জাতীয়

ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার প্রোগ্রামে বেনজির আহমেদ’র ভর্তির যোগ্যতাই ছিল না!

  প্রতিনিধি ১৪ জুন ২০২৪ , ৫:৫৯:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি নেন।এরপর থেকে তিনি নামের আগে ডক্টর শব্দটি ব্যবহার করা শুরু করেন।যদিও ডক্টরেট ডিগ্রি নেওয়ার প্রোগ্রামে ভর্তির যোগ্যতাই তাঁর ছিল না।শর্ত শিথিল করে তাঁকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

বেনজীর আহমেদ ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) প্রোগ্রাম থেকে।

সেখানে ভর্তির জন্য স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হয়।শিক্ষাজীবনের সব পাবলিক পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। বেনজীরের তা ছিল না।

বেনজীরের ভর্তির ক্ষেত্রে মৌলিক শর্তগুলো শিথিল করা হয়েছিল ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের তৎকালীন ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সুপারিশে।তিনি ছিলেন বেনজীরের ‘ডক্টরেট’ প্রোগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক।২০২০ সালের মে মাসে তিনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান হন।এখনো সেই পদে রয়েছেন।আর ভর্তি ও ডিগ্রি পাওয়ার সময় বেনজীর ছিলেন র‍্যাবের মহাপরিচালক।ভর্তির শর্ত শিথিলের ক্ষেত্রে বেনজীরের পদ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল।

সাভানা রিসোর্টের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
বেনজীর আহমেদের সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গত মাসে অনুসন্ধান শুরু করে।ইতিমধ্যে তাঁর পরিবারের বিপুল জমি,ব্যবসা ও শেয়ার ব্যবসার তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি।এসব সম্পদ আদালতের আদেশে জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ মে বেনজীর সপরিবার দেশ ছাড়েন।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন,বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে এখন অনুসন্ধান হচ্ছে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ও অর্থ পাচার বিষয়ে।তবে তথ্য-উপাত্ত পেলে ডক্টরেট ডিগ্রির বিষয়টিও কমিশনের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আসতে পারে।কমিশন প্রতিবেদন গ্রহণ করলে তা এজাহারভুক্ত হবে।

ডিবিএর প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী বেনজীর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) আগে থেকে ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) প্রোগ্রাম চালু ছিল।ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ একই প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন পায় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে।

২০১৪ সালের ২৪ জুন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সভায় বেনজীরের ডিবিএ ডিগ্রির আবেদন গ্রহণ করা হয়।অনুষদটির ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধীনে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে তিনি ডিবিএ প্রোগ্রামে যোগদান করেন।তিনি ছিলেন ওই প্রোগ্রামের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী।তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়া নিয়ে ওই সময় র‍্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, বেনজীর প্রথম ব্যাচের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে ডিগ্রিটি অর্জন করেন।

বেনজীরের গবেষণার বিষয় ছিল ‘আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর অবদান’।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন,বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে এখন অনুসন্ধান হচ্ছে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ও অর্থ পাচার বিষয়ে।তবে তথ্য-উপাত্ত পেলে ডক্টরেট ডিগ্রির বিষয়টিও কমিশনের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে আসতে পারে।কমিশন প্রতিবেদন গ্রহণ করলে তা এজাহারভুক্ত হবে।

বেনজীর আহমেদের ডিবিএ ডিগ্রির আবেদন অনুযায়ী,১৯৭৮ সালে তিনি গোপালগঞ্জের এস এম মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়ে এখনকার এসএসসি সমমানের পরীক্ষায় পাস করেন।১৯৮০ সালে সরকারি জগন্নাথ কলেজ থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়ে এখনকার এইচএসসি সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

বেনজীরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া বিএ (পাস) ডিগ্রি আছে (১৯৮২)।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, তখন এই সনদ পেতেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা।নিয়মিত শিক্ষার্থীরা পেতেন স্নাতক ডিগ্রির সনদ। বেনজীর কোন কলেজে পড়েছেন,সেটা নথিপত্রে কোথাও উল্লেখ নেই।তবে তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান।

বিএ (পাস) সনদ অনুযায়ী,বেনজীর মোট ১ হাজার ১০০ নম্বরের মধ্যে ৫১৭ পেয়েছেন (৪৭ শতাংশ)। অর্থাৎ,তিনি ৫০ শতাংশ নম্বর পাননি।কিন্তু ডিবিএ প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন,তিনি ডিগ্রি বা সমমানের পরীক্ষায় মোট ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৩০১ নম্বর (৬০ শতাংশ) পেয়েছেন।তাঁর বিএ (পাস) সনদে সাল উল্লেখ করা হয় ১৯৮২।ডিবিএর আবেদনে সাল বলা হয়েছে ১৯৮৩।এই সালের সঙ্গে মিলিয়ে কোনো সনদ জমা দেননি তিনি।

