ব্যবসা ও বাণিজ্য সংবাদ

কোরবানির হাটের শেষ দিনে ক্রেতাদের মুখে হাসি থাকলেও হতাশা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা

  প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২৩ , ৪:১৭:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রাত পেরোলেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল আজহা।ঈদের আগের দিন আজ বুধবার রাজধানীর কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে।তবে হাটের শেষ দিনে ক্রেতাদের মুখে হাসি থাকলেও হতাশা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।আজ বুধবার রাজধানীর হাটগুলো ঘুরে দেখা গেছে,গরুর দাম আগের দিনের চেয়ে অনেকটাই কম।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন বাজার হাট, আফতাবনগর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেরাদিয়া হাট ঘুরে দেখা গেছে,ব্যবসায়ীরা হতাশায় সময় পার করছেন। তাঁরা জানান,যেভাবে গরুর দাম কমছে—এমন পরিস্থিতিতে গরু ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই।এদিকে গত দিনের চেয়ে কম দামে গরু কিনতে পেরে ক্রেতারা বেশ খুশি।

বিকেলে রাজধানীর মেরাদিয়া হাটে দেখা যায়,দুটি ট্রাকে গরু প্রবেশ করছে হাটে।অন্য গরু বিক্রেতারা তাঁদের বলছেন, কোনো লাভ হবে না।কিছুক্ষণ পর দেখা যায়,গরু হাটে না নামিয়েই তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন।

মেরাদিয়া হাটে খিলগাঁওয়ের কায়েরপাড়া থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন,আজকে কাঁচা মরিচের চেয়েও গরুর দাম কম।কাঁচা মরিচের কেজি এখন ৪০০ টাকা।আর গরুর যে দাম বলতেছে,তাতে তা কাঁচা মরিচের চেয়েও কম হবে।’

জামালপুর সরিষা বাড়ি থেকে আসা মনির আলী ও মো. নিজাম উদ্দিন দুজনে মিলে ১৩টি গরু এনেছেন এবার।তাঁরা বলেন,সাতটা বিক্রি করছি পাঁচটায় কিছুটা লাভ হইছে। বাকি দুইটায় লস।আজকে দাম পইড়া গেছে। বাকিগুলো আজকে আর বিক্রি করা যাইব বলে মনে হচ্ছে না।’

গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে আসা মো. সেলিম বলেন, ‘গতকাল যে গরু ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা বলছে দেইনি, আজকে সেটা ৮০ হাজার,১ লাখ টাকা দাম বলে।কেনা গরু এ জন্য ছাড়তে পারছি না।তাই বাড়ি নিয়া যাব।’

খিলগাঁওয়ের বালুরপাড় থেকে আসা গরুর ব্যাপারী আলেক মিয়া বলেন, ‘পাঁচটা গরু আনছি।একটাও বিক্রি হয়নি। কালকে যে গরুটা ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যন্ত বলেছে, আজকে তা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বলতেছে।’

আরেক গরুর ব্যাপারী শফিকুল ইসলাম বলেন,১ লাখ ২৫ দিয়া কিনছি,৪ মাস পালার পর এখন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়া বিক্রি করছি।বেশ লস হইসে।এই ব্যবসা কোটিপতিগো দখলে চইলা গেছে।যারা ৩০০ থেকে ৪০০ গরু একসঙ্গে পালে তাঁদের লাভ।আমাদের মতো ছোট ছোট গরুর খামারিদের এই ব্যবসা ছাইড়া দিতে হইব।’

এদিকে দুপুরে নতুন বাজার ও আফতাবনগরের হাটে গিয়ে দেখা যায়,অনেক ক্রেতাই গরু কিনে ফিরছেন।কেউ কেউ ৪০ থেকে ৪১ হাজার টাকায়ও ছোট আকারের গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন।প্রত্যেকেই গরু কিনে খুশি,কারণ প্রত্যাশার চাইতে কম দামেই এবার গরু কিনেছেন তাঁরা।

বাড্ডার বাসিন্দা তানজিবুল হক বলেন,দেড় লাখ টাকায় গরু কিনেছি, এবার বাজার ভালো। অনেক কম দামে পেয়েছি।’

গুলশান থেকে আসা ফারুখ হোসেন বলেন, ‘২ লাখ ৫ হাজার টাকায় কিনেছি।গরুর দাম এবার একেবারেই কম।’

বাড্ডার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৯৩ হাজার টাকায় গরু কিনেছি।আমি অবশ্যই খুশি।’

এদিকে ছাগলের দাম ততটা না কমলেও ছাগল কিনেও ক্রেতারা খুশি ছিলেন।নতুন বাজার ও আফতাবনগরের হাট থেকে অনেক ক্রেতা সাত হাজার টাকায়ও ভেড়া ও ছাগল কিনতে পেরেছেন।

বাড্ডার বাসিন্দা গুলজার আহমেদ জানান, দুইটা ভেড়া কিনেছি ১৪ হাজার টাকায়।

এদিকে নদ্দা কালাচাঁদপুরের রাস্তায় অনেক ছাগল বিক্রি হয়েছে।এখানে হাসিল দিতে হয়নি ক্রেতাদের।মোটামুটি ভালো দামে ছাগল বিক্রি করতে পেরেছেন বলে জানান ছাগল বিক্রেতারা।

ব্যবসায়ী মো. শাহীন বলেন,ময়মনসিংহ থেকে ৪০টা ছাগল আনছিলাম।মাত্র দুইটা আছে।এর দাম ১০ হাজার করে বলতেছে।১২ হাজার টাকা করে হলে ছেড়ে দেব।’

ক্রেতা সুমন খন্দকার বলেন,দুইটা ছাগল কিনলাম একটা ১৭ হাজার টাকায়,আরেকটা সাড়ে ২২ হাজার।’

আরও খবর

Sponsered content