রাজনীতি

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানোর কারণ জানিয়েছেন-মাহফুজ আলম

  প্রতিনিধি ১৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৩:১৮:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মাহফুজ আলম এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা পোস্টে লিখেন,শেখ মুজিব ও তার কন্যা (আরেক শেখ) তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্য জনগণের তীব্র রাগ-ক্ষোভের মুখে পড়েছেন।তাদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য,শেখ মুজিব একসময় পূর্ব বাংলার গণমানুষের জনপ্রিয় নেতা ছিলেন,যে জনপ্রিয়তা হাসিনার ছিল না।জনগণ পাকিস্তানি নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তার (শেখ মুজিব) নেতৃত্ব অনুসরণ করেছিলেন,কিন্তু একাত্তরের পর তিনি নিজেই একজন জালিম হয়ে ওঠেন।মুজিববাদের প্রতি তার সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতায় একাত্তরের পর পঙ্গু ও বিভক্ত হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ।নিজের ফ্যাসিবাদী ভূমিকার কারণে ১৯৭৫-এ তার মৃত্যুতে মানুষ শোক-অনুতাপ প্রকাশ করেনি।

তিনি বলেন,শেখ তার একাত্তর-পূর্ব ভূমিকার জন্য সম্মান পাবেন,যদি শেখের একাত্তর-পরবর্তী গণহত্যা,জোরপূর্বক গুম, দুর্নীতি,দুর্ভিক্ষ ও নিশ্চিতভাবেই বাহাত্তরের সংবিধান,যা বাকশাল প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছিল—এসবের জন্য তার দল ও পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চান।শেখ-কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কথাও তাদের স্বীকার করা,ক্ষমা চাওয়া এবং এ জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়া উচিত (শেখ মুজিবকে একজন ঠাট্টা-বিদ্রূপ ও উপহাসের পাত্র বানিয়েছিলেন তিনি)।তাদের আরও উচিত,মুজিববাদী রাজনীতি ও শেখ পরিবারের বন্দনা পরিহার করা।

শেখ মুজিবের ছবি সরানো নিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, ‘কন্যার ফ্যাসিবাদী শাসনের কারণে শেখের ছবি সরানো হয়েছে (যদিও তা কর্মকর্তারা সরিয়েছেন); যে শাসন মেয়ে করেছেন ফ্যাসিবাদী বাবার নামে ও তার একাত্তর-পরবর্তী চেতনার কথা বলে।তার বাবাকে দেবতুল্য করা হয়েছিল,কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে তাদের দুজনের ছবি,ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলেছেন।কেউ যদি সরকারি অফিস থেকে শেখদের ছবি সরানোর কারণে আক্ষেপ প্রকাশ করেন,তবে তিনি এ গণঅভ্যুত্থান ও গণমানুষের চেতনারই নিন্দা জানালেন।’

পোস্টে তিনি আরও বলেন,আমাদের মনে রাখতে হবে, ইতিহাসকে মুছে ফেলা যায় না।আমরা এখানে এসেছি, ঐতিহাসিক অসংগতি ও অপব্যাখ্যাগুলো দূর করতে।মনে রাখতে হবে,একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের গণমানুষের।আবার,কোনো মুক্তিযোদ্ধাও যদি একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করে থাকেন,তার বিচার ও সাজা হওয়া উচিত।স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন বলেই তাদের (একাত্তরের পর কোনো অন্যায় করা মুক্তিযোদ্ধাদের) এ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া উচিত নয়।বাংলাদেশের উচিত,শাসক পরিবারগুলোকে দেবতুল্য করা ও সেই ক্ষমতাসীন পরিবারগুলোর সবকিছু নিজেদের বলে মনে করা—এ থেকে বেরিয়ে আসা। ’৪৭ ও ’৭১-এর পাশাপাশি জুলাইয়ের চেতনা আমাদের সবার স্মৃতিতে থাকুক অম্লান!’

আরও খবর

Sponsered content