সারাদেশ

বাবার দাফন শেষে ফেরার পথে ট্রেনে পুড়ে অঙ্গার মেয়ে

  প্রতিনিধি ৬ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:২১:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।এলিনা ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলায়।বাবার মৃত্যুতে ১০ দিন আগে পাঁচ মাসের ছেলে সৈয়দ আরফানকে নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন তিনি।

বাবার দাফন শেষে ভাই-ভাবির সঙ্গে সন্তানকে নিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ফিরছিলেন ঢাকায়।কিন্তু রাজধানীতে ঢুকতেই ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।নিয়তির নির্মম পরিহাস। সেই আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয় এলিনার দেহ।ভাগ্যক্রমে বেঁচে আছে তার পাঁচ মাসের শিশু সৈয়দ আরফান।

ঢাকায় মিরপুর ৬০ ফিটের তাদের বাসা।এলিনার স্বামী সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন ঢাকার বাসায়ই ছিলেন।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেসে নিহত চারজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আনা হলে তার স্বজনরা ভিড় করেন।তাদের দাবি,মর্গে আনা চার মরদেহের মধ্যে তার মরদেহ রয়েছে।

সাজ্জাদ হোসেনের বড় ভাই মুরাদ হোসেন জানান,এলিনা তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। ১০ দিন আগে এলিনার বাবা মারা গেছেন।ছেলেকে নিয়ে সে বাড়ি গিয়েছিল।বেনাপোল এক্সপ্রেসে এলিনার ভাই-ভাবি অর্থাৎ আরফানের মামা-মামিও ছিলেন।

মুরাদ আরও বলেন,আরফানের মামার মাধ্যমে ট্রেনে আগুন লাগার খবর পাই।আরফান এবং তার মামা-মামি ট্রেন থেকে বের হতে পারলেও এলিনাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।তারা ধারণা করছেন,ট্রেনের ভেতর পুড়ে মারা গেছে এলিনা।

ঢাকা রেলওয়ে থানার (কমলাপুর) উপ-পরিদর্শক সেতাফুর রহমান বলেন,মরদেহ চারটি পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে।দেখে এদের মধ্যে একজন পুরুষ,একজন শিশু এবং বড় চুল দেখে একজনকে নারী হিসেবে শনাক্ত করা গেছে।বাকি একজন পুরুষ না কি নারী তা দেখে বোঝার উপায় নেই।

তিনি আরও বলেন,রাতেই সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মরদেহ চারটি মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।শনিবার ময়নাতদন্ত হবে। ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হবে।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ১৫৪ যাত্রী নিয়ে দুপুর ১টায় বেনাপোল থেকে কমলাপুর স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে আসে বেনাপোল এক্সপ্রেস।যাত্রাপথে ১১টি স্টেশনে বিরতি নেয় ট্রেনটি।ট্রেনে সর্বশেষ কমলাপুরগামী যাত্রী ছিলেন ৪৯ জন। ট্রেনটির ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রাত ৯টায়।এর মধ্যে রাজধানীর গোপীবাগ পৌঁছলে আগুনের ঘটনা ঘটে।এতে ট্রেনের চারটি বগি পুড়ে গেছে।চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দগ্ধ হয়েছে অনেকে।তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত,এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর ভোরে ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনে এক নারী ও তার শিশু সন্তানসহ চারজন দগ্ধ হয়ে মারা যান।এ নিয়ে গত ২৮ অক্টোবরের পর ট্রেনে আগুনের ঘটনায় মোট আটজনের মৃত্যু হলো।

আরও খবর

Sponsered content