জাতীয়

বিদায়ী কমিশনার কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের স্থলাভিষিক্ত হলেন হাবীবুর রহমান

  প্রতিনিধি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১২:৩০:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।দীর্ঘ ৩২ বছর ৮ মাসের চাকরি জীবনের ইতি টেনে অবসরজনিত ছুটিতে যাচ্ছেন সদ্যবিদায়ী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।শনিবার ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে দায়িত্ব হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে শেষ হয় তার দীর্ঘ চাকরি জীবনের।

একই সময়ে ডিএমপির ৩৬তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান।তিনি বিদায়ী কমিশনার কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের স্থলাভিষিক্ত হলেন।

রীতি অনুযায়ী বিদায়ী ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুককে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ সদস্যরা ফুলের রশি দিয়ে গাড়ি টেনে বিদায় জানান।কমিশনারের বিদায়ের সময় ডিএমপির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

এর আগে বিদায়ী কমিশনারকে বিদায়ী সালাম প্রদান করে ডিএমপির সুসজ্জিত একটি দল।

গত বুধবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব সিরাজাম মুনিরা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে হাবিবুর রহমানকে ডিএমপির কমিশনার হিসেবে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

হাবিবুর রহমান ১৯৬৭ সালের ১ জানুযারি গোপালগঞ্জ জেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের আব্দুল আলী মোল্লা এবং মোসাম্মৎ রাবেয়া বেগম দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।এসএম মডেল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করে গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি ১৭তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তার প্রচেষ্টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’।মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযোদ্ধা হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ স্বীকৃতি পায় তার অনন্য উদ্যোগের মাধ্যমে।

অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পুলিশ সদরদপ্তরে কাজ করার পর ডিআইজি হিসেবে ঢাকা রেঞ্জে যোগ দেন হাবিবুর রহমান।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে করোনাকালীন সমাজের নিম্নস্তর ও পিছিয়ে থাকা মানুষদের সহায়তা,পুলিশ নিয়োগ ও পদায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা, জনগণকে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত করা,মনিটরিং সেল স্থাপনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ঢাকা রেঞ্জ পুলিশকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যান,যা অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের জন্য অনুকরণীয় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

তিন বছর ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে তিনি অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

হাবিবুর রহমানের গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘ঠার’ পাঠক সমাজে আলোচিত।এই বইয়ে তিনি বেদে সম্প্রদায়ের বিলুপ্তপ্রায় ভাষা নিয়ে কাজ করেছেন।গ্রন্থটির জন্য হাবিবুর রহমান ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০২৩’ লাভ করেন।

হাবিবুর রহমানের হাত ধরে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে রাজধানীর অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘ওয়েসিস’-এ টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়।সেখানে বিনা মূল্যে ২৪ ঘণ্টা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা দেয়া হয়।তার আরেকটি মানবিক উদ্যোগ ‘পুলিশ ব্লাড ব্যাংক’ যা করোনা রোগীদের প্লাজমা এবং ডেঙ্গু রোগীদের প্লাটিলেট সরবরাহ করে কোডিড-১৯ ও ডেঙ্গু চিকিৎসায় প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে।

তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মাসিক প্রকাশনা ‘দি ডিটেকটিভ’ সম্পাদনা করছেন।সংস্কৃতিমনা হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশ নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা।তার গবেষণা ও দিকনির্দেশনায় মঞ্চায়িত হয়েছে জনপ্রিয় নাটক ‘অভিশপ্ত আগস্ট’ ও ‘অচলায়তনের অপ্সরী’।

আরও খবর

Sponsered content