অপরাধ-আইন-আদালত

বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা এক বছর বাড়াতে আবেদন করেছেন ৮০ আইনজীবী

  প্রতিনিধি ১০ মে ২০২৩ , ৩:১৬:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সুপ্রিম কোর্টের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা এক বছর বাড়াতে আবেদন করেছেন ৮০ আইনজীবী।রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি,জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কাছে এ আবেদন করা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়,গণকর্মচারী অবসর (সংশোধনী) আইন, ২০১৩-এর ৪(এ) ধারা অনুযায়ী সব বীর মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীর অবসরের বয়স সাধারণ গণকর্মচারী থেকে এক বছর বেশি।

রাষ্ট্র সব মুক্তিযোদ্ধাকে স্ব স্ব স্থানে ও কর্মক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদান করলেও বিচারপতিদের ক্ষেত্রে উক্ত সুবিধা নেই। তাদের ক্ষেত্রে একই মর্মে সুবিধার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করেন আবেদনকারী আইনজীবীরা।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধন, ২০১১)-এর ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী,সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়সসীমা বর্তমানে ৬৭ বছর।এ ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতির অবসরের সময় বাড়াতে আবেদন জানানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতিদের অবসরের সময়সীমা অন্য বিচারপতিদের থেকে এক বছর বাড়ানোর দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী,স্পিকার,প্রধান বিচারপতি, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কাছে আবেদনটি করা হয়। ৯ মে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের ৮০ জন আইনজীবী এ আবেদন করেন।

অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান,অ্যাডভোকেট মো.বাচ্চু মিয়া অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট রাজু হাওলাদার পলাশ,অ্যাডভোকেট বাহারুল আলম,অ্যাডভোকেট ফারজানা আক্তার ও অ্যাডভোকেটমো. শাহেদ সিদ্দিকীসহ ৮০ জন এ আবেদনটি করেন।

আবেদনে বলা হয়,বাঙালি জাতির ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। মক্তিযুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ১৯৭১ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের জনগণ নিজের জীবন বাজি ধরে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। দেশের যেসব সন্তান নিজের জীবনের মায়াকে তুচ্ছ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, জাতির সেসব সূর্য সন্তানকে বিভিন্নভাবে সম্মানিত করা হয়েছে।

গণকর্মচারী অবসর (সংশোধনী) আইন,২০১৩-এর ৪(এ) ধারা অনুযায়ী,সব মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীর অবসরের বয়স সাধারণ গণকর্মচারী থেকে এক বছর বেশি।অর্থাৎ রাষ্ট্র সব মুক্তিযোদ্ধাকে কর্মক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদান করলেও বিচারপতিদের ক্ষেত্রে এই সুবিধা নেই।তাই তাদের ক্ষেত্রে একই মর্মে সুবিধার ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমরা মনে করি। বাংলাদেশের সংবিধানের (পঞ্চদশ সংশোধন, ২০১১) ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী,সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়সসীমা বর্তমানে ৬৭ বছর।এ ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারকদের অবসরের বয়স এক বছর বেশি করার মাধ্যমে তাদেরও সম্মানিত করা যেতে পারে।

আবেদনে আরও বলা হয়,সামাজিক সাম্য নিশ্চিত করতে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা বিচারকদের অবসরের বয়স বর্তমানে প্রযোজ্য সব বিচারকের অবসরের বয়স থেকে এক বছর বেশি হওয়া বাঞ্ছনীয়।এ বয়সসীমা বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে এবং এ সম্মানটা জাতির কাছ থেকে তাদের প্রাপ্য।মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫২ বছর আগে।সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই এমন বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারক দেশ আর পাবে না।এটা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমাদের সামান্য কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ।

উল্লেখ্য,বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মাত্র একজন মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি (বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান) কর্মরত আছেন,যার মেয়াদ আর মাত্র কয়েক দিন আছে। এ অবস্থায়,মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতিকে যথোপযুক্ত সম্মানে ভূষিত করা রাষ্ট্রের ও জনগণের একান্ত দায়িত্ব।আমরা নতুন প্রজন্মের আইনজীবীরা বিচারাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান স্বীকৃতিস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতির চাকরির মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।

এ আবেদনে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধা বিচারকদের অবসরের বয়সসীমা এক বছর বৃদ্ধি করে তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের দাবি করা হয়।

আরও খবর

Sponsered content