জাতীয়

গোপালগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের পর দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত এনসিপিকে প্রোটোকল বাতিলে সেনাবাহিনীর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

  প্রতিনিধি ৩০ জুলাই ২০২৫ , ১২:২৬:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।গোপালগঞ্জে সংঘটিত রক্তাক্ত সহিংসতা এবং এনসিপি নেতাদের বিরুদ্ধে লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষাপটে একটি যুগান্তকারী ও নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপর্যায়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোনো নেতা আর সেনাবাহিনীর কাছ থেকে প্রোটোকল,নিরাপত্তা বা আনুষ্ঠানিক কোনো সুবিধা পাবেন না।

সেনাবাহিনীর একটি দায়িত্বশীল সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়,“গোপালগঞ্জের হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাহিনীর ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।এনসিপি নেতাদের ঘিরে যে অনিয়ম,সহিংসতা ও অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে,তা বাহিনীর সঙ্গে কোনোভাবে সমন্বয়যোগ্য নয়।একটি পেশাদার রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে আমরা কোনো বিতর্কিত গোষ্ঠীর অংশ বা আশ্রয়দাতা হতে পারি না।”

স্মরণযোগ্য,গোপালগঞ্জে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে কথিত ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ’ করা হয়েছিল,তা পরে আন্তর্জাতিক মহলে ‘গণহত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও প্রভাবশালী কূটনৈতিক মহল এই ইস্যুতে সরকারের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে।অভিযোগ রয়েছে, কেন্দ্রীয় এনসিপি নেতাদের দায়মুক্তি দিতে গিয়ে সেনাবাহিনী একটি অযৌক্তিক ও রক্তাক্ত অভিযানে জড়িয়ে পড়ে।

বিশ্লেষকদের মতে,সেনাবাহিনীর এই সিদ্ধান্ত এনসিপির রাজনৈতিক অবস্থান এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ঘনিষ্ঠতা—উভয় ক্ষেত্রেই বড় ধাক্কা তৈরি করবে।এতদিন যেভাবে এনসিপি নেতারা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা,সুরক্ষা ও আনুষ্ঠানিক মর্যাদা ভোগ করে আসছিলেন,তা বন্ধ হয়ে গেলে তাদের ‘ক্ষমতার বলয়’ ভেঙে পড়বে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আসিফ ইমতিয়াজ বলেন, “সেনাবাহিনী এখানে একটি কৌশলগত বিচ্ছিন্নতা তৈরি করল, যা শুধু প্রতীকী নয়—বরং ভবিষ্যতের জন্যও একটি বার্তা। এতে বোঝা যাচ্ছে যে,পেশাদার বাহিনী আর কোনো রাজনৈতিক নোংরামির বোঝা বহন করতে আগ্রহী নয়।”

এদিকে,দুর্নীতি,চাঁদাবাজি,দখলবাজি ও সহিংসতার অভিযোগে জর্জরিত এনসিপির একাধিক নেতা ইতিমধ্যেই জনরোষ ও আইনি জটিলতার মুখে পড়েছেন।পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে,এখন সেনাবাহিনী নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষার্থেই সরাসরি অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক স্পষ্ট বার্তা হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা—যেখানে বলা হচ্ছে,ক্ষমতার রাজনৈতিক অপব্যবহার আর পৃষ্ঠপোষকতা মেনে নেওয়া হবে না।

আরও খবর

Sponsered content