সারাদেশ

বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার হয়েছেন চবির সুমন-মৈত্রী দম্পতি

  প্রতিনিধি ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ , ২:৩৪:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) থেকে পড়াশোনা শেষ করে ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডারের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ পান সুমন কান্তি ঘোষ।এরপর আরও দুই বিসিএসে নন-ক্যাডার হলেও ক্যাডার আসেনি।একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তার স্ত্রী মৈত্রী সাহা ঘোষ। সমন ৪৩তম বিসিএসে শেষবারের মতো অংশ নিলেও প্রথম ছিল মৈত্রীর।দুজনই এই বিসিএসে একসঙ্গে হলেন ক্যাডার।

৪৩তম বিসিএসের ক্যাডার ও নন-ক্যাডারে চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে মোট দুই হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে এ ফল প্রকাশ করা হয়। এতে বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার হয়েছেন চবির সুমন-মৈত্রী দম্পতি।

মৈত্রীর বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকু্ন্ডের বাড়বকুণ্ড উপজেলায়।বাবা মানিক সাহা মেট লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির কর্মকর্তা ছিলেন।মা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।ছোট ভাই সামরিক বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।ছোট বোন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন

এলাকায় মায়ের বিদ্যালয়েই প্রাথমিক শিক্ষা নিয়েছেন মৈত্রী সাহা।চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।পরবর্তীতে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ২০১৪-১৫ সেশনে ভর্তি হন। এটা তার প্রথম বিসিএস ছিল।প্রথম বিসিএসেই তিনি সফলতা পেয়েছেন।

সুমন কান্তি ঘোষের বাড়ি চট্টগ্রামের মহেশখালীতে। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন মহেশখালী থেকে।পরবর্তীতে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ২০০৯-১০ সেশনে ভর্তি হন।তিনি ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।নবম গ্রেডে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে মাদারীপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে কমর্রত ছিলেন।পরে ৪০ ও ৪১তম বিসিএসেও নন-ক্যাডার হয়েছেন।

নিজের শেষ বিসিএসে স্ত্রীর সঙ্গে ক্যাডার হলেন সুমন। মৈত্রী সাহা বলছিলেন, ‘আমি এবং আমার স্বামী একই বিসিএস থেকে ক্যাডার হয়েছি,এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের।একসঙ্গে সবার কাছ থেকে শুভেচ্ছা পাচ্ছি, খুবই ভালো লাগছে।এটা আমার প্রথম বিসিএস ছিল।

তিনি বলেন, ‘প্রথম বিসিএসেই আমি ক্যাডার হতে পেরেছি ঈশ্বরের কৃপায়।আমি খুবই খুশি।যেকোনও ক্যাডার পাওয়া খুবই আনন্দের।শুধু আমার জন্য নয়, সবার জন্য এটা হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি যেহেতু আমার প্রথম বিসিএস ছিল,তাই আমি আরও বেশ কয়েকটি বিসিএস এ অংশগ্রহণ করতে পারব।কিন্তু আমি এখনো নিশ্চিত নই যে,পরবর্তীতে অন্য কোনও ক্যাডারে আমি যাব কিনা।কিন্তু শিক্ষকতায় আমি সফল হব বলে আশাবাদী।’

শিক্ষকতা পেশা পছন্দ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা জীবনে আমার কাজিনদের পড়িয়েছি।আমি পড়াতে পছন্দ করি।আমার শিক্ষার্থীরাও আমার পড়ানো বেশ পছন্দ করে।শিক্ষকতার আরেকটা বড় দিক হল,ব্যাংকে জব করলে সময় কাজে লাগাতে পারতাম না।শিক্ষক হওয়ায় সময় কাজে লাগানো যাবে।’

মৈত্রী শিক্ষা জাীবনে পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মীও ছিলেন।তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা অবস্থায় উত্তারায়ণ সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন।শিক্ষা ক্যাডার হওয়ায় যেহেতু সময় পাবেন,সে সময়ে তিনি সাংস্কৃতিক মেধাকে কাজে লাগাতে চান। এছাড়া তিনি পরমাণু শক্তি কমিশনের চট্টগ্রাম ইউনিট থেকে হালদা নদীর ওপর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার কাজ করেছেন।

তিনবার নন-ক্যাডার পাওয়ার পর শেষবার সহধর্মিণীসহ একসঙ্গে ক্যাডার হওয়া সৌভাগ্যের ব্যপার উল্লেখ করে সুমন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘পাঁচ বছরের পরিশ্রমের ফল এবং নিজের ওপর বিশ্বাসও ছিল।স্রষ্টা মনের ইচ্ছা পূরণ করেছেন।দুই পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা।

তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো ৩৮তম বিসিএস দিই। এরপর ৪০ ও ৪১তম বিসিএসে অংশ নিই।প্রতিবারই নন-ক্যাডার হই।এটা আমার শেষ বিসিএস ছিল।এতে নিজের সহধর্মিণীসহ ক্যাডার হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’

আরও খবর

Sponsered content