প্রতিনিধি ২৬ মে ২০২৩ , ৮:৩৬:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ
শৈলকূপা(ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি।।দেশের অন্যতম প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা ঝিনাইদহ। বিশেষ করে শৈলকূপা উপজেলা।এখানে দুই মাস আগে নতুন ভাতি পেঁয়াজ ওঠা শুরু হয়।সে পেঁয়াজ এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাওয়ার কথা নয়।কিন্তু মাসখানেক ধরে এখানেও পেঁয়াজের বাজার অস্থির। ১০ দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ৫০০-৬০০ টাকা বেড়েছে।বর্তমানে পাইকারি প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা দরে।

ইত্তেফাক অনুসন্ধানে জানা যায়,চাষিরা আরও দাম বৃদ্ধির আশায় পেঁয়াজ ধরে রেখেছে। কম করে বাজারে ছাড়ছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খোঁজখবর নিচ্ছে মিডিয়াকর্মীদের কাছ থেকে। ব্যবসায়ীদের ঘরেও পেঁয়াজ মজুত আছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়,এ বছর ঝিনাইদহ জেলায় পেঁয়াজ চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৭৫৪ হেক্টরে। পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫৮ মেট্রিক টন।এর মধ্যে শৈলকূপায় চাষ হয় ৮ হাজার ৭০০ হেক্টরে। পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার টন।মার্চ মাসে নতুন পেঁয়াজ উঠার পর প্রতি মণ সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ ৫০০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।তাহেরপুরি ও ফরিদপুরি জাতের পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি মণ ৭০০-৮০০ টাকা।চাষি যাতে পেঁয়াজের ভালো দাম পায়,এজন্য সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখে।সে সময় দাম না বেড়ে কমে যায়। এপ্রিলের শেষে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,অনেক চাষি উৎপাদিত পেঁয়াজের কিছু অংশ বিক্রি করেছে।আর কিছু অংশ ঘরে রেখেছে। অল্প অল্প করে বাজারে ছাড়ছে। শৈলকূপা উপজেলার বিজুলিয়া গ্রামের চাষি বাচ্চু মোল্লা জানান,এবার ছয় বিঘাতে পেঁয়াজ চাষ করেন। ফলন ভালো হয়নি।২০০ মণ পেঁয়াজ হয়েছিল।অর্ধেক বিক্রি করেছেন।এখন ঘরে ১০০ মণ পেঁয়াজ মজুত আছে।আবার নতুন পেঁয়াজ উঠতে ৯-১০ মাস দেরি। শেষ দেখে বিক্রি করবেন।
ব্রহ্মপুর গ্রামের চাষি গোলাম মোস্তফা জানান,তিন বিঘা জমিতে এবার পেঁয়াজ চাষ করেন।১৮০ মণ পেঁয়াজ পান। ১ হাজার ২৫০ টাকা মণ দরে প্রথম দিকে ১৫০ মণ বিক্রি করেন।৩০ মণ পেঁয়াজ ঘরে আছে।মনোহরপুর গ্রামে চাষি মো. নুরুজ্জামান পাপ্পু বলেন,এবার সাড়ে ১৩ বিঘায় পেঁয়াজ চাষ করেন।হাজার মণ পেঁয়াজ হয়।এ পর্যন্ত ৪০০ মণ বিক্রি করেছেন।বাকি পেঁয়াজ ঘরে আছে।তিনি বলেন,ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করলে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শৈলকুপার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, শনি ও মঙ্গলবার শৈলকুপাতে পেঁয়াজের হাট বসে।বর্তমানে হাটে পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে।মঙ্গলবার ২০-২২ ট্রাক পেঁয়াজ ওঠে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির কথা বলেন তিনি।
শৈলকূপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান বলেন,এখনো চাষিদের ঘরে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আছে।তারা আস্তে আস্তে বিক্রি করছেন।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের উপপরিচালক মো. আজগর আলি বলেন,শৈলকূপায় ব্যবসায়ীদের কাছে পেঁয়াজ মজুত আছে। আর চাষিদের ঘরেও পেঁয়াজ আছে।

















