প্রতিনিধি ৩১ অক্টোবর ২০২৪ , ৩:৪১:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।পদ্মা ব্যাংককে টেনে তুলতে গিয়ে ডুবছে এক্সিম ব্যাংক।মাস ছয়েক আগে পদ্মার দায়িত্ব নিতে চাওয়া ব্যাংকটির গ্রাহকরাই এখন টাকা তুলতে এসে ফিরছেন খালি হাতে।পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকটির গত প্রান্তিকের হিসাব অনুযায়ী এর লোকসান দাঁড়িয়েছে ৫৬৬ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন,বিগত সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া বানোয়াট তথ্যে নিজেদের সবল হিসেবে গ্রাহক আকৃষ্ট করেছে এক্সিম ব্যাংক।এ অবস্থায় সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করে একীভূত করার তাগিদ দিলেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
গত ১৮ মার্চ গ্রাহক আস্থাহীনতায় ভাসতে থাকা পদ্মা ব্যাংককে টেনে তুলতে হাত বাড়িয়েছিল সবল হিসেবে দাবি করা এক্সিম ব্যাংক।অথচ সরকার পতনের পর সে দাপুটে ব্যাংকটিই বর্তমানে তারল্য সংকটে ভুগছে।টাকা তুলতে এসে চেক জমা দিয়ে অপেক্ষার পরও গ্রাহকরা ফিরছেন খালি হাতে।
গ্রাহকরা বলছেন,বড় অঙ্কের টাকা দিতে গড়িমসি করছে এক্সিম ব্যাংক।দেয়া হচ্ছে সার্ভার সমস্যাসহ নানা অজুহাত। তবে ছোট অঙ্কের টাকা হলে মিলছে কখনও কখনও।
ক্যামেরার সামনে মন্তব্য না করলেও গ্রাহকের অভিযোগ যে অমূলক নয়,তার ইঙ্গিত পাওয়া গেলো ব্যাংকটির মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপক মো. আজহার উদ্দিনের দেয়া তথ্যেও।তিনি বলেন,এটিএম বুথে টাকার কিছুটা সংকট আছে।এটি ঠিক হতে কিছুটা সময় লাগবে।সাবেক চেয়ারম্যানসহ কয়েকটি ইস্যুতে গ্রাহকরা কিছুটা উদ্বিগ্ন।তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ ব্যাংকের এমন নাজুক অবস্থার প্রমাণ খোদ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।তথ্য বলছে,গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি ৩.৯১ টাকা করে লোকসান গুনেছে ব্যাংকটি।সে হিসাবে ১৪৪ কোটি ৭৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৪৪টি শেয়ারে মোট লোকসান হয়েছে প্রায় ৫৬৬ কোটি টাকা।
তবে তিন মাস আগে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ব্যাংকটির কর পরবর্তী মুনাফা ছিল ৩৭৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।ক্ষমতা বদল ও নতুন সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পরের প্রান্তিকে এসে সবল হিসেবে দাবি করা ব্যাংকটির চিত্র এখন এমনই।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন,কেন্দ্রীয় ব্যাংক সঠিক তথ্যের প্রবাহ বাড়ালে গ্রাহকদের ঝুঁকি কমবে। প্রয়োজনে আবারও নেয়া যেতে পারে ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগ।অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন,যেসব ব্যাংক দুর্বল তাদের তালিকা প্রকাশ করা প্রয়োজন।এক্সিম ব্যাংক দুর্বল হলে ব্যাংকটি অন্য কোনো সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে পারে।সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে চিহ্নিত করে একীভূত করা দরকার।
এদিকে,এক্সিম ব্যাংকের এমন দুর্বল আর্থিক চিত্রের প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেনেও।গত ফেব্রুয়ারিতে প্রতি শেয়ারের দাম ১১ টাকায় উন্নীত হওয়ার পর বর্তমানে তা নেমে এসেছে সাড়ে ৭ টাকার নিচে।

















