রাজনীতি

বরিশালে আওয়ামী লীগের সংগঠন মানে সাদিক আবদুল্লাহ

  প্রতিনিধি ২৪ জুন ২০২৩ , ৩:২৫:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বরিশালে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিতে বড় ধরনের ছন্দপতন হয় ১৫ এপ্রিল মেয়র পদে মনোনয়ন ঘোষণার পর।বিষয়টি জোর বাতাস পায় আবুল হানাসাত এবং সাদিক আবদুল্লাহ ছাড়াই অন্য নেতাদের নিয়ে বিশাল শোডাউন করে খোকন সেরিনয়াবত বরিশালে যাওয়ায়।

সেইদিন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়েছিলো।
এরপর আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বরিশালে গেছেন কয়েক দফা। থেকেছেন শেরালে।দলের বর্ধিতসভা করেছেন। কিন্তু তাতে যোগদেয়া থেকে বিরত ছিলেন ছোট ভাই খোকন সেরিনিয়াবাত।পরে অবশ্য দেখা করেছেন।এদিকে ছোট ভাই কি করেছে কি করেন নাই-সেইজন্য বসে থাকেননি বড় ভাই। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া বিধিবিধান মেনে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ নির্বাচনী মাঠে ছিলেন,ভোট চেয়েছেন ছোট ভাইর জন্য।

এদিকে সিটিং মেয়র সাদিক অবদুল্লাহ একটানা অন্তত ৮১ দিন বরিশাল থেকে দূরে ছিলেন।এর আগে দ্বিতীয় দফায় মনোনয়ন পাবার জন্য ঢাকায় যান তিনি।তখন তার বিরুদ্ধে নানান ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়েছে।নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসে ততই হাওয়া লাগে অপপ্রচারে পালে।এমনও প্রচারণা চালানো হয়,সাদিক গোপনে চাচার বিরুদ্ধে কাজ করছেন। এমনকি এ অপপ্রচারে কবল থেকে রক্ষা পাননি খোদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহও।এখানেই শেষ নয়।

এক কাউন্সিলরকে দিয়ে প্রকাশ্যে হাতপাখার প্রর্থীকে তিন কোটি দেবার গুজব বাজারে ছাড়া হয়।

কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে প্রমানিত হয়েছে, বিষয়টি ছিলো পুরো অপপ্রচার।এরপর নতুন অপপ্রচার শুরু হয়,সাদিক আর বরিশাল আসবেন না,আমেরিকা চলে যাবেন।কিন্তু সকল অপপ্রচারের পাল ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ২২ জুন বরিশালে সাদিকের উপস্থিত হওয়ায়।আর ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঘন্টাব্যাপী র‌্যালী এবং সমাবেশের মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে,বরিশালে আওয়ামী লীগের সংগঠন মানে সাদিক আবদুল্লাহ।এবং সবার উপর আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।বাকীসব ‘দুধভাত!’

উল্লেখ্য,বরিশাল আওয়ামী লীগকে আজকের অবস্থানে আনতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।স্মরণ করা যেতে পারে, মুক্তিযুদ্ধে ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক বিজয়ের এক সপ্তাহ আগে ৮ ডিসেম্বর বরিশাল হানাদারমুক্ত হয়।এবং এ ক্ষেত্রে ভারতে হিজরতকারীদের কোনই ভূমিকা ছিলো না।বরিশাল অঞ্চল হানাদার মুক্ত হয়েছে পুরোটা দেশের অভ্যন্তরের থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানে।এই হচ্ছে বরিশাল।কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর আবার দ্রুত স্বাধীনতা বিরোধী রাজনীতির কবলে চলে যায় এই বরিশাল।

শুধু তাই নয়,বরিশালে ১৫ আগস্ট কাকডাকা ভোরে বিশাল আনন্দমিছিল হয়েছে।

সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেবার পর ধীরলয়ে বাংলাদেশের দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে।আর কেন্দ্রের চেয়ে অধিকতর ধীরলয়ে বদল হতে থাকে বরিশালের রাজনীতির ধারা।আর এ ক্ষেত্রে নিরলশ অবদান রেখেছেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।তার দৃঢ়তায় এক পর্যায়ে ৭৫-এর থিংকট্যাংক আবুল হানসানাতের মৃত্যু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইলো।

কিন্তু গত মেয়র নির্বাচনে হাসানাত পুত্র সাদিক লাইমলাইটে চলে আসায় অন্যরক খেলা শুরু হয়।কিন্তু সেই খেলা পরাজিত হয়েছে।তবে এই চক্রটি হাল ছাড়েনি।এই চক্রটি আবার সক্রিয় ১২ জুনের বিসিসি নির্বাচনকে কেন্দ্রকরে।এবং সিটিং মেয়র সাদিক মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় বরিশাল কেন্দ্রিক ৭৫-এর থিংকট্যাংক এবং রাজনীতির কিছু আগাছা বগল বাজাতে শুরু করে।কিন্তু তারা তো জানে না, রাজনীতির কতোবড় খেলোয়ার দেশরত্ন শেখ হাসিনা।যা বরিশালের অতি সাধারণ মানুষটিও জানলো ২২ জুন। এবং বুঝলো,বরিশালে আওয়ামী রাজনীতি মানেই সেরনিয়াত সাদিক আবদুল্লহ।মাথার উপরে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। আর সবার উপরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

সূত্র বলছে,সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার আওতায়ই ভাতিজা সাদিকের বদলে ভাই খোকনকে মেয়র পদ জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বরিশাল নগরীর উন্নয়ন ও প্রশাসন ম্যানেজ করা ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন আবুল খায়ের ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত এবং বারিশালে আওয়ামী রাজনীতি পরিচালনা করবেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।ফলে সবমিলিয়ে বরিশালে থাকবে চাচা-ভাতিজার নিয়ন্ত্রণে।

এ ক্ষেত্রে নগর ভবনে থাকবেন আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ এবং রাজনীতির মাঠে কান্ডারী হিসেবে থাকবেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।আর মাথার উপর যথারীতি থাকবেন দক্ষিণ অঞ্চলের রাজনীতির আভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।

আরও খবর

Sponsered content