অপরাধ-আইন-আদালত

গ্রাহকের ৪৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও-ব্যাংকের পিয়ন রঞ্জু গ্রেফতার

  প্রতিনিধি ১১ জুলাই ২০২৩ , ২:৪৯:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি।।অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের ৪৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হওয়া একটি ব্যাংকের পিয়ন আওলাদ হোসেন রঞ্জুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (১০ জুলাই) গোপালগঞ্জ সদর থানার সহযোগিতায় শাহজাদপুর থানা পুলিশ গোপালগঞ্জ জেলা সদরের পূর্ব মিয়াপাড়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।

রঞ্জু শাহজাদপুরের পারকোলা এলাকার মৃত নুরুল হকের ছেলে। তিনি জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর শাখার পিয়ন।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম মৃধা।

তিনি বলেন,গত ৬ জুলাই জনতা ব্যাংক,শাহজাদপুর শাখার গ্রাহক আবু হানিফ তার টাকা তুলতে এসে চেক জমা দিয়ে জানতে পারেন যে তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই।

তিনি তখন ব্যাংক কর্মকর্তাদের বলেন, তিনি গত ২ মে পিয়ন আওলাদ হোসেন রঞ্জুর মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা জমা দিয়েছেন ব্যাংকে।পরে ব্যাংকের ম্যানেজার জেহাদুল ইসলামের মাধ্যমে জানা যায়,২ তারিখে হানিফের নামে কোনো ভাউচার নেই এবং আওলাদ হোসেন রঞ্জু ঈদের ছুটির পর থেকে ব্যাংকে অনুপস্থিত।রঞ্জুর অনুপস্থিতির বিষয় জানাজানি হলে গ্রাহকরা ব্যাংকে আসতে শুরু করেন।

এ বিষয়ে ম্যানেজার থানায় একটি জিডি করেন।পরে ম্যানেজার জানতে পারেন যে রঞ্জু গ্রাহকদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ব্যাংকের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া ভাউচার তৈরি করে ২৫ জন গ্রাহকের প্রায় ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এ ব্যাপারে ম্যানেজার মো. জেহাদুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহজাদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।মামলার পর পুলিশের একটি দল গোপালগঞ্জ জেলা সদরের পূর্ব মিয়াপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে রঞ্জুকে গ্রেপ্তার করে।

ওসি আরও বলেন,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রঞ্জু ২০০৩ সালে জনতা ব্যাংকের শাহজাদপুর শাখায় পিয়ন কাম পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে যোগদান করেন।২০০৭ সালে তার কাজের পাশাপাশি ডিসপাসের কাজ শুরু করেন এবং ব্যাংকের প্রবেশ দ্বারে একটি ডেস্ক স্থাপন করেন।তার কাজের পাশাপাশি কেউ অ্যাকাউন্ট খুলতে এলে ফরম পূরণ করে দিতেন।২০১৬ সালের দিকে রঞ্জু ১৫ লাখ টাকা ঋণী হয়ে পড়েন।চড়া সুদের ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য তিনি বেশ কয়েকটি এনজিও থেকে ঋণ নেন।প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হত।

২০২২ সালের শুরুতে গ্রাহকদের কাছ থেকে জালিয়াতি করে টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন।পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিচিত লোকদের টার্গেট করে তাদের অ্যাকাউন্ট খুলে দেন।গ্রাহকরা তাকে বিশ্বাস করতেন।তার মাধ্যমেই অ্যাকাউন্টের টাকা জমা ও উত্তোলন করতেন।কেউ যখন টাকা জমা দিতে আসতেন তখন তার কাছে টাকা দিয়ে চলে যেতেন।কিন্তু রঞ্জু ওই টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রাখতেন এবং পরের দিন গ্রাহককে ভুয়া জমা রসিদ দিতেন।এভাবেই তিনি গ্রাহকদের প্রতারণা করেছেন বলে স্বীকার করেন রঞ্জু।

এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ ২৫ গ্রাহকের ৪৫ লাখ টাকার তথ্য পেলেও শতাধিক গ্রাহকের দাবি,তাদের সবারই কয়েক লাখ করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন রঞ্জু।যার পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।

আরও খবর

Sponsered content