সারাদেশ

চরভদ্রাসনে ভালো নেই বাঁশ-বেতের কারিগরর, হারিয়ে যাচ্ছে শিল্প

  প্রতিনিধি ৭ অক্টোবর ২০২৩ , ২:৪৪:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি।।বাঁশ আর বেতকেই জীবিকার প্রধান বাহক হিসাবে আঁকড়ে রেখেছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার ১ টি পরিবার।কিন্তু দিন দিন বাঁশ-বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভালো নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত উপজেলার কারিগর।

বর্তমান প্রযুক্তির যুগে উপজেলায় বাঁশ ও বেত শিল্পের তৈরি মনকারা বিভিন্ন জিনিসের জায়গা করে নিয়েছে স্বল্প দামের প্লাস্টিক ও লোহার তৈরি পণ্য।তাই বাঁশ-বেতের পণ্য এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে।গ্রামগঞ্জেও ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় আকর্ষণীয় আসবাবপত্রের কদর কমে যাচ্ছে।অভাবের তাড়নায় এই শিল্পের কারিগররা দীর্ঘদিনের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশার দিকে ছুটছে।

তবে শত অভাব অনটনের মাঝেও উপজেলায় ১টি পরিবার আজও পৈতৃক এই পেশাটি ধরে রেখেছেন।চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের দবির খার ডাংগীর ১ টি পরিবার এই শিল্পটি ধরে রেখেছেন।একদিকে বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি,অন্যদিকে তাদের তৈরি পণ্যের কদর কমে যাওয়ায় জীবন সংসারে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।অপ্রতুল ব্যবহার আর বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় শিল্পটি আজ হুমকির মুখে।বাঁশ ও বেত থেকে তৈরি সামগ্রী বাচ্চাদের দোলনা, র‌্যাগ,পাখা,ঝাড়ু,টোপা,ডালী,বেড়া,খলিশানসহ বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র বিস্তার ছিল।এক সময় যে বাঁশ ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যেত সেই বাঁশ বর্তমান বাজারে কিনতে হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়।সেই তুলনায় বাড়েনি এসব পণ্যের দাম।

সেই পরিবারের ১ জন মান্নান বলেন চরভদ্রাসনে আমরা ১টি পরিবার আজও এ কাজে নিয়োজিত আছি। একটি বাঁশ থেকে ৩-৪ টি ডালি তৈরি হয়।বাজারে একটি ডালির মূল্য পাওয়া যায় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।সকল খরচ বাদ দিয়ে প্রতিটি পণ্য থেকে সামান্য কিছু টাকা লাভ হয়।তবে আগের মতো আর লাভ হয় না।সীমিত লাভ দিয়েই পরিবার চালানো অতি কষ্টের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।তারা আরও বলেন,খেয়ে-না খেয়ে অতিকষ্টে ধার দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে কোনরকম বাপ-দাদার এই পেশাকে আঁকড়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি।সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিলে পরিবার নিয়ে আরোও ভালো মানের পণ্য তৈরি করতে পারবো।এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হব।নিজেদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার পাশাপাশি হারিয়ে যাওয়া এই শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হব।

সবমিলিয়ে বাঁশ-বেতের জিনিপত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় একদিকে যেমন সংকটে পড়েছেন কারিগর অপরদিকে মানুষ হারাতে বসেছে প্রাচীন ঐতিহ্য।এভাবে প্রাচীন ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে গেলে আগামী প্রজন্ম এগুলোর সম্পর্কে জানতে পারবে না।তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে বাঁশ-বেতের উৎপাদন বাড়িয়ে প্রাচীন ঐতিহ্যগুলো টিকিয়ে রাখা হোক এমনটাই দাবি সচেতন মহলের।

আরও খবর

Sponsered content