জাতীয়

জেলাভিত্তিক বেসরকারি এজেন্ট নিয়োগ দেবে-ভূমিমন্ত্রী, সাইফুজ্জামান চৌধুরী

  প্রতিনিধি ২ মার্চ ২০২৩ , ৫:৪০:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।ভূমি সেবা ডিজিটাল হওয়ার পর নাগরিকরা যাতে হয়রানিতে না পড়েন,সেজন্য জেলাভিত্তিক বেসরকারি এজেন্ট নিয়োগ দেবে ভূমি মন্ত্রণালয়।

এজন্য ‘প্রাইভেট এজেন্টশিপ’ নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

তিনি বলেন,আমাদের দেশের বাস্তবতায় ডিজিটাল সাক্ষরতা এখনও শতভাগ নয়।এজন্য সবার পক্ষে অনলাইনে ডিজিটাল সার্ভিস গ্রহণ সম্ভব নয়।সবদিক বিবেচনা করে,সবার কথা মাথায় রেখে আমরা ভূমি সেবা এজেন্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘ভূমি ব্যবস্থাপনায় সাম্প্রতিক উদ্যোগ ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন,ভূমি ভবনে একটি নাগরিক সেবাকেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করা হয়েছে।পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ে এই সেবা সম্প্রসারণ করা হবে।কল সেন্টার ছাড়াও এসব সেবা কেন্দ্রে নাগরিকরা সরাসরি গিয়ে ভূমি সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।”

সেসরকারি এই এজেন্টরা যেন আবার মানুষের হয়রানিতে ফেলতে না পারেন,সেজন্য তাদের নজরে রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

“প্রাইভেট এজেন্ট কার্যক্রম মনিটরের জন্য সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে এবং উপজেলা ও জেলাভিত্তিক নাগরিক কমিটি করার কথাও বিবেচনায় রয়েছে।”

দেশে ভূমিসেবায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মন্ত্রী পুরো পদ্ধতিই বদলে ফেলতে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।

‘সিস্টেম এমনভাবে উন্নয়ন করছি যেন দুর্নীতির সুযোগ না থাকে’মন্তব্য করে তিনি উন্নত দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “সিস্টেমের কারণে ওখানে অনেকের দুর্নীতি করার সুযোগ থাকে না।মাঠ পর্যায়ের ভূমি অফিসের কাজ নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।কোন উপজেলায়,কোন সার্কেলে কত দিনে ফাইল নিষ্পত্তি হচ্ছে -আমরা তা দেখছি এবং ফিডব্যাক নিচ্ছি।”

নিজের মন্ত্রণালয়ের কাজের গতিতে সন্তষ্ট সাইফুজ্জামান বলেন,আমি মনে ভূমি মন্ত্রণালয় অন্যতম ‘পারফরমিং মিনিস্ট্রি’।স্মার্ট মিনিস্ট্রির’ কথা মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি।মানুষ ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশনের সুফল পাওয়া শুরু করেছে।”

অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন,ভূমি ব্যবস্থাপনায় সংস্কার কার্যক্রম আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি হয়েছে।”

একে অনুপ্রেরণামূলক উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন,সামনের দিকে অগ্রসর হবার সময় আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যেন কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তার না করতে পারে।”

অনুষ্ঠানের ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান ভূমি ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়ে একটি সচিত্র বিবরণ উপস্থাপন করেন।তিনি জানান,দেশের ১ লাখ ৩৮ হাজার ম্যাপ ডিজিটাইজ করাসহ স্যাটেলাইট ইমেজ কেনা হচ্ছে।এই ম্যাপের ওপরে স্যাটেলাইট ইমেজ বসিয়ে প্লট-ভিত্তিক জমির শ্রেণির একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি হচ্ছে।

“প্রায় ১০ হাজার ডিজিটাল মৌজা ম্যাপ ই-নামজারি সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে।নামজারির সাথে-সাথে এই ডিজিটাল ম্যাপ ও খতিয়ান স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশোধিত হতে থাকবে।ভূমি সেবা অ্যাপ থেকে নাগরিকগণ তাদের জমির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ,অবস্থান ও পরিমাপ তাৎক্ষণিকভাবে পেয়ে যাবেন।”

ভূমি সচিব জানান,অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ,ই-নামজারি,খতিয়ান ও ম্যাপসহ অন্যান্য সেবা দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৮ মাসে ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেম থেকে সরকারি কোষাগারে ৫৫০ কোটি টাকার বেশি জমা হয়েছে।

অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর চালু হওয়ার পর গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত শুধু অনলাইনে রাজস্ব সংগ্রহের হার প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা বলেও জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content