অপরাধ-আইন-আদালত

মতিউর কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে আবেগঘন দীর্ঘ বার্তা পাঠাচ্ছেন

  প্রতিনিধি ২৫ জুন ২০২৪ , ২:৩০:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সাবেক জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমান চাকরি জীবনের প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে এবারের কুরবানির ঈদে ছাগলকাণ্ডে ফেঁসে গেছেন।

কুরবানির জন্য ১২ লাখ টাকায় ছেলের কেনা ছাগল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বাবার পরিচয়ে টান পড়ে।

ছাগল ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে উঠে আসে।

এর পর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি,আলিশান জীবনযাপন; মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট,শুটিং স্পট,বাংলো বাড়ি,জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।নির্দিষ্ট বেতনের চাকরি করলেও আয় করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা; যা অনেকটা সিনেমার কাহিনিকেও হার মানায়।

নিজের নামে তেমন সম্পদ না করলেও দুই স্ত্রী,৫ সন্তান,দুই ভাই,শ্যালক-শ্যালিকাদের দিয়েছেন দুহাত ভরে।বড় স্ত্রী লায়লা কানিজের জন্য নরসিংদীতে করেছেন নজরকাড়া বাড়ি।ছোট স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলীর গ্রামের বাড়ি ফেনীতে তৈরি করে দিয়েছেন বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স।দুই পরিবারের ব্যবহারের জন্য মার্সিডিস,বিএমডব্লিউ,প্রাডো,মিতসুবিশিসহ বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের নয়টি গাড়ি কিনেছেন।

রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।এখান থেকে সরিয়ে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে মতিউরের অঢেল সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে নেমেছে।

বিপদ থেকে রক্ষায় কাস্টমসকে পাশে চান মতিউর।এজন্য অবিলম্বে বিসিএস কাস্টমস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি চান তিনি।এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে আবেগঘন দীর্ঘ বার্তা পাঠাচ্ছেন মতিউর।এতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে চরম দুঃসময় পার করছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

রোববার কাস্টমস অফিসারদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লেখা এক পোস্টে মতিউর বলেন,আমি বিশ্বাস করি,সহকর্মীরা যারা এলটিইউ (জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বৃহৎ করদাতা ইউনিট), ঢাকা পশ্চিম এবং ট্রাইব্যুনালে আমার সঙ্গে কাজ করেছেন, তারা আমার টিমওয়ার্ক সম্পর্কে জানেন।সহকর্মীদের প্রতি আমার ভালোবাসা সম্পর্কেও তারা অবগত।অভিভাবক হিসেবে আমি সব সময় সহকর্মীদের রক্ষা করি।তাই বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমি আপনাদের সবার কাছ থেকে ভালোবাসা এবং নির্দেশনা আশা করছি।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোটি টাকার বাড়ি,রিসোর্ট এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব ছবি কৃত্রিমভাবে বানানো দাবি করে মতিউর বলেছেন, ‘ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ভিত্তিক ছবি তৈরি করে অনেক ট্রল চলছে, যা আমাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক।এমন পরিস্থিতির জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত।’

সন্তানদের সম্পর্কে তিনি বলেন,আমার ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব এবং মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা খুবই ভালো।বিশেষ করে আমার ছেলে বিয়ের আগে কখনো কোনো মেয়ের সঙ্গে চোখের যোগাযোগ পর্যন্ত রাখেনি। স্ত্রী এবং সন্তানরা আপনাদের সবার সহায়তা চায়।এমন খারাপ সময়ে আমাকে বাঁচান।’

আরও খবর

Sponsered content