অর্থনীতি

চট্টগ্রামে ৬১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়

  প্রতিনিধি ৪ জুলাই ২০২৩ , ৩:৪৪:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।ডলার সংকটের মুখে সরকারের নানা বিধিনিষেধের কারণে লক্ষ্যমাত্রার ৭৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে পারেনি চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ।তবে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলেও এ ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড গড়েছে সংস্থাটি।বিগত অর্থবছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি প্রবৃদ্ধি হিসেবে আদায় হয়েছে ৬১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জন দূরে থাক,গেল অর্থবছরের শুরুতে নানা বিধিনিষেধের কারণে রাজস্ব আদায় নিয়েই শঙ্কায় পড়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। বিশেষ করে সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত (২০২২-’২৩ অর্থবছরের পাঁচ মাস) রাজস্ব আদায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে।

তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আবারও সচল হতে শুরু করে রাজস্ব আদায়ের চাকা।শেষ পর্যন্ত অর্থবছর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা,যা আগের বছরের চেয়ে আড়াই হাজার কোটি টাকা বেশি। ২০২১-’২২ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৫৯ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপ-কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সি বলেন,আমদানি বাড়ার কারণে রাজস্ব আহরণ বেশি হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে,৬০ হাজার কোটি টাকার অধিক রাজস্ব আদায়ের যে মাইলফলক, সেটি এ অর্থবছরেই অর্জিত হয়েছে।

তবে রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড অর্জনের ক্ষেত্রে মোড় ঘুরিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর।বিশেষ করে,অর্থনৈতিক সংকটের মুহূর্তেও চট্টগ্রাম বন্দর যেমন পুরোদমে সচল ছিল,তেমনি পণ্য ওঠানামা কিংবা ডেলিভারিতে’ও দক্ষতা দেখিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০২২-’২৩ অর্থবছরে এ বন্দর ১১ কোটি ৮২ লাখ ৯৭ হাজার টন কার্গো হ্যান্ডলিং এবং ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৪৪ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে।এ সময় এ বন্দরে জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ২৫৩টি।

কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে এর প্রভাব পড়েছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, ‘আমাদের যে সক্ষমতা রয়েছে,আমরা তারও ‍ওপরে গিয়ে পণ্য হ্যান্ডলিং করেছি। আর সেই কারণে রাজস্ব অনেক বেড়েছে।কাজেই রাজস্ব বাড়ার সঙ্গে সরাসরি বন্দরের কর্মক্ষমতা জড়িত।’

কাস্টম হাউজের তথ্য অনুযায়ী,ডিজেল আমদানির মাধ্যমেই সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। এর পরেই রয়েছে ফার্নেস অয়েল।এ পণ্যটি আমদানি থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা এবং সিমেন্ট ক্লিংকার থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা।

ফলে ডলার সংকট কাটতে থাকায় আমদানি-রফতানি যেমন বাড়ছে,তেমনি রাজস্ব আদায়ের হারও বাড়ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।এ নিয়ে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, ‘এ ধারা যদি চলমান থাকে,এতে আমাদের অর্থনীতি যেমন গতি পাবে,তেমনি আরও চাঙ্গা হবে।ফলে আমাদের শিপিংয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বমন্দায় ডলার সংকটে পড়ে বাংলাদেশ।যে কারণে অর্থ বছরের আগস্ট থেকে গাড়িসহ সব ধরনের বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।তবে বছরের শেষ প্রান্তে এসে মাত্র দুমাসে ৮ হাজারের বেশি গাড়ি আমদানি হয়েছে।এদিকে,গত ২০ দিনে মোংলা বন্দরে ২ হাজার ১৫০টি গাড়ি খালাস হয়েছে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে হাতেগোনা দু-এক দিন ছাড়া সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার কোনো নজির নেই।এর প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতেও। নানা জটিলতার সত্ত্বেও এ বন্দরের কারণে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।

আরও খবর

Sponsered content