প্রতিনিধি ২৩ মার্চ ২০২৫ , ১০:৩৬:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
রবিউল ইসলাম রবি॥বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ অনুযায়ী বরিশালে বিএনপির ১৯ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছিল।বহিষ্কৃত অনেকেই ফ্যাসিবাদী আ.লীগের রাজনীতিতে চাঙ্গা হয়ে উঠে।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে প্রকাশ্যে লীগের পক্ষে মিছিল মিটিং এ অংশ নিয়েছিল।
সম্পতি চৈতন্য স্কুলের সামনের মার্কেটের উপরে ইদ উল ফিতরের শুভেচ্ছার ব্যানার টানিয়ে নগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. জিয়াউল হক মাসুম সমালোচনার পাত্র হয়ে উঠেছেন।ব্যানারটিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান,দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবির নিচে জিয়াউল হক মাসুম নিজের পদ উল্লেখ করেছেন-বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ১৮ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল,জাতীয়তাবাদী দল ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সচিব ও ১৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর।
নগরীর বগুড়া রোড অপসো স্যালাইন মোড় এলাকায় যে কেউ গেলে স্ব চোখে দেখতে পারবেন।বিষয়টি নিয়ে নগর বিএনপির নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে,বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ অমান্য করে ২০২৩ সালের ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নগরীর ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে অংশগ্রহণ করেছিলেন মো. জিয়াউল হক মাসুম।দলকে কলঙ্কিত করে ফ্যাসিবাদী আ.লীগের ছত্রছায়ায় কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হওয়ার পরই স্বৈরাচারী হয়ে উঠেন।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে মাসুম প্রকাশ্যে লীগের পক্ষে মিছিল মিটিং সহ দলীয় প্রোগ্রামে অংশ নেয় মাসুম। ফ্যাসিবাদী দোসর হিসেবে হয়েছেন মামলার আসামি।আ.লীগ শাসনামলে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ছবি সহ বরিশাল-৫ আসনের এমপি কর্নেল জাহিদ ফারুক শামিম ও সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত এর ছবি সহ মাসুম নিজের ছবি দিয়ে ব্যানার বানিয়ে ওই সময়ে নগরবাসীকে ইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছিলেন।
যার ছবি ও ভিডিও মুঠোফোনের ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে একে অপরের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে।বহিষ্কৃত জিয়াউল হক মাসুম আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গির কবির নানকের আস্থাভাজন সহচর এবং শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই সাবেক বিসিসি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের বিশ্বস্ত নেতা ছিলেন।১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের সামনে মন্দিরের জমি দখল স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে স্থায়ী আয় করছেন।বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ফের বিএনপিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন জিয়াউল হক মাসুম।
নির্বাচনের পর ওই বছরই দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরিশালের ১৯ জন বিএনপি নেতাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিলেও অভিযুক্তদের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত করা হয়।
সেই চিঠিতে উল্লেখ থাকে-আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা খুন-গুমের শিকার পরিবারসহ গণতন্ত্রকামী জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।গণতন্ত্র উদ্ধারের ইতিহাসে তাদের নাম বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ও মীর জাফর হিসেবে উচ্চারিত হবে।
বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু মুঠোফোনে বলেন,বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক পদে মাসুম ছিল না।আগে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ সহ নগরীর ১৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ছিলেন।বর্তমানে তিনি দলের সকল পদ থেকে বহিষ্কৃত সেখানে তিনি কীভাবে পদ উল্লেখ ব্যানার দেয়া অন্যায়। বিষয়টি কেন্দ্রে অবগত করা হবে।
বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক বলেন,মাসুমকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল সে দলীয় প্রদানের ছবি ব্যবহার করে ব্যানার ব্যবহার করতে পারে না।।তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।তার বিরুদ্ধে তো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ নেই।কারণ,সে তো বিএনপির কেউ না।অবশ্যই আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো।সে কেন বিএনপি দলের পরিচয়ে ব্যানার দিছেছে।
জিয়াউল হক মাসুম মুঠোফোনে জানান,ব্যানারটিতে ছাপাখানার ভুলের জন্য ‘সাবেক সাধারণ সম্পাদক,বরিশাল মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল ও ‘সভাপতি ১৮ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল’ লেখা হয়েছে।বিএনপি দলকে আমি মনেপ্রাণে ভালোবাসি