প্রতিনিধি ১৯ আগস্ট ২০২৩ , ৪:২০:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে কয়েক দিন ধরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।জেলে আর ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বড় মাছের মোকাম আলীপুর মৎস্যবন্দর।গত বৃহস্পতিবার এই মৎস্য অবতরণকেন্দ্রেই ফরিদ মাঝির সঙ্গে দেখা।মাছভরা ট্রলার নিয়ে বন্দরে এসেছিলেন তিনি।মেপে দেখা গেছে,তাঁর জালে ধরা পড়া ইলিশের পরিমাণ ৯৬ মণ।৩৫ লাখ টাকায় সেই মাছ বিক্রি হয়েছে।

রামগতির সালাহউদ্দিন কোম্পানির ট্রলার ‘এফবি নূর-১’ নিয়ে গত বুধবার গভীর সাগরে যান ফরিদ মাঝি।সকাল সাতটায় জাল ফেলেন তাঁরা।বেলা তিনটায় জাল তোলার পর দেখেন,প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে।কথায় কথায় মাঝির কাছে জানতে চাই,কী দেখে বোঝেন কোথায় জাল ফেললে বেশি মাছ ধরা পড়বে? বলেন,সাগরে মাছ ধরা জাইল্যারা আমরা বেকগুনই সাগরের পানি দেখলেই বুঝি যাই,কোন জায়গায় মাছ পড়বে।বুঝেই আমরা জাল ফালাই।দেখা যায়,তখন মাছ ভালাই পড়ে।তবে এই হিসাব সব সময় আবার মিলেও না।’
সাগরে পানির রং একেক জায়গায় একেক রকম—কোথাও পানির রং কালো,কোথাও কোথাও ঘোলা,আবার কোথাও পানি টলটলে পরিষ্কার।এসব দেখেই মাছের ইঙ্গিত পান ফরিদ মাঝি।সাগরের যে অংশে ৯৬ মণ মাছ পেলেন,সেখানে জাল ফেলার আগে কী আভাস পেয়েছিলেন সেই গল্পও শোনালেন, ‘আমরা ১০-১২ ঘণ্টা ট্রলার চালাই সাগরের গভীরে চলি যাই।দেখি যে পানি ঘোলা।দেখেই বুঝি যাই হিয়ানে মাছ আছে।ইলিশের বড় একখান চাক দেখি।দেরি না করে, ট্রলারের জাইল্যাগুন লই ধীরে ধীরে ট্রলার ঘুরাই জাল ফেলি। হেরপর আমরা ট্রলারে বসি থাকি,কেউ কেউ ঘুম দেয়, রান্না-খাওয়াও চলে।’
জাল ফেলার পর কখনো ৭ ঘণ্টা,কখনো ৮ ঘণ্টা,বেশি হলে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তবে বেশি মাছ যে পড়ছে, তা জাল ফেলার পাঁচ ঘণ্টা পরই বোঝা যায়।জালের ফ্লুট (ভাসা) তখন নড়াচড়া করে।সেদিনও অনেক মাছ পড়েছে বুঝতে পেরে পাঁচ ঘণ্টা পর জাল তুলতে শুরু করেন ফরিদ মাঝি,জালে এত বেশি মাছ পড়ায় জাল তুলতে হাছ (পাঁচ) ঘণ্টা সময় লাগি যায়।আমরা এর আগে দি পাঁচবার জাল ফেলি।ছয়বারের সময় এই মাছ হাইছি।’
ফরিদ মাঝি তাঁর ট্রলারে গত বছর ১৬০ মন ইলিশ পেয়েছিলেন বলে জানালেন।সে সময় তাঁরা চট্টগ্রামের বড় একটি মাছের আড়তে ৭০ লাখ টাকায় এ মাছ বিক্রি করেছিলেন।

















