প্রতিনিধি ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৩:৪০:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির দেওয়া কোটিপতির হিসাবে গরমিল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে টিআইবির মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এই হিসাব দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নাই।”
প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে মঙ্গলবার টিআইবি জানায়,দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের ২৭ শতাংশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক।আর ১৮ জন প্রার্থী শত কোটি টাকার বেশি সম্পদের হিসাব দিয়েছেন তাদের হলফনামায়।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, হলফনামা অনুযায়ী বছরে কোটি টাকা আয় করেন, এমন প্রার্থীর সংখ্যা ১৬৪ জন।তবে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামায় প্রদর্শিত সম্পদ কোন উপায়ে অর্জিত,তা যাচাই করা হয় না।
‘আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে কোটিপতি প্রার্থী বেশি’ টিআইবির এমন তথ্যের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “গ্রামেও এক কাঠা জমির দাম ২০ লাখ টাকা,৫ কাঠা জমির দাম ১ কোটি টাকা।আর ঢাকা শহরে ১ কোটি টাকার নিচে কোথাও জমি নাই। চট্টগ্রাম শহরেও নাই।সুতরাং এই হিসাব দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নাই।তাদের এই হিসাব ধরে যদি কোটিপতি গোনা হয়,তাহলে সেই হিসাবে গরমিল আছে এবং সেটা উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে টিআইবির খুব বড় গলা ছিল,প্রচুর প্রেস কনফারেন্স করেছে, বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছে।পরে দেখা গেল যেপদ্মা সেতুতে দুর্নীতি তো হয়ই নাই,দুর্নীতি হওয়ার কোনো সুযোগও সৃষ্টি হয় নাই।কারণ টাকা ছাড়া দুর্নীতি হয় কিভাবে! তারা নানা সময়ে নানা গবেষণা করে,পরে দেখা যায় সেগুলো আসলে গবেষণা নয়,কতগুলো রিপোর্ট।”
সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর ‘জনগণ ও বিদেশিরা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে’ এমন মন্তব্যের বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, “সারাদেশে এখন নির্বাচনী উৎসাহ-উদ্দীপনা।আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে।নির্বাচন যদি প্রত্যাখ্যান করত ইউরোপীয় ইউনিয়ন,আমেরিকা অবজারভার পাঠাত না,ওআইসি,সার্কভুক্ত দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশ অবজারভার পাঠাত না।
“তাদের ভোটে আগ্রহ আছে এবং এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে বলেই তারা অবজারভার পাঠাচ্ছে।রুহুল কবির রিজভীসহ গুটিকয়েক নেতা হয়তো নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।তাদের কর্মী-সমর্থকরাও সবাই প্রত্যাখ্যান করে নাই,তাদের সমর্থকরা ভোট দিতে যাবে।”
মতবিনিময়ের শুরুতে হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগের ইশতেহার নিয়ে বলেন,“ইনশাআল্লাহ বরাবরের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেমন ইশতেহার বাস্তবায়ন করেছে,জনগণ যদি আমাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে, আমরা সরকার গঠন করতে পারি,এবারকার ইশতেহারও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হবে।”
সিনেমা হল নির্মাণের ঋণ তহবিল পর্যালোচনা
‘দেশে নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ও পুরনো হল সংস্কারে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ ঋণ তহবিলের ব্যবহার’ শীর্ষক এক পর্যালোচনা সভা এদিন অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রণালয়ে।
বুধবার বিকালে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন,মেট্রোপলিটন এলাকায় হল নির্মাণে ঋণের সুদ ৫ শতাংশ এবং অন্যত্র এই সুদের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।এতো স্বল্প সুদে আর কোনো বাণিজ্যিক ঋণ দেশে নেই।
মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হুমায়ুন কবীর জানান,এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন এই ঋণের জন্য আবেদন করেছেন।
সভায় চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, তফসিলি ব্যাংকগুলো সিনেমা হলের মাধ্যমে অর্থ আদায়ে সংশয় প্রকাশ করলেও বঙ্গবন্ধুর আমল থেকে এ পর্যন্ত সিনেমা হল নির্মাণে ২৪৮টি ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে এবং একটি ছাড়া সবগুলোই পরিশোধিত।পাশাপাশি সরকার সিনেমা হলগুলো থেকে এ যাবৎ ৮৯১ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (চলচ্চিত্র) মো. কাউসার আহম্মদ, সিনেমা হল উদ্যোক্তা চিত্রনায়িকা অঞ্জনা, চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সহসভাপতি আমির হামজা প্রমুখ সভায় অংশ নেন।

