বেনজীর কোন কলেজে পড়েছেন,সেটা নথিপত্রে কোথাও উল্লেখ নেই।তবে তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সনদ অনুযায়ী, বেনজীর ১৯৮৪ সালে ৫০০ নম্বরের মধ্যে ২২৯ পেয়ে (প্রায় ৪৬ শতাংশ) দ্বিতীয় শ্রেণি পেয়ে স্নাতকোত্তরে উত্তীর্ণ হন। অর্থাৎ তিনি ৫০ শতাংশ নম্বর পাননি।ভর্তির আবেদনে তিনি স্নাতকোত্তরে মোট নম্বর দেখিয়েছেন ৫০০-এর পরিবর্তে ৪০০। মানে হলো,পরীক্ষার মোট নম্বর কম দেখিয়ে তিনি ডক্টরেট প্রোগ্রামে ভর্তির শর্ত পূরণের চেষ্টা করেছিলেন।

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন,ঘটনাটি যে সময়ে ঘটেছে,তখন তিনি উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন না।তাই বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর জানা নেই।সাধারণভাবে শর্ত পূরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ডক্টরেট প্রোগ্রামে ন্যূনতম নম্বর এবং স্নাতক ডিগ্রি থাকার বাধ্যবাধকতাসহ কিছু মৌলিক শর্ত রয়েছে,যেগুলো শিথিলযোগ্য নয়।

ডিনস কমিটির ২০১৫ সালের ১৪ মে অনুষ্ঠিত সভার নথি বলছে,বেনজীরকে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার সুপারিশপত্রে বলা হয়েছিল,তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার ও র‍্যাবের মহাপরিচালক।সমাজের এ রকম একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিকে ডিবিএ প্রোগ্রামে বিশেষ বিবেচনায় হলেও ভর্তির অনুমতি দিলে দেশের কল্যাণে কাজে আসবে।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ৭ জুন বলেন,৪০ বছর আগে যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন,তাঁরা কম নম্বর পেতেন।তাঁরা এখন বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ পদে রয়েছেন। বেনজীরের ক্ষেত্রেও এমনই হয়েছে।তিনি বলেন,বেনজীরের নম্বর কম থাকার বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে গেছে। কাউন্সিলে তাঁকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন,ঘটনাটি যে সময়ে ঘটেছে,তখন তিনি উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন না।তাই বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর জানা নেই।সাধারণভাবে শর্ত পূরণের বিষয়ে তিনি বলেন,ডক্টরেট প্রোগ্রামে ন্যূনতম নম্বর এবং স্নাতক ডিগ্রি থাকার বাধ্যবাধকতাসহ কিছু মৌলিক শর্ত রয়েছে,যেগুলো শিথিলযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলসহ নীতিনির্ধারণী ফোরামগুলো কী করতে পারবে,তার নিয়মনীতি রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী,স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি না থাকলে কেউ প্রতিষ্ঠানটিতে পিএইচডি বা কোনো ‘ডক্টরেট’ প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারেন না।শিক্ষাজীবনে সব পরীক্ষায় ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে।নির্দিষ্ট কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির জন্য শর্ত শিথিলে ফোরামগুলোকে ব্যবহার করা অনৈতিক ও অনিয়ম।

২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে উচ্চশিক্ষাসংক্রান্ত অন্যতম ফোরাম বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের এক সভায় ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে বেনজীর আহমেদের ডিবিএ প্রোগ্রামে নিবন্ধনের অনুমতির সুপারিশ করা হয়।ওই সুপারিশে বলা হয়েছিল,২০১৩ সালের ৪ আগস্টের ডিনস কমিটির সভার সিদ্ধান্ত ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সমতা নিরূপণ করে অনুমতি দেওয়া হোক।

২০১৩ সালের ৪ আগস্টের ডিনস কমিটির ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল,ডিবিএ প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রার্থীদের শিক্ষাগত ও অন্যান্য যোগ্যতার বিষয়ে পিএইচডির বিদ্যমান নীতিমালা বা বিধি অনুসরণ করা হবে।শুধু প্রার্থীর দুটি প্রকাশনার বিধান বা শর্ত শিথিলযোগ্য।মানে হলো,স্নাতক ডিগ্রি না থাকা ও নম্বরের ঘাটতির শর্ত শিথিলযোগ্য নয়।

ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্র জানায়, একাডেমিক কাউন্সিলে ডক্টরেট ডিগ্রি অনুমোদন দেওয়ার পর নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) নম্বর পেতে গড়ে দুই মাসের মতো সময় লাগে।বেনজীরের ক্ষেত্রে এই সময় লেগেছে প্রায় ৯ মাস।শুরু থেকেই আবেদনটির অনুমোদন দিতে চাননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।অনুমোদনের দায়িত্ব ছিল প্রশাসনিক ভবনের শিক্ষা-১ শাখা।কিন্তু সেই শাখার কর্মকর্তারা আপত্তি জানানোয় তাঁদের পাশ কাটিয়ে শিক্ষা-৩ শাখা থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়।

২০১৫ সালের ২১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার (শিক্ষা-৩) তৎকালীন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদকে দেওয়া একটি চিঠির মাধ্যমে বেনজীরের ভর্তির অনুমোদনের কথা জানান। সেখানে বলা হয়,‘আপনার পত্রের বরাতে জানানো যাচ্ছে, র‍্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদকে নিয়ম শিথিল করে বিশেষ বিবেচনায় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ডিবিএ প্রোগ্রামে ভর্তির অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।’

ডিবিএ নিয়েই প্রশ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্র জানিয়েছে,সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির ডিবিএ প্রোগ্রাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।এই ডিগ্রিকে ডক্টরেট ডিগ্রি বলা যাবে কি না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন,বিষয়টি ডিনস কমিটিতে আলোচনার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।তিনি বলেন,আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট ডিগ্রির মান নিশ্চিতে ডিবিএ ডিগ্রি নিয়ে পুনরায় ভাবব।’

বেনজীর আহমেদের ডক্টরেট ডিগ্রির থিসিস বা অভিসন্দর্ভটি ৯২ পৃষ্ঠার।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে,অভিসন্দর্ভটি গ্রহণের ক্ষেত্রে ‘ডিফেন্স বোর্ডে’ আহ্বায়ক ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ও যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য।

বেনজীরের অভিসন্দর্ভ ও ডিবিএ প্রোগ্রামের বিষয়ে অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ‘প্রফেশনালদের (পেশাজীবী) জন্য শুরু হওয়া ডিবিএ প্রোগ্রামটি পিএইচডি বা অন্যান্য ডক্টরেট প্রোগ্রামের মতো নয়।মানের দিক থেকে এটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রির চেয়ে কিছুটা বেশি।এই প্রোগ্রাম সম্পন্ন করে নামের আগে ‘ডক্টর’ যোগ করা নৈতিক বিবেচনায় সঠিক নয় বলে মনে করেন তিনি।

অবশ্য ডিগ্রিটি পাওয়ার পর থেকে বেনজীর আহমেদ নামের আগে ডক্টর ব্যবহার করা শুরু করেন।পুলিশ ও র‍্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে তাঁর নামের আগে ডক্টর ব্যবহার করা হতো। বেনজীরের স্বীকৃত ফেসবুক পেজে সর্বশেষ ১৩ এপ্রিল নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি গ্রাফিক কার্ড দেওয়া হয়। সেখানেও নামের আগে ডক্টর রয়েছে।

‘সাধারণ মানের’ অভিসন্দর্ভ

ডিবিএ প্রোগ্রামে জমা দেওয়া বেনজীরের অভিসন্দর্ভটি পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের কাছে পাঠানো হয়েছিল।তাঁরা সেটি দেখেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুজন শিক্ষক বলেন,অভিসন্দর্ভ একেবারেই সাধারণ মানের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ ধরনের অভিসন্দর্ভের বিপরীতে ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া উচিত নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠগুলোর একটি।শত বছরের পুরোনো এই প্রতিষ্ঠান থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়া মর্যাদার বিষয়।তবে সাধারণ মানের ডক্টরেট প্রোগ্রাম খোলা এবং সেখান থেকে প্রভাবশালীদের ডিগ্রি দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন,প্রভাবশালী কারও জন্য এভাবে ডক্টরেট প্রোগ্রামের শর্ত শিথিল করা ঠিক হয়নি।শর্ত শিথিলের সুযোগই তো থাকার কথা নয়।তিনি বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ডিগ্রির বিষয়টি ডিনস কমিটিতে আবার যাচাই-বাছাই করতে পারে।

আরও খবর

Sponsered content