জাতীয়

ক্যাশলেস লেনদেন নিশ্চিত করতে পারলে প্রতি বছর অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব

  প্রতিনিধি ৬ জুন ২০২৩ , ২:১৩:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।শুধুমাত্র ছাপা টাকা ব্যবহারের বদলে ক্যাশলেস লেনদেন নিশ্চিত করতে পারলে প্রতি বছর অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক।

সংসদ সদস্যদের জন্য আয়োজিত ‘টুওয়ার্ডস ক্যাশলেস ডিজিটাল ট্রানজেকশন সিস্টেম’ শিরোনামের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তানভীর এ মিশুক।মঙ্গলবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদের শপথ গ্রহণ কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংসদ সচিবালয়।সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালামের সভাপতিত্বের অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংসদ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। স্পিকারসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য তানভীর এ মিশুককে দেশের আর্থিক খাতে দেশের বিবর্তনের নানান ধাপ এবং ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রার দিক নিয়ে প্রশ্ন করেন।

আলোচনায় তানভীর এ মিশুক বলেন,প্রতি বছর শুধুমাত্র টাকা ছাপতেই সরকারের ৫০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়। এছাড়া এ টাকার ব্যবস্থাপনা,সরবরাহ,লেনদেনের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা এবং তার ফলে যে সম্ভাবনার অপচয় হয় সেটির মূল্য অন্তত ৯ হাজার কোটি টাকা বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি গবেষণা প্রতিবেদনে ২০১৯ সালেই উল্লেখ করা হয়।

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ডিজিটাল বা স্মার্ট লেনদেনের কোনো বিকল্প নেই।সুতরাং আমাদের এদিকে যেতেই হবে।

সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘আপনারা যদি আমাকে দেশের কোনো এলাকা বা অঞ্চল দেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন,তাহলে আমরা নগদ থেকে ওই অঞ্চল ক্যাশলেস লেনদেনের মডেল হিসেবে তৈরি করে দেবো।আমি মনে করি এটি করা গেলে অভাবনীয় একটি কাজ হবে।’

শুধু ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন গ্রহণ করার কারণে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি তিনগুণ হয়েছে উল্লেখ করে নগদের প্রতিষ্ঠাতা তানভীর এ মিশুক বলেন,স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উন্নত দেশ হওয়ার যে ভিশন এখন আমাদের সামনে আছে সে অনুসারে এগোতে পারলে অল্প দিনেই আমাদের অর্থনীতি ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে সময় লাগবে না।

মোবাইল লেনদেনের একচেটিয়াত্ত ভাঙার উদ্দেশ্যে ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে নগদের যাত্রা শুরু হয়।তারপর থেকে এ চার বছরে একের পর এক সরকারি ভাতা বিতরণ পদ্ধতিকে ডিজিটালাইজড করেছে নগদ।ফলে সরকারের খরচ কমেছে,সময় বেঁচেছে,স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং যার ভাতা তার হাতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

প্রাথমিক পর্যায়ের প্রায় দেড় কোটি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ কেনার ভাতা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রদান করে সাড়া ফেলেছে নগদ।তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা উপকরণ ভাতা,সামাজিক নিরাপত্তা ভাতাসহ আরও অন্তত দশটি মন্ত্রণালয়ের ভাতা ও সরকারি সহায়তা নগদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।

সরকারের ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে খুবই সময়োপযোগী বলেও মন্তব্য করেন তানভীর এ মিশুক।তিনি বলেন,ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা গেলে ব্যাংকের সব সুবিধা চলে আসবে হাতের মুঠোয়।কৃষকদের সার কেনার জন্য তখন আর দাদন নিতে হবে না।হাতের মুঠে থাকা মোবাইল থেকেই ঋণ নিতে পারবে আবার ফসল বিক্রি করে ওই মোবাইলের মাধ্যমেই ঋণ পরিশোধ করবে।

একই অনুষ্ঠানের অন্য একটি সেশনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা নিয়ে কথা বলেন।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সরকারি অর্থ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কি-এক্সপার্ট মোয়াজ্জেম গোলাম হোসেন।

এবার জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্যদের জন্য আটটি বিষয়ের ওপর আলোচনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞরা আলোচনায় অংশ নেন।

আরও খবর

Sponsered content