আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের সংবিধান সংশোধনের পর ২ বিচারকের পদত্যাগ

  প্রতিনিধি ১৪ নভেম্বর ২০২৫ , ১:৪৭:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।পাকিস্তানে বহুল আলোচিত ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী পাস হওয়ার পর দেশটির সুপ্রিম কোর্টে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে।গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সিনিয়র বিচারপতি মনসুর আলী শাহ এবং বিচারপতি আথার মিনল্লাহ একযোগে তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারির কাছে জমা দেন।একাধিক বিশ্লেষকের মতে,এই পদত্যাগ পাকিস্তানের বিচার বিভাগের দীর্ঘ ইতিহাসে বিশেষ এক নতুন অধ্যায় তৈরি করেছে।

জাতীয় পরিষদে বুধবার এবং সিনেটে বৃহস্পতিবার দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে অনুমোদন পাওয়া সংশোধনী বিলটি উপস্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার। ৯৬ সদস্যের উচ্চকক্ষে ৬৪ ভোটে অনুমোদিত এই বিলের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের উপরে একটি নতুন ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত প্রতিষ্ঠার বিধান করা হয়—যা সমগ্র বিচার কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

১৩ পৃষ্ঠার পদত্যাগপত্রে বিচারপতি মনসুর আলী শাহ সংশোধনীটিকে সংবিধানের ওপর “গভীর আঘাত” হিসেবে চিহ্নিত করে লিখেছেন,এই পরিবর্তন সুপ্রিম কোর্টকে ভেঙে দিয়েছে এবং বিচার বিভাগকে নির্বাহী শাখার প্রভাবাধীন করে ফেলেছে।তার ভাষায়,এ ধরনের কাঠামোগত রদবদল দেশের সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে পিছিয়ে দেবে এবং বিচারপতির হিসেবে দায়িত্ব পালনকে “সাংবিধানিক অন্যায়ের প্রতি নীরব সমর্থনে” রূপ দেবে।

তিনি অভিযোগ করেন,সংশোধনীটি পাসের সময় কোনো ধরনের আলোচনা বা পরামর্শ হয়নি।বরং এটি এমনভাবে আনা হয়েছে যাতে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়।তিনি আরও উল্লেখ করেন,প্রধান বিচারপতি ইয়াহিয়া আফ্রিদি “বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বদলে নিজের অবস্থান রক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন”, যা বর্তমান সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।

বিচারপতি আথার মিনল্লাহ তার পদত্যাগপত্রে আরও কঠোর ভাষায় সংশোধনীটির সমালোচনা করে বলেন,এই পরিবর্তনের ফলে পাকিস্তানের সংবিধান কার্যত “অস্তিত্বহীন” হয়ে পড়েছে। তার দাবি,আদালতের কার্যক্ষমতা খর্ব হওয়া শুধু আইনি কাঠামোকেই দুর্বল করেনি, বরং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্যকেও নষ্ট করেছে।

এ দুই বিচারকের আকস্মিক পদত্যাগের পর পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও বিচারিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে—বিশেষ করে নির্বাহী শাখার প্রভাব,সাংবিধানিক স্থিতিশীলতা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে।বিশ্লেষকরা বলছেন,এই পরিস্থিতি দেশটির বিচারব্যবস্থার জন্য এক ঐতিহাসিক সংকট,যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রীয় কাঠামোতেও প্রতিফলিত হতে পারে।

সূত্র: জিও নিউজ

আরও খবর

Sponsered content