রাজনীতি

জাহিদ ফারুক শামিমের মনোনয়ন বাতিল চেয়ে সাদিকের আপিল

  প্রতিনিধি ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ , ২:৩১:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

বরিশাল প্রতিনিধি।।বরিশাল-৫ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিমের মনোনয়ন বাতিল চেয়ে আপিল করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। শনিবার কমিশনের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে ওই আপিল করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য সাবেক বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। আপিলে জাহিদ ফারুক ও তার স্ত্রী-সন্তান আমেরিকার নাগরিক এবং সেখানে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।হলফনামায় আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী-সন্তানের সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগও করেছেন সাদিক আব্দুল্লাহ। তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন জাহিদ অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতারা।নির্বাচনি মাঠে বিনা ভোটে জেতার জন্য এসব অহেতুক ষড়যন্ত্র বলে দাবি তাদের।

জাহিদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে সাদিকের মনোনয়ন দাখিলের পর থেকেই মূলত জমে ওঠে বরিশালের নির্বাচন। সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে এসে দাঁড়ায় ভোটের মাঠে দুজনের সমর্থন যাচাইয়ের বিষয়টি।বহু বছর পর সবাই যখন এভাবে একটি ভোটযুদ্ধের অপেক্ষায় ঠিক তখনই একে অপরকে ভোটের মাঠ থেকে সরানোর লড়াইয়ে নামেন জাহিদ ও সাদিক।এক্ষেত্রে প্রথম মাঠে নামেন জাহিদ ফারুক।যাচাই-বাছাইয়ের দিন সাদিক আব্দুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন তার অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফজালুল করিম। আমেরিকায় সাদিক আব্দুল্লাহর স্ত্রীর নামে থাকা সম্পদের তথ্য হলফনামায় নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি। যদিও লিখিতভাবে না দেওয়ায় তা আমলে না নিয়ে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তা।এরপর দ্বিতীয় দফায় সাদিকের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ।সাদিক আমেরিকার নাগরিক এবং দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন উল্লেখ করে বাতিল চাওয়া হয় তার মনোনয়ন।একই আপিলে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগও আনা হয়।ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি বরিশালেও সাদিকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে আপিল করেন জাহিদের মনোনয়নপত্রের সমর্থক কেবিএস আহম্মেদ কবির।

জাহিদ ফারুকের করা এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ নিয়ে শনিবার কমিশনে হাজির হন বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহ।এবার তিনিও দ্বৈত নাগরিকত্বসহ একগাদা অভিযোগ করেন জাহিদের বিরুদ্ধে।সাদিকের পক্ষে অভিযোগ দাখিল করা আইনজীবী ব্যারিস্টার ইফতাবুল কামাল অয়ন বলেন, কী কী কারণে তার মনোনয়ন বাতিল হবে তা স্পষ্ট করেই উল্লেখ করেছি আমরা।সবচেয়ে বড় অভিযোগ স্ত্রীর নামে বাংলাদেশ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার করেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী।ঢাকায় এনআরবিসি ব্যাংকের গুলশান শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে জাহিদ ফারুক আমেরিকার ব্যাংকে থাকা স্ত্রী লায়লা শামিম আরার অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন।তার বিরুদ্ধে থাকা প্রতারণা মামলার তথ্যও তিনি গোপন করেছেন হলফনামায়।এখন কমিশন আমাদের অভিযোগ যাচাই করে সিদ্ধান্ত দেবে।

সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিসিসি কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন,হলফনামায় স্ত্রী লায়লাকে গৃহিণী উল্লেখ করেছেন জাহিদ ফারুক।একজন গৃহিণী কী করে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ার মতো জায়গায় বাড়ি কিনলেন এটা এখন সবার প্রশ্ন।হলফনামায় নির্ভরশীলদের আয় প্রশ্নে কিছু না লেখায় প্রমাণ হয়,তার সন্তানরা কেউ আয় করেন না।অথচ আমেরিকার হোম ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী,তার ছেলেরও সেখানে সম্পদ রয়েছে।এসব বিষয় অনুসন্ধান করে দেখুক নির্বাচন কমিশন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে প্রতিমন্ত্রী জাহিদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।উত্তর দেননি মোবাইল ফোনে পাঠানো খুদেবার্তার।তার অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আফজালুল করিম বলেন,আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি।তারাও আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিল।অভিযোগ যাচাই করে সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশন।দ্বৈত নাগরিকত্ব ও আমেরিকায় থাকা সম্পদের তথ্য গোপন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,দ্বৈত নাগরিক হলে তো একাদশ জাতীয় নির্বাচনেই তার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যেত।তখন হয়নি,সেক্ষেত্রে ধরে নেওয়া যায় এ অভিযোগ সত্য নয়।তাছাড়া অন্য যা বলা হচ্ছে তা সত্য নাকি মিথ্যা সেটা যাচাই-বাছাই করে দেখুক নির্বাচন কমিশন।আমরা ইসির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।

আরও খবর

Sponsered content