জাতীয়

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কর্মরত নেই-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক

  প্রতিনিধি ৪ জুলাই ২০২৩ , ৩:৫৮:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।জাতীয় সংসদে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন বর্তমানে সরকারি চাকরিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মরত নেই।মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধার সর্বশেষ জন্ম তারিখ ৩০ মে, ১৯৫৯।সে অনুযায়ী, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিধি মোতাবেক চাকরিকাল ছিল ৩০ মে, ২০১৯ পর্যন্ত।বর্তমানে কোনও বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি চাকরিতে বিধি অনুযায়ী কর্মরত নেই।’

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ঢাকা-১১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করে বলে জানান আ ক ম মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা বিতরণ আদেশ, ২০২০’-এর নির্দেশনা অনুসরণে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা পরিচালনা করা হয়ে থাকে।ওই আদেশে এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সমন্বিত তালিকাভুক্ত এমএএস ধারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান করা হয়। চাকরিরত বা চাকরিরত নয়—এমন সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবিতকাল পর্যন্ত এবং মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা, স্ত্রী ও সন্তানরা ভাতা প্রাপ্য হন।’

উন্নতমানের যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা:-

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে সংসদের কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন,দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকল্পে এবং ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ৮ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান রয়েছে। ভবিষ্যতে বিমান বাহিনীকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ফোর্সেস গোল ২০৩০-এর আলোকে আরও উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।’

তিনি বলেন,দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকল্পে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বর্তমানে দুটি সাবমেরিনসহ ছোট-বড় ৬৫টির বেশি যুদ্ধজাহাজ এবং দুটি হেলিকপ্টার ও চারটি মেরিটাইম এয়ারক্রাফট রয়েছে।’

আনিসুল হক বলেন,ভবিষ্যতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে বাজেট বরাদ্দের ওপর ভিত্তি করে পর্যায়ক্রমে ফ্রিগেট, করভেট, অফসোর পেট্রল ভেসেল (ওপিভি), মাইন কাউন্টার মেজার ভেজেল (এমসিএমভি),লার্জ পেট্রল ক্রাফট (এলপিসি), ওসান টাগ,হারবার টাগ,ওয়েল ট্যাংকার,লজিস্টিক ‍শিপ, ফ্লোটিং ক্রেন, হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে ভেসেল ও হোভার ক্রাফট সংযুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে।’

‘কৃষি উপকরণ কার্ড’ পেয়েছেন ২ কোটি ৬ লাখ কৃষক

জামালপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন,প্রণোদনা, পুনর্বাসন,আর্থিক সুবিধা ও কৃষিঋণ প্রাপ্তির জন্য কৃষকদের নিবন্ধন করে ‘কৃষি উপকরণ কার্ড’ প্রদান করা হয়। সারা দেশে এ কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা ২ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৯ জন।’

নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন,বোরো মৌসুমে সেচ বাবদ কৃষি খাতে ভর্তুকি (২০ শতাংশ রিবেট) প্রদান করা হয়।২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত বোরো মৌসুমে কৃষি খাতে সেচ বাবদ এক হাজার ১৩২ কোটি ৭০ লাখ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে।’

৩১ জরিপ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতি:-

সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন,জরিপ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে জিরো টলারেন্স নীতিতে তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত ও বিভাগীয় মামলা দিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।বর্তমানে ৫৮টি বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। বিভাগীয় মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৩১ জন জরিপ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’

জরিপের সব স্তরে ঢাকা জোনের ভূমি মালিকরা এসএমএস ও ইমেইল পেয়ে থাকেন,যা পর্যায়ক্রমে সব জোনে প্রয়োগ চলমান রয়েছে বলে জানান ভূমিমন্ত্রী।তিনি বলেন,শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনার আওতায় দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক সভা এবং সেমিনার আয়োজন করা হয়।তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সেবাগ্রহীতাদের সেবা প্রদান করা হয়।ডাক বিভাগের মাধ্যমে সেবাগ্রহীতার বাসায় ম্যাপ পৌঁছে দেওয়া হয়।জরিপ কার্যক্রম ডিজিটাইজ করার মাধ্যমে এ ব্যাপারে দুর্নীতি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নাজমা আকতারের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন,ভূমি সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধনীর জন্য গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।এ আইনটি সংশোধিত হলে সংশ্লিষ্ট মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।’

বর্তমানে সারা দেশে ডিজিটাল জরিপ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান ভূমিমন্ত্রী।এই জরিপ হলে মামলা মোকদ্দমার সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভূমিমন্ত্রী।

১০ বছরে বিশ্বের ১০ লাখ প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে:-

কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাবউদ্দিন বলেন,মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের কারণে পৃথিবীব্যাপী জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। জাতিসংঘের তথ্যমতে,প্রকৃতি ধ্বংসের বর্তমান ধারা চলতে থাকলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১০ লাখ প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে।’

তিনি বলেন,জলবায়ু পরিবর্তন এবং পৃথিবীব্যাপী দূষণ যেভাবে বাড়ছে,তা অব্যাহত থাকলে ২০৭০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রতি তিনটির মধ্যে একটি প্রজাতি বিলুপ্ত হতে পারে।গত ৫০ বছরে গড়ে ৬০ শতাংশের বেশি বন্যপ্রাণী কমে গেছে।সে হিসাবে গত ১০ মিলিয়ন বছরের তুলনায় বর্তমানে প্রজাতি বিলুপ্তির গড় হার ১০ থেকে ১০০ গুণ বেশি।পৃথিবীব্যাপী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভগুলো মনুষ্য কর্মকাণ্ডে অস্বাভাবিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।পৃথিবীর ৭৫ শতাংশ ভূ-ভাগে মানুষ ভূমির ব্যবহার পরিবর্তন করেছে।বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ সামুদ্রিক প্রতিবেশ আজ পরিবেশগত হুমকির সম্মুখীন।’

আরও খবর

Sponsered content