প্রতিনিধি ১৩ এপ্রিল ২০২৫ , ৬:২৭:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল ব্যুরো॥বরিশাল নগরীর কলেজ এভিনিউর আবাসিক ফ্ল্যাটে ব্যবসায়ী খুনের আলোচিত মামলার আসামি হাফিজা বেগম শান্তা (৩১) এবং তার বাবা শওকত হোসেন মোল্লাকে (৬৩) গ্রেফতার করেছে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ।তবে মামলার প্রধান আসামি লোকমান হোসেনসহ একাধিক আসামি পলাতক রয়েছে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, শান্তা এবং তার বাবাকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলছেন না।পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে একই সাথে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।বিচারক বাবা-মেয়েকে কারাগারে পাঠালেও রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেননি।
জানা গেছে,গত ৯ এপ্রিল রাতে শহরের কলেজ অ্যাভিনিউতে রোডের জিমি ভবনের দ্বিতীয় তলায় নতুন বাজার এলাকার চল্লিশোর্ধ্ব বেকারি ব্যবসায়ী মাদুসুর রহমানকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করেন কথিত প্রেমিকা মাদকাসক্ত শান্তাসহ তার দুই ভাই।খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাসুদকে উদ্ধার করাসহ শান্তা এবং তার দুই ভাইকে আটক করে।কিন্তু ভুক্তভোগী মাসুদ তখন কোনো অভিযোগ বা মামলা করতে রাজি না হওয়ায় পুলিশ তাদের মুচলেকায় মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।এর দু-দিন বাদে অর্থাৎ ১১ এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যার কিছু পরে শেবাচিমে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়।এই ঘটনায় শনিবার নিহত ব্যবসায়ীর ভাই মাহফুজুর রহমান অভিযোগ করলে সেটিকে এজাহারে রূপ দেয় পুলিশ।
এই খবর কোনো এক মাধ্যম নিশ্চিত হয়ে মাদকাসক্ত মেয়েকে নিয়ে ভূমিদস্যু শওকত মোল্লা স্থান বদল করার সিদ্ধান্ত নেন।কিন্তুর এর আগেই কোতয়ালি পুলিশ শের-ই বাংলা সড়কের পৈত্রিক বাসা থেকে মেয়েসহ তাকে গ্রেফতার করেছে।এই গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মামলাটিতে নামধারী ৯ জনসহ অজ্ঞাত আরও ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে,যাদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত শান্তা এবং তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয় রোবার দুপুরে।এখনও নামধারী সাতজন অভিযুক্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন,যাদের গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে।তবে গ্রেপ্তার মেয়ে এবং বাবা নিহত ব্যবসায়ীর সাথে হৃদয়ঘটিত সম্পর্ক থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।পরে বিকেলে তাদের দুজনকে আদালতে পাঠিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন দেয় পুলিশ।বিচারক মেয়ে এবং বাবাকে কারাগারে পাঠালেও রিমান্ড পরবর্তীতে করবেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আলোচিত এই মামলার বাদী নিহত মাসুদের ভাই মাহফুজুর রহমানের অভিযোগ,মাদকাসক্ত শান্তা জিমি ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি ফ্ল্যাট নিয়ে একা থাকতে এবং তার ভাইকে প্রায়শই সেখানে ডেকে নিতেন। তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে ছিল,যা পুঁজি করে ভাইয়ের অর্থ লুটেছেন অসৎ চরিত্রের নারী।সবশেষ ৯ এপ্রিল তার ভাই বেকারির পণ্য ক্রয়ের উদ্দেশে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে বের হলেও তাকে ফোন করে জিমি ভবনে ডেকে নেন শান্তা।সেখানে তাকে আটকে ভাই লোকমান হোসেন এবং কাওসার হোসেনসহ আরও ১৮/১৯ জনের সহযোগিতায় শান্তা মাসুদকে বিয়ে করতে চাপ দেন।এতে তিনি সম্মত না হওয়ায় টাকাগুলো ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত জখম করেন ২ নম্বর অভিযুক্ত লোকমান, যিনি শান্তার বড় ভাই।’

















