ইসলাম ও জীবন

নারীর উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি:-

  প্রতিনিধি ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫:০১:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

শায়খ আহমাদুল্লাহ।।মেয়েরা শরীয়ার সীমারেখার মধ্যে থেকে পড়াশোনা,ক্যারিয়ারের উন্নতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।

নারীর উচ্চশিক্ষা ও ক্যারিয়ার বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিতর্কের মুখে একজনের প্রশ্নের উ্ত্তরে তিনি একথা বলেন।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক পেইজে সরাসরি প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে একজনের প্রশ্নের উত্তরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।

উত্তর দিতে গিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন,মেয়েরা শরীয়ার সীমারেখার মধ্যে থেকে পড়াশোনা,ক্যারিয়ারে উন্নতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবেন,মহিলা সাহাবিরা অনেকে করেছেন।

তিনি বলেন,নারীদের যেন পুরুষের কাছে গিয়ে বিব্রতবোধ করতে না হয়,এজন্য কোনো নারী যদি শরীয়াহর সীমানার মধ্যে থেকে পড়াশোনা করেন,নিজেকে প্রস্তুত করেন এবং তিনি নারীদের সেবা দিতে চান তাহলে তা শুধু জায়েজ নয়, কোনো কোনো সময় সওয়াবেরও কাজ বলে বিবেচিত হবে নিয়তের ভিত্তিতে।

তিনি বলেন,যেমন ধরা যাক,কোনো নারী যদি গাইনি ডাক্তার হতে চান মেয়েদের চিকিৎসার জন্য।কারণ,পর্যাপ্ত পরিমাণে গাইনি ডাক্তার না থাকলে এ জাতীয় ক্ষেত্রে পুরুষদের মাধ্যমে সেবা নিতে হবে…

তাই এমন বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে মেয়েদের বাঁচাতে এবং যেন তাদের পর্দা,ব্যক্তিত্ব নষ্ট না হয়,অস্বস্তি বোধ করতে না হয়-এজন্য কোনো নারী নিজেকে প্রস্তুত করলে তা শুধু জায়েজ নয় সওয়াবের কারণ।অতএব মেয়েরা কোনো কাজ করতে পারবে না,বাহিরে যেতে পারবে না ব্যাপারটা এমন নয়।

এর পাশাপাশি শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন,তবে হ্যাঁ,ইসলামের মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মনে রাখতে হবে,আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘মেয়েরা তাদের বাসা বাড়িতে থেকে ভেতরের যে সাইটটা তার দেখাশোনা করেবেন’।

আর বাহিরে যখন যাওয়ার প্রয়োজন হয় তখন যাবেন,কিন্তু তাদের মূল দায়িত্ব হলো অভ্যন্তরীণ দিকটা সামলানো,আর পুরুষের দায়িত্ব হলো বাহিরের সাইটটা সামলানো।

তিনি বলেন,আমরা একশ্রেণীর মানুষকে দেখি,তারা মেয়েদেরকে মুক্ত করার নাম দিয়ে,ঘরে বাইরে সব জায়গায় কাজের বোঝা চাপিয়ে দেন।এর কারণে মেয়েদের ভেতরের দায়িত্ব,যেমন,রান্নাবান্না করতেই হয়,মা হিসেবে সন্তান প্রসব, গর্ভধারণ করতেই হয়,দুগ্ধ পান করাতেই হয়,এই পুরো কাজগুলো তাদের জীবনের একটা অংশজুড়ে করতে হয়, আবার বাইরেও তাদের ওপর কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন,একটু চিন্তুা করলে দেখবো,যারা এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করেছে,তারা দাম্পত্য জীবন,পারিবারিক জীবনের স্বাদ থেকে বঞ্চিত।ইউরোপ,আমেরিকা,পশ্চিমা বিভিন্ন উন্নত দেশের পারিবারিক শান্তি হারিয়ে গেছে।এর অন্যতম কারণ, আল্লাহ তায়ালা জীবনের যেই স্বাভাবিক ধারা রেখেছেন তার লঙ্ঘন।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন,মেয়েদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখা যেমন ইসলামের কথা নয়,ঠিক তেমনি নারীদের গঠন আকৃতির ওপর ভিত্তি করে আল্লাহ তায়ালা তাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন এর বাইরে গিয়ে পুরুষের সব কাজ তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার কথাও বলে না ইসলাম।

প্রশ্নের উত্তরের শেষ পর্যায়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আামদের দেশে মেয়েদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে,এখানে মেয়েরা ছেলেদের থেকে আলাদা পরিবেশে পড়াশোনা করছেন,এসব প্রতিষ্ঠানের সুনামও রয়েছে।তাই মেয়েরা যেনো পর্দা ও শরীয়তের সীমায় থেকে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে পারেন,দেশ,সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে পারেন এমন ব্যবস্থা রাখা উচিত। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বুঝার তাওফিক দান করুন’।