অন্য কোথাও কার্যকর হয়েছেন কিনা আমার জানা নেই।

কিছু দিন আগে চাপাইনবাবগঞ্জের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২, এর অধীন নারী ও শিশু মামলা নং ৩৪/১৫ এ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করাকে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণ বেশ আলোচনার ঝড় ওঠে। উক্ত নারী ও শিশু মামলা নং ৩৪/১৫ এর বাদীর মেয়ে ডাক্তার তাপসী সন্ধ্যার নিকট চার লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে স্বামী উৎপল কুমার রায় সহ অপর তিন জন বাদীর মেয়ে ভিকটিমকে মারধর করার অভিযোগে শিবগঞ্জ থানায় বিগত ০১-০৮-২০১৬ ইং তারিখে শিবগঞ্জ থানার মামলা নং ৪(৮)২০১৬, জি আর মামলা নং ২৫৮/১৪ দায়ের করেন। পরে তদন্ত শেষে আসামীগনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলে করিলে মামলাটি চাপাইনবাবগঞ্জের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ নারী ও শিশু মামলা নং ৩৪/১৫ হিসেবে বালাম ভুক্ত হয়।

আসামীগণের বিজ্ঞ আইনজীবী চাপাইনবাবগঞ্জের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) এবং ৩২ ধারাকে বিশ্লেষণ করে মামলার দায় হতে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন তখন বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আসামীদের আবেদন না মঞ্জুর করে বিগত ৩০-০১-২০১৬ ইং তারিখ অভিযোগ গঠন করলেন তখন আসামী পক্ষ অভিযোগ গঠনের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে ফৌজদারী আপীল নং ১৬৬০/২০১৬ দায়ের করেন।

মহামান্য আদালত আপীল মামলাটি গ্রহন করে বিগত ২৯-০৩-২০১৬ ইং তারিখ অপর পক্ষকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়ে নিম্ন আদালতের মামলার কার্যক্রম এর উপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেছেন যদিও পরে সেটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল।

মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ শুনানী পর মহামান্য আদালত বিগত ১০-০৯-২০২০ ইং তারিখ উল্লেখিত আপীল মামলার রায় প্রদান করেছেন এবং রায়ে এই মর্মে সিদ্ধান্ত সহ নির্দেশনা প্রদান করেন যে,

The tribunal shall not take cognizance or frame charge of an offence punishable under section 11 (Ga) or 11(Ga)/30 of the Ain, 2000 against an accused without having a medical examination certificate from Government Hospital or any private Hospital, recognized by the Government for that purpose in view of the provision under section 32 of the said Ain in support of simple hurt of the victim wife.

For the reasons stated above, we find merit in this appeal which should be allowed

In the result, the appeal is allowed. The impugned order dated
31.1.2016 is set aside. The accused appellants are discharged from the
allegation and released from their bail bonds

সূত্রঃ- মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইট।

আরও খবর

Sponsered content