প্রতিনিধি ১৫ অক্টোবর ২০২৪ , ১০:১৩:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল ব্যুরো।।বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ৭০ বছরের পুরোনো দেবেন্দ্র ভবন ছাত্রী নিবাসের ২৫ শতক জমি দখলের চেষ্টা চলছে।শুক্রবার দুপুরে হাবিবুর রহমান নামের এক ব্যক্তি দলবলসহ এসে ডিক্রি সূত্রে মালিকানা দাবির সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।ওই জমিতে প্রহরীর দায়িত্বে সপরিবারে বাস করেন কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রেজাউল করিম। তাঁকে দু’দিনের মধ্যে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাবিবুর। দখলের জন্য পূজার ছুটিকে বেছে নিয়েছেন তিনি।এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা কলেজ খোলার পরই দখলদারদের প্রতিহত করবেন বলে জানিয়েছেন।ওই জমির মূল্য কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা।

কলেজটির মূল ক্যাম্পাসের বাইরে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে মধু মিয়ার পুল সড়কে দেবেন্দ্র ভবন ছাত্রী নিবাস অবস্থিত।ভবন পরিত্যক্ত হওয়ায় ২০১৬ সালে ছাত্রী নিবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।পরে ভবনটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে।হাবিবুরের পরিবারের সঙ্গে মালিকানা নিয়ে বিএম কলেজ কর্তৃপক্ষের ৭০ বছর ধরে মামলা চলছে।এর আগে বিভিন্ন সময় হাবিবুর দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।এবার রাজনৈতিক পরিবর্তনের সুযোগে নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে মালিকানার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে,ছাত্রী নিবাসের জরাজীর্ণ সাইনবোর্ডের ওপরে আরেকটি সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে- বরিশাল প্রথম সাব-জজ আদালতের দেওয়ানি মোকদ্দমার ডিক্রি সূত্রে মালিক।
কলেজের প্রহরী হিসেবে ঝুপরি ঘর তুলে ২৫ বছর ধরে ওই জমিতে সপরিবারে বাস করছেন কর্মচারী রেজাউল।তাঁর ছেলে সোহেল বলেন,শুক্রবার স্থানীয় হাবিব,রাব্বিসহ তাদের দলবল সাইনবোর্ড টানায়। সারাদিন তারা মাপজোখ করেছে। দু’দিনের মধ্যে ঘর ছেড়ে দিতে বলেছে। না গেলে ঘর ভেঙে ফেলবে।
কলেজের প্রধান সহকারী হামিদুর রহমান বলেন,সাইনবোর্ড লাগানোর খবর পেয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।এ সময় হাবিব ও রাব্বি তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।তিনি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
বিএম কলেজের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আকতার উদ্দিন জানান,ছাত্রী নিবাসের ওই সম্পত্তি নিয়ে বহু বছর ধরে মামলা চলছে।এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ আইনি পদক্ষেপ নেবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,হাবিব উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা দাবি করছেন।হাবিব আগে স্থানীয় ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা (বর্তমানে আত্মগোপনে) জিয়াউর রহমান বিপ্লবের সঙ্গে
থাকতেন। ৫ আগস্টের পর তিনি নিজেকে বিএনপি কর্মী দাবি করেছেন। ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান মাহফুজ বলেন,হাবিব মূলত ভূমিদস্যু।আগে স্থানীয় কাউন্সিলর বিপ্লবের ক্যাডার ছিলেন।
হাবিব বলেন,ওই জমির মালিক বিএম কলেজ কর্তৃপক্ষই ছিল।কলেজের কাছ থেকে প্রথমে ইজারা,পরে দলিল সূত্রে ১৯২৩ সালে মালিক হন জনৈক ভূপেন্দ্র নাথ।এর পর কয়েক হাত বদল হয়ে ১৯৫৬ সালে মধুসূদনের কাছ থেকে ক্রয় করেন তাঁর বাবা আবদুস সোবাহান।এখন ওয়ারিশ সূত্রে তারা মালিক।বিএম কলেজ কর্তৃপক্ষ জমির অবৈধ দখলদার।
এ ব্যাপারে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম বলেন, তারা আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন।ছাত্রী নিবাসটি অনেক বছর ধরে পরিত্যক্ত। জমির মালিকানা নিয়ে মামলা চলছে।

















