রাজনীতি

পবিত্র কাবাঘরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হারুনুর রশিদ ভাইরাল

  প্রতিনিধি ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৫:০৭:৪৪ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।সম্প্রতি পবিত্র কাবাঘরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচকভাবে ভাইরাল হয়েছেন এক যুবক।অবশেষে তার পরিচয় জানা গেছে। ওই যুবকের নাম হারুনুর রশিদ।তার বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ঠাকুরদিঘী এলাকায়।গত শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সুশান্ত দাস গুপ্তের ব্যক্তিগত পেজ থেকে আট সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।তবে ভিডিওটি কবের সেটি জানা যায়নি

স্থনীয়দের ধারণা, ‘জয় বাংলা’কে জাতীয় স্লোগান ঘোষণা করে।হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করার পর ঘটনাটি ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়া যুবকের নাম হারুনুর রশিদ।স্থানীয়ভাবে টোকাই হারুন নামেই বেশি পরিচিত এই যুবক।তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ঠাকুরদিঘী এলাকায়।হারুনের বাবার নাম আবদুস শুক্কুর।কাবা শরীফে তার ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়া নিয়ে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন,হারুনের বয়স প্রায় ৩৫ বছর।২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন জীবনে স্কুলে না যাওয়া হারুন। ঠাকুরদিঘী বাজার এলাকায় গঠন করেন কিশোর গ্যাং।বাগান দখল থেকে অবৈধ বালি ও মাটি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন তিনি।তার বাহিনী নিয়ে হামলা ও সংঘর্ষের জড়াতেন তিনি। ঠাকুরদিঘী,পদুয়া বাজার ও লোহাগাড়া উপজেলা এলাকার দোকানপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায় করতেন হারুন বাহিনী।

আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং ও মারামারিতে সক্রিয় ছিল হারুন বাহিনী।তার ভীতিকর ছুটোছুটিতে অতিষ্ঠ ছিলেন এলাকাবাসী।একপর্যায়ে তিনি সৌদি আরবে পাড়ি জমান।সেখানেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন তিনি। সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীসহ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সাথে ফেসবুকে তার একান্ত মুহূর্তের ছবি রয়েছে।

ইসলাম ধর্মমতে, হজ বা ওমরাহ পালনের সময় মুসলমানরা পবিত্র কাবা তাওয়াফ করেন।তাওয়াফ মানে হলো ঘড়ির কাটার বিপরীতমুখী হয়ে কাবা ঘরের চারপাশে সাত বার প্রদক্ষিণ করা। এ সময় হাজিরা নানা দোয়া পড়তে থাকলেও হারুনের ‘জয় বাংলা’ স্লোগান একেবারে অমূলক বলছেন অনেকে। কেউ কেউ এটিকে একেবারে বাড়াবাড়ি বলে অবিহিত করেছেন।

ফেসবুকে সুশান্ত দাস গুপ্তের পেজের নিচেও নানা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন নেটিজেনরা।মর্তুজা জাহিদ নামে একজন লিখেছেন, ‘নাউজুবিল্লাহ,এত আবেগি হওয়া একদমই ভালো না।’ মাসুম বিল্লাহ ভূইয়া নামে একজন লিখেছেন,আওয়ামী লীগ কত খারাপ এই ভিডিওটি তার জ্বলন্ত প্রমাণ।এরাই আওয়ামী লীগ-এর কাণ্ডারি।’

হজ বা ওমরাহ পালনের সময় প্রতিটি দলে একজন মুয়াল্লিম বা গাইড থাকেন যারা নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।

আবুল কালাম নামে এক মুয়াল্লিম বলেন, ওমরাহর সময় ইহরাম বাঁধার পর থেকে তালবিয়া অর্থাৎ ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বায়িকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্‌ক, লা শারিকা লাক’ পড়তে থাকেন।এর মানে হলো,আমি হাজির,হে আল্লাহ আমি হাজির, এই যে আমি।আর তোমার কোনো শরিক নেই,আমি হাজির। সব প্রশংসা ও কর্তৃত্ব শুধু তোমারই, আর তোমার কোনো শরিক নেই।কাবা শরীফে পৌঁছে তাওয়াফের সময় বেশি বেশি দোয়া পড়তে হয়।এমন সময়ে কেউ জয় বাংলা বলে থাকলে উচিত করেননি।

আরও খবর

Sponsered content