চাকরির খবর

মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্ম কোটায় কত শতাংশ,

  প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২৪ , ৪:৩৭:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করা হয়। সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।রায়ের খবরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল,মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় প্রতিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ পর্যায়ে হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এবার কোটা পুনর্বহালের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) রাগীব নাঈম।কোটা পুনর্বহালের বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে তিনি জানান,বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় কোটা পদ্ধতির দরকার আছে।কিন্তু আমাদের প্রশ্নের জায়গা হলো দীর্ঘ কয়েক দশক আগে যে কোটা পদ্ধতি চালু করা হয়,উন্নয়নশীল বাংলাদেশে সেটার প্রয়োজনীয়তা কত শতাংশ?

তিনি আরও বলেন,দেশের জন্য যে সকল সাহসী বীর সেনারা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন,তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে পরবর্তীতে দেশ গঠনে কোটা ব্যবস্থা অত্যন্ত যৌক্তিক এবং প্রয়োজনীয় ছিল।কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের তৃতীয় প্রজন্ম কোটা ব্যবস্থার আওতায় থাকবে কিনা থাকলেও কত শতাংশ,সেটা নিয়ে আসলে আমাদের একটা ভাবনা আছে।আমি মনে কারি এটা নিয়ে অন্যদেরও ভাবনা চিন্তা করার প্রয়োজন।

কোটা পদ্ধতি কিংবা কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ছাত্র ইউনিয়ন কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে রাগীব নাঈম জানান,সরকার এতদিন কোটা ব্যবস্থাকে যেভাবে দেখেছে সেটার সাথে আমরা একমত নই।অর্থাৎ ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে,কোটা বহাল কিংবা সম্পূর্ণ বাতিল দুটির কোনটিই স্থায়ী সমাধান নয়।এর বিপরীতে আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি হলো কোটা পদ্ধতির সংস্কার করা।

তাদের বক্তব্য,অনুন্নত জনপদ এবং প্রত্যন্ত পাহাড়ে যারা বসবাস করছেন তাদের জন্য কোটা থাকা জরুরি।কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়,হরিজন পল্লি থেকে একজন প্রথম আইনজীবী হয়েছেন।বাংলাদেশের জন্মের ৫০ বছরে পুরো জনপদ থেকে থেকে মাত্র একজন আইনজীবী হওয়ার ঘটনা কি লজ্জাজনক নয়?আমাদের বার্তা হলো এই ধরনের জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকা খুবই জরুরি।

নারীদের জন্যও যে পরিমাণ কোটা রয়েছে,বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে হয়ত সেটাও কমিয়ে আনা যেতে পারে। সর্বোপরি ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে,এক কথায় কোটা বাতিল কিংবা বহাল এই সমস্যার সমাধান আনবে না। বরং এটির যৌক্তিক সমাধান জরুরি।

কোটা পদ্ধতিতে কত শতাংশ কোটা রাখা প্রয়োজন সে বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়নের ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা বিভিন্ন এক্সপার্টদের সাথে এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করছি। প্রায় ২০ লাখ আদিবাসীসহ অন্যান্য গোষ্ঠীদের জন্য কত শতাংশ কোটার প্রয়োজন সে বিষয়ে আমরা আলাপের মধ্য দিয়ে শীঘ্রই আমাদের সুস্পষ্ট দাবি তুলে ধরব।আরেকটি দিক হলো কোটা একটা মানুষ দফায় দফায় ব্যবহার করতে পারবে কিনা!অর্থাৎ কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটার ব্যবহার করে ফেলে তাহলে চাকরির ক্ষেত্রে তিনি কোটার ব্যবহার করবেন কি-না?

বর্তমানে কোটা আন্দোলনের সাথে নিজেদের সহাবস্থান ব্যক্ত করে এই নেতা বলেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে আমাদের কমরেড বন্ধুরা যারা কোটা নিয়ে আন্দোলন করছেন আমরা তাদের সাথে আছি।পাশাপাশি দেশব্যাপী সমন্বিত আন্দোলন গড়ে তোলার বিষয়ে ভূমিকা রাখছি।

‘কোটা আন্দোলনকারীরা জামায়াত শিবির’ ঢাবি অধ্যাপকের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে এই নেতা বলেন,এ ধরনের বক্তব্য একটি বিষয়কে বাইনারি করণের মনস্তাত্বিক প্রতিফলন। আমি মনে করি এ ধরনের মন্তব্য করে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার কোন সুযোগ নেই।শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য দাবি যেকোনো মূল্যে আদায় করে নিবে।

আরও খবর

Sponsered content